মিয়ানমার সীমান্তবর্তী ১২ লাখ রোহিঙ্গা আশ্রিত উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলা নিয়ে গঠিত কক্সবাজার ৪ আসন। এই আসনটি বর্তমান ভোটার ৩ লাখ ২৬ হাজার ৯৭১ জন। যেখানে উখিয়া উপজেলায় ১ লাখ ৪৯ হাজার ৩১২ জন এবং টেকনাফ উপজেলায় ১ লাখ ৭৭ হাজার ৬৫১ জন ভোটার রয়েছে। এই ২ উপজেলায় ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ১০৪ টি।

সৌভাগ্যের আসন খ্যাত কক্সবাজার ৪ আসনটি প্রতিটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কোন না কোনভাবে বরাবরই আলোচনায় থাকে। মানুষের মাঝে প্রচার রয়েছে- এ আসনে যে দলের প্রার্থী হন, ওই দলই সরকার গঠন করে। এবারও সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদির স্ত্রী ও বর্তমান সংসদ সদস্য শাহিন আক্তার মাঝি হয়েছেন।

এদিকে মামলা জটিলতার কারণে বদি এবারও প্রার্থী হিসেবে অযোগ্য ছিলেন। কিন্তু বদির বিরোধী কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতা দলীয় মনোনয়ন চাইলেও এবার নৌকা প্রতীকের প্রার্থী দেওয়া হয় স্ত্রী শাহিন আক্তারকে।

এদিকে মাঠে ময়দানে স্ত্রীর হয়ে নির্বাচনী লড়াইয়ে নেমেছেন বদি নিজেই। তার সরব তৎপরতা যেন প্রার্থী তিনি নিজেই। এ নিয়ে সর্বত্রই চলছে সরব আলোচনা।

তবে এবারের নির্বাচনে ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল বশর। তিনি দলীয় মনোনয়ন চেয়েও পাননি। মনোনয়ন যাচাই-বাছাইয়ে তার প্রার্থিতা বাতিল হলেও আদালতের নির্দেশে প্রতীক বরাদ্ধ পেয়েছেন। টেকনাফ উপজেলাসহ পুরো নির্বাচনী এলাকার দলীয় অধিকাংশ নেতাকর্মি তার পক্ষে প্রচারণা ও গণসংযোগে অংশ নিচ্ছেন। এতে দলীয় নেতাকর্মিদের পাশাপাশি সাধারণ ভোটার মাঝে তিনি বেশ সাড়া পেয়েছেন। তাঁর পক্ষে মাঠে নেমেছে টেকনাফ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের নেতারা। দলের বর্ধিত সভায় সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত নিয়ে এই প্রচারণা শুরু করেছেন।

টেকনাফ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব মোর্শেদ বলেছেন, উখিয়া-টেকনাফের মানুষ মাদক, মানবপাচার, অপহরণ, সন্ত্রাস থেকে রক্ষা পেতে চান। মানুষ সিন্ডিকেটবন্ধি সীমান্ত বাণিজ্য ভেঙ্গে দিতে চান। এটার জন্য পরিবর্তন চান মানুষ। প্রধানমন্ত্রীর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বশরকে নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন তারা।

উখিয়ার আওয়ামীলীগ নেতা মাহবুবুল আলম জানান, একটি চক্র যারা বিএনপি থেকে আওয়ামীলীগে এসে আওয়ামীলীগের দলীয় পরিস্থিতি নষ্ট করেছেন। তার বিরুদ্ধে এবার পরিবর্তনের কথা বলছেন সকলেই।

টেকনাফ উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মো. নুরুল বশর বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনের জন্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার সুযোগ দিয়েছেন। এই সুযোগ কোনভাবে হাত ছাড়া করা যাবে না। উখিয়া-টেকনাফের মানুষ একটি কালো চক্রের হাতে বন্ধি। যারা মাদক, মানবপাচার ও অপহরণের মতো ভয়াবহ ঘটনার করিগর হয়ে উঠেছেন। দেশব্যাপী একটি মদনামের অংশ হয়েছে। নির্যাতিত-নিপীড়িন হয়েছেন আওয়ামীলীগের নেতা-কর্মীরাও। মানুষ এটার পরিবর্তন চান। ইতিমধ্যে আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের সাবেক বর্তমান নেতা-কর্মীরা প্রকাশ্যে সমর্থন দিয়েছেন। আমি উখিয়া-টেকনাফকে মাদক-মানবপাচার ও সন্ত্রাসী মুক্ত একটি নিরাপদ এলাকা করতে চাই। জনতা আমার সঙ্গে। আমি বিজয় হব।

আবদুর রহমান বদি বলেছেন, আওয়ামীলীগের নেতাকে পরাজিত করার মিশন নিয়েছে আওয়ামীলীগ। এটা হবে না। নৌকার বিজয় হবে।

এই আসনের অন্য প্রার্থীরা হলেন, জাতীয় পার্টির নুরুল আমিন ভুট্টো (লাঙ্গল), ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) ফরিদুল আলম (আম), তৃণমূল বিএনপির মুজিবুল হক মুজিব (সোনালী আঁশ), ইসলামী ঐক্যজোটের মোহাম্মদ ওসমান গনি চৌধুরী (মিনার), বাংলাদেশ কংগ্রেসের মোহাম্মদ ইসমাইল (ডাব)।

বার্তা বাজার/জে আই