আগামী ২১ মে বান্দরবান জেলার ষষ্ঠ লামা উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। সময় যত ঘনিয়ে আসছে সরগরম হয়ে উঠছে ভোটের মাঠ। তীব্র গরম উপেক্ষা করে প্রার্থীরা প্রচার-প্রচারণা, গণসংযোগ এবং দ্বারে দ্বারে ভোট প্রার্থনায় ব্যস্ত সময় পার করছেন।

সরেজমিন উপজেলার বিভিন্ন এলাকা প্রদক্ষিণ করে দেখা গেছে, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পাড়া-মহল্লার অলিগলি ও চায়ের দোকানগুলোতে চলছে প্রার্থীদের নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা। প্রার্থীদের নির্বাচনী পোস্টার, ব্যানার ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে গ্রাম-গঞ্জের হাটবাজার, অলিগলিসহ শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো। সমর্থকদের গণসংযোগসহ উঠান বৈঠক ও পথসভা চলছে প্রতিদিন। প্রার্থীরা ভোটারদের মন জয়ে দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতি। গানে গানে ভোট চাওয়া হচ্ছে মাইকের মাধ্যমে। নিজেদের অবস্থান থেকে জয়ের ব্যাপারে প্রত্যেকে আশাবাদী।

উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবারের লামা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বর্তমান চেয়ারম্যান আ.লীগের সহ-সভাপতি একজন, সদ্য বহিষ্কৃত বিএনপি সমর্থিত একজনসহ মোট দুইজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ ছাড়া উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যানসহ ৪জন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বর্তমান মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানসহ ৩জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

এরই মধ্যে বিএনপির কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত মোতাবেক লামা উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বর্জনে লিফলেট বিতরণ ও সংবাদ সম্মেলন করেন বান্দরবান জেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক মো.জাবেদ রেজা। এসময় তিনি বলেন, ডামি জাতীয় নির্বাচনের মতো আরেকটি ডামি উপজেলা নির্বাচন করছে সরকার। এটি জনগণের সঙ্গে প্রতারণা ও ধোঁকাবাজি ছাড়া আর কিছুই নয়। বিএনপির ডাকে সাড়া দিয়ে ডামি উপজেলা নির্বাচন বর্জন করবে জনগণ। ইতিপূর্বে দলের সিদ্ধান্তকে অমান্য করে ডামি উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় মো. জাকের হোসেন মজুমদারকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।

তবে নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে, আলোচনা তত বাড়ছে কে হবেন আগামী পাঁচ বছরের জন্য লামা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান। ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সৎ, যোগ্য, পরোপকারী ও বিপদে যাকে কাছে পাবেন এমন প্রার্থীকেই বিজয়ী করবেন তারা। যে প্রার্থী লামার উন্নয়ন এবং সাধারণ মানুষের সমস্যা সমাধানে কাজ করবেন তাকেই জনপ্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত করতে চান সাধারণ ভোটাররা।

এদিকে নির্বাচনের তপশিল ঘোষণার পর থেকে এখনো পর্যন্ত লামা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা কিংবা অপৃতকর ঘটনা ঘটেনি।

উপজেলা নির্বাচনের সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুল হোসেন চৌ. বলেন, ‘প্রার্থীরা নির্বাচনী আচরণ বিধি মেনে চলছেন কি না তা নিশ্চিত করতে মনিটরিং হচ্চে। এখনো পর্যন্ত কেউ কোনো প্রার্থীর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেননি।’

উল্লেখ্য যে, ৭টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা নিয়ে লামা উপজেলা গঠিত। এ উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ৮২ হাজার ২১৩ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ৪২ হাজার ৯০৪, মহিলা ৩৯ হাজার ৩০৯ ভোট। এর মধ্যে লামা পৌরসভায় ১৫ হাজার ২১১ জন, লামা সদর ইউনিয়নে ৬ হাজার ৪৮৩ জন, গজালিয়া ইউনিয়নে ৮ হাজার ২১৮ জন, সরই ইউনিয়নে ৭ হাজার ৭৫২ জন, ফাইতং ইউনিয়নে ৯ হাজার ৩৮৭ জন, ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নে ১৮ হাজার ৪৪৬ জন, রূপসীপাড়া ইউনিয়নে ৮ হাজার ৬১০ জন ও আজিজনগর ইউনিয়নে ৮ হাজার ১০৬ জন ভোটার রয়েছে। সর্বশেষ ২০১৯ সালের ১৮ মার্চ লামা উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল।


বার্তা বাজার/এইচএসএস