ইসলাম শান্তির ধর্ম এখানে গুনাহ বা পাপ কাজ করলে কঠিন থেকে কঠিন শাস্তির বিধান রয়েছে। আবার এসব গুনাহ বা পাপ কাজের জন্য মহান আল্লাহপাকের নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করলে তিনি ক্ষমা করে দেন। সেটা যত বড় গুনাহ হোক না কেন।

প্রিয় নবি (সা.) উম্মতে মুহাম্মাদির জন্য মহান রবের সবচেয়ে প্রিয় বান্দা থেকে তার আলিশান দরবারে তাওবাহ ও ইসতেগফারের অনেক আবেদন বর্ণনা করেছেন। এই আমল করলে আল্লাহ কঠিন গুনাহ মাফ করে দেন। কিন্তু কী এমন আমল, যা পড়লে মহান আল্লাহ সাতটি ধ্বংসাত্মক পাপও মাফ করে দেন।

রাসুল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি বলে-مَنْ قَالَ أَسْتَغْفِرُ اللهَ الَّذِىْ لَا إِلٰهَ إِلَّا هُوَ الْحَىُّ الْقَيُّومُ وَأَتُوبُ إِلَيْهِ غُفِرَ لَه وَإِنْ كَانَ فَرَّ مِنَ الزَّحْفِ উচ্চারণ : ‘মান কালা আস্তাগফিরুল্লাহাল্লাজি লা ইলাহা ইল্লা হুয়াল হাইয়্যুল ক্বাইয়্যুমু ওয়া আতুবু ইলাইহি গুফিরা লাহু অইন কানা ফাররা মিনজ্জাহাফি।’

অর্থ : আমি সেই আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করছি, যিনি ছাড়া কোনো মাবুদ (‘ইবাদাতের যোগ্য) নেই। যিনি চিরঞ্জীব, অবিনশ্বর এবং আমি তার কাছে তাওবাহ্ করছি। সে ব্যক্তির পাপরাশি মার্জনা করা হবে; যদিও সে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পালিয়ে (যাওয়ার পাপ করে) থাকে। (সুনান আবূ দাঊদ : ১৫১৯; জামি‘ আত্ তিরমিযী : ৩৫৭৭।)

অবশ্য এটিও এক প্রকার তাওবাহ্ ও ইস্তিগফার, আর যা শর্তানুযায়ী করলে কাবীরা গুনাহও ক্ষমা করা হতে পারে।

যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পালান অন্যতম কাবীরা গুনাহ। মহান আল্লাহ বলেছেন-

يٰۤاَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِذَا لَقِيتُمُ الَّذِينَ كَفَرُوا زَحْفًا فَلَا تُوَلُّوهُمُ الْأَدْبَارَ – وَمَنْ يُوَلِّهِمْ يَوْمَئِذٍ دُبُرَه إِلَّا مُتَحَرِّفًا لِقِتَالٍ أَوْ مُتَحَيِّزًا إِلٰى فِئَةٍ فَقَدْ بَاءَ بِغَضَبٍ مِنَ اللهِ وَمَأْوَاهُ جَهَنَّمُ وَبِئْسَ الْمَصِيرُ

অর্থ : হে মুমিনগণ! তোমরা যখন কাফিরদের মুখোমুখি হবে বিশাল বাহিনী নিয়ে, তখন তাদের থেকে পৃষ্ঠ প্রদর্শন করো না। আর যে ব্যক্তি সেদিন তাদেরকে পৃষ্ঠ প্রদর্শন করবে তাহলে সে আল্লাহর গজব নিয়ে ফিরে আসবে। তবে যুদ্ধের জন্য (কৌশলগত) দিক পরিবর্তন অথবা নিজ দলে আশ্রয় গ্রহণের জন্য হলে ভিন্ন কথা এবং তার আবাস জাহান্নাম। আর সেটি কতই না নিকৃষ্ট প্রত্যাবর্তনস্থল।

এ কাজটি হাদিসে বর্ণিত সাতটি ধ্বংসাত্মক কাজের অন্যতম। নবি (সা.) বলেছেন-

اجْتَنِبُوا السَّبْعَ الْمُوبِقَاتِ قَالُوا يَا رَسُولَ اللهِ وَمَا هُنَّ قَالَ الشِّرْكُ بِاللهِ وَالسِّحْرُ وَقَتْلُ النَّفْسِ الَّتِىْ حَرَّمَ اللهُ إِلَّا بِالْحَقِّ وَأَكْلُ الرِّبَا وَأَكْلُ مَالِ الْيَتِيمِ وَالتَّوَلِّىْ يَوْمَ الزَّحْفِ وَقَذْفُ الْمُحْصَنَاتِ الْمُؤْمِنَاتِ الْغَافِلَاتِ

অর্থ : তোমরা সাতটি ধ্বংসাত্মক কাজ থেকে দূরে থাক। সকলে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! তা কী কী? তিনি বলেন, আল্লাহর সঙ্গে শিরক করা, জাদু করা, অন্যায়ভাবে বা কোনো কারণ ছাড়া আল্লাহ যে যে প্রাণী হত্যা করা হারাম করেছেন তা হত্যা করা, সুদ খাওয়া, ইয়াতিমকে ঠকানো বা তার সম্পদ জবরদখল করা, (যুদ্ধক্ষেত্র থেকে) যুদ্ধের দিন পলায়ন করা এবং সতী সরলা মুমিনা নারীর চরিত্রে মিথ্যা অপবাদ দেওয়া।

বার্তাবাজার/এম আই