বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের উদ্যোগে “১৫ আগস্ট ও ২১ আগস্টে শহীদদের স্মরণে” আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

উক্ত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মোঃ মাইনুল হোসেন খান নিখিল।

সভাপতিত্ব করেন, ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাইন উদ্দিন রানা ও সঞ্চালনা করেন, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এইচ এম রেজাউল করিম রেজা।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেন, এই আগস্ট মাসে বাংলার ইতিহাসে সবচেয়ে নিকৃষ্ট এবং জঘণ্যতম হত্যাকাণ্ড চালানো হয়েছিল, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, বাংলার অবিসংবাদিত নেতা, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের উপর; চালানো হয়েছিল পৃথিবীর সবচেয়ে ন্যাক্কারজনক হত্যাকাণ্ড ।

এই হত্যাকাণ্ড ছিল সুদূরপ্রসারী এক পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। এই হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে আমাদের স্বাধীনতার সূর্য সম্পূর্ণরূপে উদিত হওয়ার পূর্বেই আকষ্মিকভাবে অস্তমিত করা হয়েছিল। নস্যাৎ করা হয়েছিল বাঙালির দুই শতাধিক বছরের স্বাধীনতার আকাক্সক্ষা। এই হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে স্বাধীনতা যুদ্ধে পরাজিত শত্রুরা প্রতিশোধ নিয়েছিল বাঙালি জাতির উপর। তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর হত্যা কোন সাধারণ হত্যাকাণ্ড না।

এই মহান নেতাকে হত্যা করা হয়েছিল একাধিক অশুভ উদ্দেশ্য সাধণের জন্য। প্রথমত, অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রকারীরা ১৯৭১ সালের যুদ্ধে তাদের পরাজয় মেনে নিতে পারেনি; দ্বিতীয়ত, তারা বাংলাদেশকে স্বাধীন ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রে পরিণত করা মেনে নিতে পারেনি; তারা পাকিস্তানের ধর্মভিত্তিক সংবিধান প্রত্যাখান করে বাংলাদেশের জন্য একটি ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধান প্রণয়ন মেনে নিতে পারেনি। তিনি আরও বলেন, দীর্ঘ ৩৫ বছর পর বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচার হয়। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে নিয়মতান্ত্রিক বিচারিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ২০১০ সালে ঘাতকদের কয়েকজনের ফাঁসির রায় কার্যকর করার মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করেন জননেত্রী শেখ হাসিনা।

কিন্তু অভিযুক্তদের কেউ কেউ বিভিন্ন দেশে পালিয়ে থাকায় বিচারের রায় আংশিক কার্যকর হয়। তাই আজকে যুবসমাজের দাবি বঙ্গবন্ধু হত্যার পলাতক খুনিদের দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।

যুবলীগ আরও দাবি করছে যে ১৫ই আগস্টের হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড, অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচারের লক্ষ্যে একটা জাতীয় তদন্ত কমিশন গঠনের মাধ্যমে ঐ ন্যাক্কারজনক হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা ও ষড়যন্ত্রকারীদের মুখোস উন্মোচন করতে হবে। এই জাতীয় কমিশনই হবে জিয়ার মরণোত্তর বিচারের সর্বপ্রথম ধাপ এবং প্রারম্ভিক পদক্ষেপ। তাই এই কমিশন গঠন করা এখন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এই প্রজন্মের সময়ের দাবি। যতদিন তদন্ত কমিশনের ফলাফল না বেড় হবে, খুনিরা পদ্মার অন্তরালে থেকে যাবে এবং এই বাংলাদেশে হত্যার রাজনীতির ষড়যন্ত্র অব্যাহত থাকবে।

তিনি আরও বলেন, ২১শে আগস্ট এদেশের রাজনৈতিক শিষ্টাচার ও সংস্কৃতি ধ্বংসের পিছনে এককভাবে দায়ী। কি বর্বর এবং অসহিষ্ণু ওদের রাজনৈতিক মনোবৃত্তি যে বিরোধী মতামত তো দুরের কথা, পুরো দলটাকেই ওরা সাংগঠনিকভাবে নির্মূল করে দিতে চেয়েছিল।

তিনি আরও বলেন, আজকেও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান, সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী, তারেক জিয়া বিদেশ থেকে হুকুম দিয়ে বিএনপি নেতা-কর্মীদেরকে নৈরাজ্যের দিকে ঠেলে দিতে চাচ্ছে। তারেক জিয়ার মত একজন কাপুরুষের নেতৃত্বের কারণে বিএনপি আজ সন্ত্রাসী সংগঠন হিসাবে ইতিহাসের আস্তাকুরে নিক্ষেপ হতে চলেছে।

