চলতি সপ্তাহে মার্কিন সরকারের একটি সিনিয়র প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফর করেছে। কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদার এবং ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে সমন্বিত স্বার্থের অগ্রগতিসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে এই সফরে। ফেব্রুয়ারির ২৪ থেকে ২৬ তারিখ পর্যন্ত তারা সফর করেছেন।

এই প্রতিনিধিদলের অন্যতম সদস্য ছিলেন মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ার দায়িত্বপ্রাপ্ত ডেপুটি অ্যাসিস্টেন্ট সেক্রেটারি আফরিন আক্তার। প্রতিনিধিদলের আরেক সদস্য হচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের সিনিয়র ডিরেক্টর অ্যালিন লুবাচার। আরো ছিলেন মাইকেল শিপার, যিনি ইউএসএআইডির এশিয়া ব্যুরোর অ্যাসিস্টেন্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেটর।

জলবায়ু পরিবর্তন, বাণিজ্য, রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট এবং শ্রম অধিকার নিয়েও আলোচনা করেছেন প্রতিনিধি দল। তারা দেশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, ব্যবসায়িক নির্বাহী, সুশীল সমাজের সংগঠন এবং বিরোধী দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন।

অনেক জল্পনা-কল্পনার পর এই সফরটি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের, বিশেষ করে কথার সুর এবং বার্তার ক্ষেত্রে একটি স্পষ্ট পরিবর্তন এনেছে। বাংলাদেশের ৭ জানুয়ারী নির্বাচনকে সামনে রেখে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মানবাধিকার ও গণতন্ত্র ‘রক্ষা করার জন্য’ বাংলাদেশের ওপর বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা, ভিসা বিধিনিষেধ এবং জনসমালোচনার মতো জোরালো পদক্ষেপ নিয়েছিল। নির্বাচনের পরেও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু হয়নি বলে উল্লেখ করেছে।

কিন্তু, গত ৬ ফেব্রুয়ারি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে একটি চিঠি লিখেন। চিঠিতে তিনি যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সম্পর্কের নতুন অধ্যায়ে স্বাগত জানান। চিঠিতে অধিকার বা গণতন্ত্র বিষয়ে কোনো কিছু উল্লেখ ছিল না।

মার্কিন প্রতিনিধিদলের সফরকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাসান মাহমুদসহ বাংলাদেশি কর্মকর্তারা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের নতুন শুরুর উপর বেশ জোর দিয়েছেন। প্রশানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান রহমান বলেন, ‘নির্বাচন এখন অতীতের বিষয়।’

নির্বাচনের আগে-পরে যুক্তরাষ্ট্রের এমন পরিবর্তন নিয়ে বেশ গুঞ্জন চলছে। ধারণা করা হচ্ছে, ঢাকার রাজনৈতিক পরিবেশ থেকে নিজেকে দূরে রাখতে চায় বলে মতের পরিবর্তন করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

বার্তা বাজার/আইএফ