কিশোরগঞ্জের ভৈরবে মসজিদের নতুন কমিটি গঠন ও ইমাম নিয়োগ নিয়ে দুটি পৃথক ঘটনায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে প্রায় ৪০ জন আহত হয়। এসময় কয়েকটি বাড়ীঘর ভাংচুর লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। আজ শুক্রবার জুম্মার নামাজের পর উপজেলার কালিকাপ্রসাদ ও আগানগর ইউনিয়নের নবীপুর এলাকায় পৃথক দুটি ঘটনায় এই ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেন ভৈরব থানার ( ওসি) মোহাম্মদ মাকছুদুল আলম।
খবর পেয়ে ভৈরব থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনেন।
এছাড়া গুরুতর আহত দুজনকে কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতালে এবং একজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আহতদের মধ্য কালিকাপ্রসাদ এলাকার যাদের নাম পাওয়া গেছে তারা হলো লতিফ খাঁন (৬২), কবির খাঁ (৫০), ফোরখান খাঁ (৩৬), আবু হানিফ (৩৮), মোঃ আলী (৩৫), বাতেন মিয়া (৫৫), মোরশেদ খাঁন (৩৭), রুবেল খাঁ (৩৪), সোহেল (১৮), আজম খাঁ (৩৮), জিসান (১৩) আহতদের মধ্য ২৭ জন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছে এবং ১০ জনকে স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে কালিকাপ্রসাদ খাঁন বাড়ী জামে মসজিদের নতুন কমিটির সভাপতি নিয়োগ নিয়ে আজ দুপুরে দুই পক্ষ সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এলাকার খাঁ বাড়ী বংশের জায়গায় মসজিদটি অনেক বছর আগে নির্মাণ করা হয়। ২০১৯ সাল থেকে খাঁ বাড়ীর বংশের কবির খাঁন এই মসজিদের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে। এই কমিটির মেয়াদ শেষ হলে গত কয়েকদিন আগে কবির খাঁনকে পুনরায় সভাপতি করে এলাকাবাসী। কিন্ত প্রতিপক্ষ মুরাদ খাঁনসহ কাউছার, আলাউদ্দিন মিয়া গংরা কবির খাঁনকে পুনরায় সভাপতির দায়িত্ব দিতে বাধা দেয়। এনিয়ে আজ দুই পক্ষ সংঘর্ষে লিপ্ত হলে উভয়পক্ষের প্রায় ২৫ জন আহত হয়। এসময় প্রতিপক্ষরা কয়েকটি বাড়ীঘর ভাংচুর লুটপাট করে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এদিকে উপজেলার আগানগর ইউনিয়নের নবীপুর মসজিদের ইমাম নিয়োগ নিয়ে আজ শুক্রবার দুপুরে দুই পক্ষ সংঘর্ষে লিপ্ত হলে দুই পক্ষের প্রায় ১৫ জন আহত হয়। এলাকার নসব আলী ও বাবইরার বাড়ীর বংশের লোকজনের মধ্য মারামারি সংঘর্ষ হয়। নসব আলীর বাড়ীর লোকজন আঃ আওয়াল নামের একজন ইমামকে মসজিদে নিয়োগ দিয়েছে কিন্ত বাবইরার বাড়ীর লোকজন তার নিয়োগ মানতে রাজী নয়। এনিয়ে আজ জুম্মার নামাজের পর দুই পক্ষ সংঘর্ষে লিপ্ত হলে ঘটনাটি ঘটে। আহত হয় তারা হলো মুক্তার (২৫), অহিদ (৩১), সেলিম (২০), ওয়াহেদ (৪৫), মুতি (২৭), স্বপ্না বেগম (২২), ফুল মিয়া (২৮), মোজাম্মেল (৩০), রাকিব (২৯), পারভিন বেগম (২৩), স্মৃতি (১০), নুরজাহান (১৫)।
এবিষয়ে কালিকা প্রসাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ লিটন মিয়া বলেন, মসজিদের কমিটি সভাপতির পদ নিয়ে আজ দুইপক্ষ সংঘর্ষে লিপ্ত হলে পুলিশ এসে পরিস্থিতি শান্ত করে। সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন আহত হয় এবং কয়েকটি বাড়ী ভাংচুর লুটপাট করা হয়। ঘটনাটি দুঃখজনক বলে তিনি জানান।
নবীপুর এলাকার বাবইরার বাড়ীর আহত সুমন বলেন, মসজিদের ইমাম আওয়ালকে নিয়োগকে কেন্দ্র করেই আজকের ঝগড়া মারামারি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এ বিষয়ে ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ ( ওসি) মোহাম্মদ মাকছুদুল আলম জানান, দুটি পৃথক ঘটনায় ধর্মীয় বিষয় নিয়ে। কালিকাপ্রসাদে মসজিদের কমিটির নতুন সভাপতি নিয়ে এবং নবীপুরে মসজিদের ইমাম নিয়োগ নিয়ে ঘটনা। খবর পেয়ে পুলিশ দুটি ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে বলে তিনি জানান।
বার্তা বাজার/জে আই