নীল জলরাশির বুকে দাঁড়িয়ে আছে সেন্টমার্টিনের ছেঁড়া দ্বীপ। ২০২০ সাল থেকে পরিবেশ-প্রতিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা হিসেবে সরকারী ভাবে ছেঁড়া দ্বীপে সর্ব সাধারনের যাতায়াতে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও পরিবেশ অধিদপ্তরের উদাসীনতায় পর্যটক এবং স্থানীয়দের যাতায়াতের ফলে রক্ষা করা যাচ্ছেনা এই দ্বীপের সর্বশেষ কেয়াবন গুলো। তবে এবারে ছেঁড়া দ্বীপের কেয়াবন পুড়িয়ে স্থানীয়রা আনন্দ উল্লাস করতে দেখাগেছে।

গত মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় ছেঁড়া দ্বীপে আরিয়ান খাঁন নামের স্থানীয় এক যুবকের নেতৃত্বে একদল তরুণ কেয়াবনে আগুন দিয়ে আনন্দ উল্লাস করতে দেখা গেছে। পরে আরিয়ান খাঁন বেশ কিছু ছবি নিজের ফেসবুকে পোস্ট দেয়ার পর বিষয়টি নজরে আসে। আরিয়ান খাঁন কোনাপাড়ার বাসিন্দা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক ইউপি সদস্য জানান, ছেঁড়া দ্বীপ ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা থাকলেও সৈকতে কেয়াবনের পাশঘেষে অটোরিকশা, মোটরসাইকেলে চলাচল করছেন পর্যটকসহ স্থানীয়রা। প্রতি বছর নতুন নতুন স্থাপনা গড়েতুলে ধ্বংস করা হচ্ছে কেয়াবন।

কেয়াবনে আগুন জ্বালানোর বিষয়ে সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, ‘ঘটনাটি খুব দুঃখজনক, আমি এই বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছি।

কক্সবাজার বন ও পরিবেশ রক্ষা সোসাইটির সভাপতি দীপক শর্মা দিপু বলেন, সরকারের নিষেধাজ্ঞা গুলো মানছেনা দ্বীপের বাসিন্দা ও প্রশাসনের কেউ। পরিবেশ অধিদপ্তর ও স্থানীয় প্রশাসন অবৈধ সুবিধা নিয়ে নিয়ে দ্বীপ ধ্বংস করে দিচ্ছে। দ্বীপ রক্ষা করতে গেলে নতুন স্থাপনা নির্মান বন্ধ করে, অবৈধ ভাবে গড়ে উঠা স্থাপনাগুলো ভাঙতে হবে। তার পরেই সেন্টমার্টিনে পর্যটক ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়ন করতে হবে। বিশেষ করে, ছেঁড়া দ্বীপে আগুন জ্বালানোর সাথে যারা জড়িত ছিলো তাদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেয়া জরুরী বলে মন্তব্য করেন তিনি।

স্থানীয়রা বলছেন, সেন্টমার্টিন দ্বীপের রক্ষাদেয়াল সারিবদ্ধ কেয়াবন। পাঁচ বছর আগেও দ্বীপের চারপাশে কেয়াবন ছিল। মানুষের অত্যাচারে কেয়াবন ধ্বংসের ফলে জলোচ্ছাসে নতুন নতুন এলাকা তলিয়ে যাচ্ছে।

এই বিষয়ে সেন্টমার্টিনে দায়িত্বরত পরিবেশ অধিদপ্তরের সিনিয়র কেমিস্ট আব্দুস সালাম বলেন- দ্বীপে আমি নতুন এসেছি। লোক জনের সাথে এতো বেশী যোগাযোগ গড়ে উঠেনি। চেয়ারম্যানের কাছে খোঁজ নিয়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আদনান চৌধুরী বলেন- বিষয়টি শুনেছি, খোঁজ নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ই.এক্স/ও.আর/বার্তা বাজার