পটুয়াখালীতে নারীঘটিত মামলার ভয় দেখিয়ে কৃষকের ৩৫০ শতাংশ জমির চাষাবাদ বন্ধ করে রাখার অভিযোগ উঠেছে প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে। এবিষয়ে থানা ও ইউনিয়ন পরিষদে ৫ বার সালিশি হলেও সালিশস্থল ত্যাগ করার পরে কোন নিয়ম-কানুন মানছেনা প্রভাবশালীরা।

গলাচিপা উপজেলার আমখোলা ইউনিয়নের ছৈলাবুনিয়া গ্রামের কৃষক আঃ মান্নান মিয়া মামলার ভয়ে বর্তমানে জমি চাষাবাদ করতে পারছেনা। নিরুপায় হয়ে সোমবার ( ১১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ১০ জনের নাম উল্লেখ করে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গলাচিপা সার্কেল) এর কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন কৃষক আঃ মান্নান । এতে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওই কৃষকদের হয়রানি করছেন মোঃ আতাহার মোল্লা (৭৫), মোঃ রফিক মোল্লা (৬৫), মোঃ নাসির মোল্লা, মোঃ খোকন, তপন মোল্লা, মোঃ কবির মোল্লা, সায়েদ মোল্লা ও মোঃ স্বপনসহ কতিপয় প্রভাবশালী।

কৃষক আঃ মান্নান বলেন, ছৈলাবুনিয়া ও নিজ সুহরী মৌজার ৪২ ও ২৫ খতিয়ানের ০৬/৪৩/৪৬/৪৮ দাগে পৈতৃক সুত্রে আমরা জমি পেয়েছি। কাগজপত্র সবকিছুই ঠিক আছে, দীর্ঘ অনেক বছর ধরে আমারা জমি ভোগদখল করে আসছি। গত ছয়মাস আগে এই জমি চাষাবাদ করতে গেলে মোসাঃ লুৎফা বেগম ও মোসাঃ রিনা বেগম এসে আমাদের বাধা দেয়। জমি চাষাবাদ করলে নারীঘটিত মিথ্যা মামলা দেয়ার হুমকি দেয় তারা । এতে আমারা আমখোলা ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ করেছি। পরে চেয়ারম্যান উভয়পক্ষকে নিয়ে তিনবার সালিশিতে বসেন। আগস্ট মাসে সর্বশেষ সালিশিতে কাগজপত্র দেখে সিদ্ধান্ত হয় মোঃ আতাহার মোল্লা গং জায়গা পাবেনা। এসময় সালিশি অমান্য করে তারা চলে যায়। আমরা গলাচিপা থানায় অভিযোগ করেছি, পরে সালিশিতে বসে যে সিদ্ধান্ত হয়েছে তাও মানেনি আতাহার মোল্লা । পরে আইনজীবীদের নিয়ে বাদুড়া বাজারে সালিশিতে বসা হয়েছিল। কাগজপত্র দেখে তারা রোয়েদাদ করে দিয়েছেন। তবে তারা সালিশ-ব্যবস্থা কিছুই মানছে না। আমরা চাষাবাদ করতে গেলে মোসাঃ লুৎফা বেগম ও মোসাঃ রিনা বেগম এসে নারী নির্যাতনের মিথ্যা মামলা দেওয়ার হুমকি দেয়। এতে আমরা পুলিশ সুপারের কছে অভিযোগ করলে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে বিভিন্ন ভাবে আমাদের হয়রানি করছে তারা।

এবিষয়ে আমখোলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ কামরুজ্জামান মনির বলেন, বিষয়টি মিমাংসা জন্য উভয়পক্ষ নিয়ে তিনবার বসা হয়েছে। কাগজপত্র দেখে আমরা একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছাই। এসময় বাকবিতন্ডার সৃষ্টি হলে তাদের থানায় পাঠিয়ে দিয়েছি।

আমখোলা ইউনিয়নে ৬ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোঃ মোসারেফ ও সালিশ মোঃ মস্তফা মিয়া বলেন, মোঃ আতাহার মোল্লা তার দাদি জামিনার সম্পত্তি দাবি করেছেন। তার দাদা লস্কর জীবিতকালে জামিনার মৃত্যু হয়। এতে জামিনা স্বামীর কোন সম্পত্তি পায়নি। লস্করের অন্য স্ত্রী জয়তনের কোন সন্তানাদী ছিলো না। তবে লস্করের মৃত্যুর পরে স্বামীর সম্পত্তি জয়তন পেয়েছে। এতে ওই সম্পত্তির লোভে জয়তনকে আপন দাদী দাবি করছেন আতাহার মোল্লা।

এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মোঃ নাসির মোঃ নাসির মোল্লা। তিনি বলেন, তাদের মধ্যে আমার জায়গা পাবো।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, (গলাচিপা সার্কেল) মোঃ মোরশেদ তোহা বলেন, অভিযোগ পেয়ে ওসিকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

গলাচিপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শোনিত কুমার গায়েন বলেন, জমি সংক্রান্ত বিষয় আদালতে মামলা থাকলে আমারা দেখতে পারবোনা। এসআই আবদুর রহমানকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে তাদের কথা শুনবে।

বার্তা বাজার/জে আই