নারায়ণগঞ্জ-৪ (সদর ও সিটি করপোরেশন একাংশ) আসনের সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমানকে যুক্তরাষ্ট্রে হেনস্তার চেষ্টার ঘটনায় নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক নেতা বাদল মির্জার গ্রামের বাড়িতে ককটেল হামলা ও ভাঙচুর করা হয়েছে।

স্থানীয় সময় গত বুধবার (১২ জুলাই) সন্ধ্যায় যুক্তরাষ্ট্রের জ্যাকসন হাইটসের যান শামীম ওসমান। সেখানে শামীম ওসমানকে দেখে ভুয়া ভুয়া বলে স্লোগান দেন বিএনপি ও ছাত্রদলের কয়েকজন নেতাকমী‍র্। এর মধ্যে ছিলেন, নিউইয়র্ক মহানগর বিএনপি নেতা রাব্বী ও সোনাইমুড়ী উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক নেতা বাদল মির্জা। ওই কিছুক্ষণের মধ্যেই সামাজিকমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়।

এ ঘটনার পর শনিবার সকালে নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলা ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের আমকি গ্রামে নেতা বাদল মির্জার বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটে।

বিষয়টি নিয়ে গতকাল মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রশ্ন করা হয়। প্রশ্নকারী বলেন, গত বুধবার রাতে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে আওয়ামী লীগের সফররত এক সংসদ সদস্যের (শামীম ওসমান) সামনে বিক্ষোভ দেখান এক বিরোধী কর্মী। ঘটনার কয়েক ঘণ্টার মাথায় এই বিরোধী কর্মীর বাংলাদেশে থাকা পরিবারের সদস্যরা হামলার শিকার হন। ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীদের হামলার ঘটনাটি ফেসবুক লাইভে প্রচার করা হয়। লাইভে বলা হয়, দেশের বাইরে যাঁরা ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে কথা বলেন, তাঁদের বাড়িতে হামলা করে জবাব দেওয়া হচ্ছে। সুতরাং কেউ যদি যুক্তরাষ্ট্রে বসে ক্ষমতাসীন দলের বিপক্ষে কথা বলে, প্রতিবাদ করে, তাহলে দেশে তাঁর পরিবার নিরাপদ নয়। এ ব্যাপারে মন্তব্য জানতে চাওয়া হয়।

প্রশ্নের জবাবে মিলার আবার আগের কথার পুনরাবৃত্তি করে বলেন, যে ধরনের হামলার কথা বলা হলো, গণতান্ত্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় তার কোনো স্থান নেই।

এই প্রশ্নের আগে ওই একই ব্যক্তি হিরো আলমের ওপর হামলার বিষয়েও প্রশ্ন করেন।তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের বেসামরিক নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকারবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়া তাঁর বাংলাদেশ সফর শেষে ফেরার পরই দেশটির সরকার বিরোধীদের ওপর হামলার পুরোনো ধারায় ফিরেছে। গতকাল বাংলাদেশে একটি উপনির্বাচন হয়েছে। প্রধান বিরোধী দল এই উপনির্বাচন বয়কট করেছে। এই উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র এক প্রার্থী (হিরো আলম) হামলার শিকার হয়েছেন। তিনি এখন হাসপাতালে। উপনির্বাচনে ১০ শতাংশ ভোটও পড়েনি। এ অবস্থায় কীভাবে বিশ্বাস করবেন যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করবেন? কারণ, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি। এমনকি এই উপনির্বাচনও অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি। এই উপনির্বাচনেও প্রার্থীরা হামলার শিকার হয়েছেন। এ ব্যাপারে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মন্তব্য জানতে চাওয়া হয়।

প্রশ্নের জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার বলেন, আমি বলব, গণতান্ত্রিক নির্বাচনে এ ধরনের রাজনৈতিক সহিংসতার কোনো স্থান নেই। আমরা বাংলাদেশ সরকারকে সহিংসতার যেকোনো ঘটনা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে, স্বচ্ছভাবে ও নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করতে উৎসাহিত করি। যারা এ হামলার সঙ্গে জড়িত, তাদের বিচারের আওতায় আনতে বলি।

বার্তা বাজার/জে আই