প্রথম ধাপে আগামী ৮মে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিএনপির দুজন সহ মনোনয়ন উত্তোলন করেছিলেন ৫জন প্রার্থী। তবে দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে শেষ পর্যন্ত নিজের মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শাহ মোহাম্মাদ শামীম হোসেন চৌধুরী। এদিকে ২২ এপ্রিল মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিনে এসেও চেয়ারম্যান পদে নিজের মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি সারোয়ার হোসেন। দলটি থেকে তারা দুজন চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন দাখিল করেছিলেন।

শুরু থেকেই দলটির স্থানীয় সূত্র থেকে শোনা যাচ্ছিল কৌশলগত কারণেই চেয়ারম্যান পদে দুজন নেতা মনোনয়ন উত্তোলন করেছেন। যদি দলীয় সিদ্ধান্ত কিংবা অন্য কোন কারণে উপজেলা বিএনপির সভাপতি শামীম চৌধুরী নির্বাচনে অংশ গ্রহণ না করেন, তবে মাঠে আওয়ামীলীগকে অস্বস্থিতে ফেলতে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করবেন আরেক নেতা সারোয়ার হোসেন। শেষ পর্যন্ত সেটিই বাস্তবে রুপ নিলো। তবে দলীয় সিদ্ধান্তের বাহিরে এসে কেও নির্বাচন করলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানিয়েছেন দিনাজপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বখতিয়ার আহম্মেদ কচি।

অপরদিকে সব জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান এবং উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুর রাখে খন্দকার শাহানসা এবারের নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করবেন না জন্য মনোনয়ন উত্তোলন করেননি । এতে আওয়ামীলীগের বড় একটি অংশের সমর্থন পাবেন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এবং উপজেলা আওয়ামীলীগের সদস্য কাজী শুভ রহমান চৌধুরী। জাতীয় নিবাচনের পূর্বে নির্বাচনী প্রচারণায় উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে তার নাম ঘোষণা করেছিলেন দিনাজপুর—৬ আসনের সংসদ সদস্য শিবলী সাদিক। তবুও বেশ অস্বস্থিতে আওয়ামীলীগ! চেয়ারম্যান পদে শুভ রহমান চৌধুরী ছাড়াও মনোনয়ন তুলেছেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সদস্য আইনজীবী রবিউল ইসলাম এবং উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি তৌহিদুল ইসলাম। এতে একই পদে তিন প্রার্থীকে নিয়ে টালমাতাল দলটি।

ঘোড়াঘাট উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সদের আলী খন্দকার বলেন, “এবারে প্রতীক ছাড়াই নির্বাচন হচ্ছে। সুতরাং যে কেও প্রার্থী হতে পারে। একাধিক প্রার্থী নিয়ে আমাদের কোন মাথা ব্যথা নেই।”

এদিকে মুঠোফোনে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বখতিয়ার আহম্মেদ কচি বলেন, “প্রহসনের কোন নির্বাচনে বিএনপি অংশ গ্রহণ করেননি। তাই দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরা উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বর্জন করেছি। দলের নির্দেশনার বাহিরে কেও নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

একই অবস্থা ভাইস চেয়ারম্যান পদে। ভাইস চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন দাখিল করেছিলেন সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান এবং উপজেলা জামায়াতের সাবেক আমির আলমগীর। এতে একই পদে মনোনয়ন উত্তোলন করা আরো ৮ প্রার্থীর কাছে পথের কাটা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন এই জামায়াত নেতা। তবে শেষ পর্যন্ত দলীয় সিদ্ধান্তের কারণে নিজের মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন আলমগীর হোসেন। তাতে বেশ স্বস্থি ফিরেছে এই পদে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করা অন্য প্রার্থীদের মাঝে।

মনোনয়ন যাচাই—বাছাইয়ে শিবু কিস্কু নামে স্কুল শিক্ষকের মনোনয়ন বাতিল করেছে নির্বাচন কমিশন। এতে ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন ইফতেখার আহম্মেদ বাবু, শহিদুল ইসলাম আকাশ, মাহফুজার রহমান, জাহাঙ্গীর আলম সেলিম রেজা, মুক্তার হোসেন ও আতিকুর রহমান টুকু। এছাড়াও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে শেষ পর্যন্ত মাঠে রয়েছেন ৯ জন প্রার্থী।

ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার শাহানুর রহমান বলেন, “সুষ্ঠু ও সুন্দও পরিবেশে নির্বাচন সম্পন্ন করতে কমিশনের পক্ষ থেকে সব ধরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ২৩ এপ্রিল প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে।”