স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান মন্ত্রনালয়ে সচিব মোঃ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, পদ্মাসেতু সংলগ্ন জাতির জনক বঙ্গবন্ধ শেখ মুজিবুর রহমান হাইওয়ে এক্সপ্রেসের পাশের ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী ট্রমাসেন্টারে একমাসের মধ্যে জনবল নিয়োগ দিয়ে চিকিৎসা সেবা চালু করা হবে। ট্রমা সেন্টারটি পুরোপুরো চালু করা না গেলেও আংশকি ভাবে চালু করা হবে। যাতে দূর্ঘটনা কবলিত মানুষ চিকিৎসা সেবা পেতে পারেন। এখানে ডাক্তার ও নার্স দিয়ে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

শনিবার স্বাস্থ্য সচিব মোঃ জাহাঙ্গীর আলম বরিশাল যাওয়ার পথে মাদারীপুরের শিবচরে ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী ট্রমা সেন্টারটি আকস্মিক পরিদর্শন করেন। এসময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

এই সময় উপস্থিত ছিলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রনলয়ের মহা-পরিচালক অধ্যাপক ডাঃ আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের অতিরিক্ত মহা-পরিচালক অধ্যাপক ডাঃ আহমেদুল কবির (প্রশাসন) মাদালীপুরের সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ মুনীর আহমেদ খান, শিবচর উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল লতিফ মোল্লা, নবনির্বাচিত শিবচর উপজেলা চেয়ারম্যান ডাঃ মোঃ সেলিম মিয়া, শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন, ভাইস চেয়ারম্যান ফাহিমা আক্তার, শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ ফাতিমা মাহজাবীন, নবনির্বাচিত শিবচর উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আয়শা সিদ্দিকা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

তিনি আরও বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে আরও প্রায় ১৭টি ট্রমা সেন্টার রয়েছে। সে গুলো সবই আমরা ধীরে ধীরে চিকিৎসা সেবার পাওয়ার উপযোগী করে তুলবো। স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ে জনবল সংকট ছিল, এখনো আছে। তবে আমরা জনবল নিয়োগ দিচ্ছি। এই সমস্যা আর থাকবে না। বিশেষ করে এই ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী ট্রমা সেন্টারটিতে জনবল নিয়োগ করে মাত্র ১ মাসের মধ্যে চিকিৎসা সুবিধা দিতে সক্ষম হবে।

এলাকাবাসী জানান, আনুষ্ঠানিক উদ্ধোধনের প্রায় দেড় বছর পরও মাদারীপুরের শিবচরে ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী ট্রমা সেন্টারে চিকিৎসা ব্যবস্থা চালু করা সম্বব হয় নাই। এখন পর্যন্ত কোন রকম চিকিৎসা সেবা চালু না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন স্থানীয় জনগন ও নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা। দীর্ঘদিন যাবৎ ট্রমা সেন্টারটি অরক্ষিত অবস্থায় অযত্ন ও অবহেলায় পড়ে থাকছে। এতে প্রতিষ্ঠানের মূল্যবান মালমাল চুরি হয়ে যাচ্ছে।

সাবেক স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান মন্ত্রী জাহিদ মালেক ও জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধারী এমপি গত ২০২২ সালের ৮ নভেম্বর ট্রমা সেন্টারের উদ্ধোধন করেন। পদ্মা সেতু সংলগ্ন জাতির জনক বঙ্গবন্ধ শেখ মুজিবুর রহমান হাইওয়ে এক্সপ্রেসের (মহাসড়কের) পাশে ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী ট্রমা সেন্টারটি অবস্থিত। অযত্ন ও অবহেলায় পড়ে থাকার কারনে এই পর্যন্ত এই ট্রমা সেন্টারে ২ বার চুরির ঘটনাও ঘটেছে। এই নিয়ে এলাকার মানুষ মধ্যে চরম ক্ষোভ ও হতাশা কাজ করছে।

শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান অফিস সূত্র ও এলাকাবাসী জানান, জাতীয় সংসদের চিপ হুইপ নূর-ই- আলম চৌধুরী এমপি রাজধানীর পদ্মা সেতুর সন্নিকটের উপজেলা শিবচরকে একটি স্বাস্থ্য ও শিক্ষা নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে চান। সেই কারনে পদ্মা সেতু সংলগ্ন জাতির জনক বঙ্গবন্ধ শেখ মুজিবুর রহমান হাইওয়ে এক্সপ্রেসের (মহাসড়কের) পাশে এই ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী ট্রমা সেন্টারটি নির্মাণ করা হয়েছে। যাতে হাইওয়ে এক্সপ্রেসে চলাচলকারী যানবাহন দূর্ঘটনার কবলে পড়লে আহতরা তাৎক্ষনিক সেবা পেতে পারে। তাই স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান মন্ত্রনালযের উদ্যোগে ও স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের অর্থায়নে প্রায় ১২ কোটি টাকা ব্যয় করে আধুনিক মানের চিকিৎসা সুবিধা পাওয়ার ট্রমা সেন্টারটি নির্মাণ করা হয়। প্রায় ৩ বছর আগে এর নির্মান কাজ শেষ হয়। তারও একবছর গত ২০২২ সালে ৮ নম্ভেবর ট্রমা সেন্টারটি উদ্ধোধন করা হয়। কিন্ত ট্রমা সেন্টারটি উদ্ধোধনের দেড় অতিবাহিত হলেও জনবল নিয়োগ কাঠামো অনুযায়ী ডাক্তার তো দুরের কথা এই পর্যন্ত একজন কর্মচারীও নিয়োগ দেয়া হয় নাই। এমনকি কোন পদও সৃজন করা হয় নাই। তবে এই ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী ট্রমা সেন্টারে ৭জন পরামর্শক চিকিৎসক, (কনসালটেন্ট), ৩জন অর্থপেডিক সার্জন, ২জন অ্যানেসথেটিস্ট (অবেদনবিদ) ২জনআবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা সহ ১৪জন চিকিৎসক, ১০জন নার্স, এবং ফার্মাসিষ্ট, রেডিওগ্রাফার, টেকনিশিয়ানসহ ৩৪টিপদ সৃজনের প্রস্তাব করা হয়েছিল। কিন্ত আজ পর্যন্ত সেই আধুনকি মানের এই ট্রমা সেন্টারটি দূর্ঘটনা কবলিত কোন রোগীর চিকিৎসা প্রদানে কাজে আসে নাই।

বার্তা বাজার/এইচএসএস