মাদারীপুরের রাজৈরে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ও মহান শহীদ দিবস উপলক্ষে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করার সময় ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের নেতাকর্মীদের মাঝে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার ২১শে ফেব্রুয়ারি প্রথম প্রহরে উপজেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য দুইগ্রুপ একত্রে উঠলে ঘটে এ ঘটনা। এসময় রাজৈর থানার পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। হাতাহাতির ঘটনায় তাদের ফুলের তোড়া ভেঙ্গে চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যায়।

জানা যায়, মাদারীপুর জেলা আওয়ামীলীগ দুই ভাগে বিভক্ত। এক পক্ষের নেতৃত্ব দেন কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও মাদারীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য শাজাহান খান। আরেকটি পক্ষের নেতৃত্ব দেন কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম সমর্থিত মাদারীপুর জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদ মোল্লা। এজন্য রাজৈর উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন ও প্রতিটি ওয়ার্ড পর্যায়ে আওয়ামীলীগ ও ছাত্রলীগসহ অধিকাংশ অঙ্গসংগঠনের পাল্টাপাল্টি কমিটি পরিচালনা করেন তাদের অনুসারীরা।

সরজমিনে দেখা যায়, প্রথম প্রহরে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য রাত ১১ টা ৫০ মিনিটে রাজৈর উপজেলা চত্ত্বরের শহীদ মিনারে সামনে হাজির হন উপজেলা প্রশাসন ও রাজনৈতিক নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ। রাত ১২টা ১ মিনিটে প্রথমে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উপমা ফারিসার নেতৃত্বে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। পরে প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে সিরিয়াল অনুযায়ী রাজৈর পৌরসভা ছাত্রলীগের নাম ঘোষণা করেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মাহাবুব আলম। এসময় মাদারীপুর জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদ মোল্লা পন্থী পৌর ছাত্রলীগ কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাকিব চৌধুরী গ্রুপ ও মাদারীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য শাজাহান খান পন্থী পৌর ছাত্রলীগের অপর একটি কমিটির সভাপতি রবিউল মোল্লার গ্রুপ একত্রে শহীদ মিনারের সিড়িতে উঠে। ছবি তোলাকে কেন্দ্র করে তর্কবিতর্কের একপর্যয়ে দুগ্রুপের নেতাকর্মীদের মাঝে হাতাহাতি হয়।

এ ব্যাপারে জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি পন্থী পৌর ছাত্রলীগ কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাকিব চৌধুরী জানান, আমরা ফুল নিয়ে আগে উঠেছি, ওরা (রবিউল মোল্লা) পরে উঠেছে। আমরা সামনে থাকায় ওরা আমাদের পিছন থেকে ধাক্কা দিছে। এ নিয়ে হাতাহাতি হয়েছে। ওদের কমিটি ভুয়া।

মাদারীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য পন্থী পৌর ছাত্রলীগের অপর কমিটির সভাপতি রবিউল মোল্লা বলেন, আমরা শহীদ মিনারে ফুল দিতে গেলে শাহাবুদ্দিন মোল্লা গ্রুপের সাকিবসহ অন্যরা আমাদের বাধা দেয়। তখন আমরা প্রতিহত করেছি।

রাজৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদুজ্জামান হাওলাদার আসাদ এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির আগেই আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করি।