সেন্টমার্টিনে ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী চরম খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। গত এক সপ্তাহ ধরে সাগরে মাছ ধরতে না পারা এবং নিত্যপণ্যের সর্বরাহ বন্ধ থাকায় এই সংকট দেখা দিয়েছে বলে দাবী স্থানীয়দের। এই পরিস্থিতি কিছুটা হলেও মোকাবেলা করতে জেলা প্রশাসন ও সরকারি বিভিন্ন সংস্থা ত্রাণ কার্যক্রম শুরু করেছে।
ঘুর্ণিঝড় মোখার আঘাতে ৮ বর্গ কি.মি. এর সেন্টমার্টিন দ্বীপে প্রায় ৮ শ’র বেশী কাচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। বাড়ি ঘরের উপর গাছপালা উপড়ে পড়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের হাত থেকে রক্ষা পায়নি দ্বীপ রক্ষা দেয়াল কেয়াবন। আপাতত বাঁশ ত্রিপাল দিয়ে বিধ্বস্ত বাড়িঘর ও ঘেরা বেড়া গুলো মেরামত করার চেষ্টা করছে ক্ষতিগ্রস্থরা।
জেলেদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এক সপ্তাহ ধরে ধরে সাগরে মাছ শিকারে যেতে না পারায় পরিবার নিয়ে অনাহারে থাকার উপক্রম হয়েছে। চালডাল কিছুই ঘরে নেই। তার মাঝে আবার নিজেদেরই বাড়িঘর ও ঘেরাবেড়া মেরামত করতে হচ্ছে। এমনিতেই নিত্য পণ্যের দাম বেড়েছে। বৈরী আবহাওয়ার কারনে টেকনাফ থেকে গত চার দিন ধরে কোন নিত্যপণ্য আসছে না। এভাবে কয়েকদিন নিত্যপণ্য না এলে দ্বীপে তীব্র খাবার সংকট দেখা দেবে। অপর্যাপ্ত সরকারী ত্রানের উপরই ভরসা করতে হচ্ছে।
সেন্টমার্টিন ইউপি সদস্য আল নোমান জানান, সেন্টমার্টিনের অধিকাংশ মানুষ জেলে। বৈরী আবহাওয়ার কারনে মাছ শিকারে যেতে না পারায় মারাত্বক বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের এসব মানুষ। উপজেলা প্রশাসন যে পরিমান ত্রান বিতরণ করছে তা অপর্যাপ্ত। সারা বছরই দ্বীপের সমস্ত নিত্যপণ্যের যোগান আসে টেকনাফ থেকে। কিন্তু চারদিন ধরে ট্রলার চলাচল বন্ধ থাকায় খাবার ও নিত্যপণ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে যারা নূন্যতম সামর্থবান তারাও পড়েছে বেকায়দায়।
গত কাল (মঙ্গলবার) নৌবাহিনীর পক্ষে ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করছে নৌবাহিনী। বানৌজা সমুদ্রজয় জাহাজের অধিনায়ক মিজানুর রহমান জানান, গতকাল থেকে নৌবাহিনীর সদস্যরা খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা দিচ্ছি। সমুদ্রের পরিস্থিতি যদি খারাপ থাকে আরও ২/৩ দিন ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত থাকবে।
টেকনাফ উপজেলা সহকারী ভূমি কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইরফানুল হক জানান, আজ দুপুরে টেকনাফ উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুকনো খাবার ও ত্রান বিতরন শুরু হয়েছে। আগামী কাল থেকে টিন বিতরণ শুরু হবে।
জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ শাহীন ইমরান বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থ সেন্টমার্টিন দ্বীপের সবাই সরকারের ত্রাণ সহায়তা পাবে। কার নগদ অর্থ সহায়তা প্রয়োজন এবং কার গৃহ নির্মাণের জন্য টিন প্রয়োজন জেলা প্রশাসন সে অনুযায়ী ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা তৈরী করেছে। অনতিবিলম্বে তাদের কাছে এসব সহায়তা পৌছে দেয়া হবে।
বার্তাবাজার/এম আই