সীমান্তবর্তী ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলাটি ছিলো ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম রণাঙ্গণ। কিন্তু স্বাধীনতার ৫২ বছরে এখনো অযত্ন-অবহেলায় পড়ে রয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় সেনারবাদী গণকবর। চারদিকে ঘন ঝোঁপ-ঝাড় আর জঙ্গল। দেখে কোনভাবেই বোঝা যাবে না ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের এ শূণ্যরেখায় নীরবে অভিমানে শুয়ে আছেন ২৫০ জনেরও বেশী শহীদ মুক্তিযোদ্ধা। এ গণকবরটি সীমান্তের শূণ্য রেখায় হওয়ায় এখনো অরক্ষিত রয়ে গেছে। মহান মুক্তিযুদ্ধে দেশের জন্য যারা জীবন বিলিয়ে দিয়েছিলেন তাদের শেষ স্মৃতি চিহ্নটুকুও এভাবে অযত্ন আর অবহেলায় পড়ে থাকবে তা কেউ ভাবতে পারেনি। তবে স্থানীয়দের একটাই আক্ষেপ, দেশ স্বাধীন হওয়ার দীর্ঘদিন পার হলেও এ গণকবরের ইতিহাস রক্ষায় এখন পর্যন্ত এখানে কোন স্মৃতিসৌধ কিংবা অবকাঠামো গড়ে উঠেনি।

১৯৭১ সালে সীমান্তবর্তী ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার ৩নং সেক্টরের অধীনে থাকা এ অঞ্চলে পাকবাহিনীর সাথে মুক্তিকামী বীর বাঙ্গালির অসংখ্য সম্মুখ যুদ্ধ হয়। সে সময় অনেক মুক্তিযোদ্ধারা সেখানে শহীদ হন। আবার অনেকেই ভারতের পিজি হাসপাতালে আহতাবস্থায় মৃত্যুকে বরণ করে নেন। কিন্তু ২ নং সেক্টরের অধীনে থাকা আখাউড়ার সেনারবাদী গ্রামে পাকবাহিনীর শক্ত অবস্থান ছিলো না। ফলে গ্রামবাসীরা আখাউড়া-আগরতলার শূণ্যরেখায় সেনারবাদী গণকবরে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের সমাহিত করত। কিন্তু এ গণকবরটি সংরক্ষণ না করায় সেখানে শায়িত অধিকাংশ মুক্তিযোদ্ধাদের পরিচয় এখন পযর্ন্ত পাওয়া যায়নি।

স্থানীয়রা বলেন, ৭১ এর যত মুক্তিযোদ্ধা এ সেক্টরে মারা গেছেন তাদের এখানে দাফন করা হতো। অথচ এ গণকবরটি আজ অবহেলিত হয়ে পড়ে আছে। এছাড়াও মুক্তিযোদ্ধাদের নামে এখানে কোন স্মৃতিসৌধ নেই। স্থানীয়দের সরকারের কাছে একটাই দাবি এ গণকবরের ইতিহাস রক্ষায় যেন এখানে একটি স্মৃতিসৌধ কিংবা অবকাঠামো গড়ে তোলা হয়।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোঃ হারুনুর রশীদ বলেন, স্বাধীনতার ৫২ বছরেও আমাদের সেনারবাদী গণকবরটি সংরক্ষণ করা হয়নি। যার ব্যর্থতা আমাদের বাঙালী জাতির উপর পড়ে। এসময় তিনি ভারত-বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে এ গণকবরটি সংরক্ষণের দাবী জানান।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক জানিয়েছে , এটি নো ম্যানস ল্যান্ডের বিষয় সেখানে দুটি দেশের বর্ডারের বিষয়টি জড়িত। সে ক্ষেত্রে গণকবরটি রক্ষায় সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হবে।

বার্তাবাজার/এম আই