মাদারীপুরের রাজৈরে দলাদলি বিরোধের জের ধরে বিদ্যুৎতের তাড়কে কেন্দ্র করে সৌদি প্রবাসী মামুন শেখ(৩২) এর বসতবাড়িতে ও একটি মুদি দোকানে হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। প্রতিপক্ষ গিয়াস মোল্লা (দাদন) পক্ষের লোকজন পুলিশের সামনে এ কান্ড ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় উপজেলার পাইকপাড়া ইউনিয়নের উত্তর শ্রীরামপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

এসময় প্রতিপক্ষের হামলায় প্রবাসী মামুনের বৃদ্ধা মা আহত হয়। এ ঘটনায় বুধবার দুপুরে মাদারীপুর বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেছেন ক্ষতিগ্রস্থ প্রবাসীর পিতা আব্দুল মান্নান শেখ(৫৭)।

স্থানীয় ও ভুক্তভোগীরা জানায়, উপজেলার উত্তর শ্রীরামপুর গ্রামে দলাদলি নিয়ে সিরাজুল হক মাতুব্বর ও গিয়াস মোল্লা উভয় পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন যাবত বিরোধ চলে আসছিল। এরই জের ধরে গিয়াস পক্ষের সাইদুর রহমান মানিসহ কয়েকজন মিলে সিরাজুল হক পক্ষের বাদশা শেখ, কাওসার শেখ, ইনু শেখ, বাদল শেখ, মাজেদ শেখ, লালমিয়া শেখ, সাহিন শেখ, জামাল শেখ ও কামাল শেখের বাড়ির বিদ্যুৎ সংযোগের তাড় কেটে দেয়। পরে এ বিষয়ে পল্লীবিদ্যুৎ অফিস ও থানায় অভিযোগ দিলে সাইদুর গংরা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। এক পর্যায়ে তারা দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে সিরাজুল পক্ষের সৌদি প্রবাসী মামুনের বসত বাড়িতে ও কাওসার শেখের মুদি দোকানে হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও লুটপাট করে। এসময় প্রবাসীর বৃদ্ধা মা বাধা দিতে গেলে তাকে মারধর করে।

পরে তাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হয়। এসময় হামলাকারীরা কয়েক লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। এ ঘটনায় প্রবাসী মামুনের পিতা আব্দুল মান্নান শেখ বাদি হয়ে বুধবার মাদারীপুর বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন। রাজৈর থানার এএসআই আবুল হোসেনের সামনে এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানান ভুক্তভোগী কাওসার শেখ।

ভুক্তভোগী প্রবাসী মামুন শেখ জানান, আমি সৌদি থেকে এসে ৪ দিন আগে বিয়ে করেছি। আমার বড় ভাইও সৌদি প্রবাসী। আমরা সবাই অসুস্থ নানাকে দেখতে নানা বাড়ি পাইকপাড়া গিয়েছিলাম, মা একা বাড়িতে ছিল। এই সুযোগে প্রতিপক্ষরা আমাদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে এবং মাকে মারধর করে ঘরে থাকা স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় আমার বাবা বাদি হয়ে মাদারীপুর আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন। আমি এ হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

আরেক ভুক্তভোগী মুদি দোকানি কাওসার শেখ জানান, পুলিশের সামনেই আমার দোকান কুপিয়ে প্রায় এক লক্ষ টাকার মালামাল নিয়ে গেছে। তখন আবুল দারোগা উপস্থিত ছিলেন। আমি তাদের শাস্তি চাই।

অভিযুক্তের একজন সাদ্দাম মাতুব্বর বলেন, আমার ঘরের উপর দিয়ে বিদ্যুৎতের তাড় যাওয়ায় কেটে দিয়েছি। কিন্তু আমরা কোন হামলা করি নাই। ওরাই আমাদের উপর আগে হামলা করেছে।

অভিযোগ অস্বীকার করে রাজৈর থানার এএসআই মোঃ আবুল হোসেন বলেন, আমরা যাওয়ার আগেই তারা মারামারি করেছে। তবে স্থানীয় চেয়ারম্যান দুইপক্ষের মধ্যে মিমাংসা করে দিয়েছেন বলে জানান তিনি।

রাজৈর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সঞ্জয় কুমার ঘোষ জানান, তিনি (এএসআই মোঃ আবুল হোসেন) ঘটনাস্থলে একা ছিলেন আর হামলাকারীরা ২০-২৫ জন ছিল। তাই সে একা কিছু করতে পারেনি। পরে ওসিকে ফোন দিলে ফোর্স যাওয়ার পর পরিস্থিতি শান্ত করে।

বার্তা বাজার/জে আই