তিনি আরও বলেন, উন্নয়নশীল বাংলার যুবসমাজের দাবি, দুর্নীতি ও ২১শে আগস্ট হত্যাকাণ্ডের যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামী, খুনি জিয়াউর রহমানের কু-পুত্র তারেক রহমানকে অনতিবিলম্বে, কান ধরে দেশে ফিরিয়ে এনে রায় কার্যকর করতে হবে এই বাংলার মাটিতে। তাহলেই এই সকল হত্যার রাজনীতি থেকে এই দেশ চিরতরে মুক্তি পাবে।

বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মোঃ মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট জিয়ার খুনি পুত্র তারেক জিয়ার নির্দেশে বঙ্গবন্ধুকন্যা রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গ্রেনেড হামলা চালায় বিএনপি-জামাতের সন্ত্রাসীরা। সেই হামলায় আওয়ামী লীগ নেত্রী আইভী রহমানসহ ২৪ জন নেতা-কর্মী প্রাণ হারায়। সন্ত্রাসী তারেকের নেতৃত্বে এদেশে অস্ত্রের ঝনঝনানী শুরু হয়েছিল।

তারই প্রত্যক্ষ মদদে ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট সারা দেশে সিরিজ বোমা হামলা চালিয়েছিল জঙ্গিরা। তিনি আরও বলেন, বিএনপি-জামাত বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করতে এদেশের সাধারণ মানুষের ওপর অত্যাচার চালিয়েছে। মানুষকে হত্যা করেছে, নারীদের ধর্ষণ করেছে, সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচারও তাদের বাড়িঘর আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছিল। তারেকের নির্দেশে রমনার বটমূলে, নারায়ণগঞ্জের আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে বোমা হামলা চালিয়েছিল। দেশের টাকা বিদেশে পাচার করে, যুব সমাজকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিয়েছিল তারেক জিয়া। তাদের উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশকে র্বথ রাষ্ট্রে পরিণত করা। সেই বিএনপি-জামাত আবারও বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে, দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে, দেশের উন্নয়নকে ব্যহত করতে আগুন সন্ত্রাস শুরু করেছে।

এই জামাতকে প্রতিহত করতে যুবলীগই যথেষ্ট। যদি আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ সকল সহযোগী সংগঠন ঐক্যবদ্ধভাবে রাজপথে নামে তাহলে বিএনপি-জামাত পালানোর পথ খুঁজে পাবে না। এসময় আরও বক্তব্য রাখেন, যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মঞ্জুর আলম শাহীন, ইঞ্জিনিয়ার মৃনাল কান্তি জোদ্দার, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সুব্রত পাল, মোঃ রফিকুল আলম জোয়ার্দার সৈকত, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ সাইফুর রহমান সোহাগ, আবু মুনির মোঃ শহিদুল হক চৌধুরী রাসেল, প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী, দপ্তর সম্পাদক মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক মোঃ সাদ্দাম হোসেন পাভেল, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্পাদক মোঃ শামছুল আলম অনিক, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মোঃ আব্দুল মুকিত চৌধুরী, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক অ্যাড. মুক্তা আক্তার, উপ-দপ্তর সম্পাদক মোঃ দেলোয়ার হোসেন শাহজাদা, উপ-তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্পাদক এন আই আহমেদ সৈকত, সহ-সম্পাদক আহতাসামুল হাসান ভূইয়া রুমি, ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের সহ-সভাপতি সোহরাব হোসেন স্বপন, আনোয়ার ইকবাল সান্টু, নাজমুল হোসেন টুটুল, আবু সাঈদ মোল্যা, দীল মোহাম্মদ খোকা, সৈয়দ আহমেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান বকুল, গাজী সারোয়ার হোসেন বাবু, মোঃ মাকসুদুর রহমান, কাজী ইব্রাহিম খলিল মারুফ, প্রচার সম্পাদক আরমান হক বাবু, দপ্তর সম্পাদক মোঃ এমদাদুল হক এমদাদ, অর্থ সম্পাদক ফিরোজ উদ্দিন আহমেদ সাইমন, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মোঃ গোফরান গাজী, উপ-দপ্তর সম্পাদক খন্দকার আরিফ-উজ-জামান আরিফ, উপ-শিক্ষা প্রশিক্ষণ ও পাঠাগার সম্পাদক আলতাফ হোসেনসহ কেন্দ্রীয়, মহানগর ও বিভিন্ন ওয়ার্ড যুবলীগের নেতৃবৃন্দ। বার্তা প্রেরক, মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ দপ্তর সম্পাদক বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ

বার্তা বাজার/জে আই