নতুন করে অস্থিতিশীলতার আশঙ্কা থাকা সত্ত্বেও অবিলম্বে মালি থেকে শান্তিরক্ষী মিশন শেষ করবে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ। শুক্রবার মিশনটি বন্ধ করার জন্য সর্বসম্মতভাবে ভোট দেয় সদস্যরা। দেশটিতে ক্ষমতাসীন সামরিক বাহিনী অবিলম্বে সশস্ত্র বিদ্রোহের বিরুদ্ধে লড়াইরত আন্তর্জাতিক বাহিনীকে প্রত্যাহারের দাবি করে। এরপর জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ মালিতে এক দশক পুরনো শান্তিরক্ষা মিশন শেষ করা নিয়ে ভোট করে। তাতে সব সদস্যই এর পক্ষে ভোট দিয়েছে। এ খবর দিয়ে অনলাইন আল জাজিরা বলেছে, মালিতে শান্তিরক্ষীদের এই মিশন মিনাসমা (এমআইএনইউএসএমএ) নামে পরিচিত।

 

২০২১ সালে রাশিয়ার ভাড়াটে গোষ্ঠী ওয়াগনারের সাথে মিলিত হয় মালি। সেখানে বছরের পর বছর ধরে চলা উত্তেজনার মধ্যে শান্তিরক্ষার মিশন থেকে বিমান ও স্থল অভিযান অব্যাহত ছিল। কিন্তু ওয়াগারের কারণে তা বাধাগ্রস্ত করেছে। এ অবস্থায় মালির সামরিক বাহিনী শান্তিরক্ষীদের প্রত্যাহারের দাবি জানায়। তার প্রেক্ষিতে শুক্রবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ফ্রান্স একটি খসড়া প্রস্তাব উত্থাপন করে।

 

তার পক্ষে ১৫ সদস্যের সবাই সর্বসম্মত রায় দেয়। ফলে শনিবার থেকে সব দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয়ার কথা। এর মধ্যে আছে শান্তিরক্ষী কার্যক্রম বন্ধ করা। দায়িত্ব ও কাজগুলো হন্তান্তর করা, সেইসাথে সুশৃঙ্খলভাবে এবং নিরাপদে কর্মীদের প্রত্যাহার করা। আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে। দেশটিতে সশস্ত্র বিদ্রোহীদের হাতে নিহত হয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। তাদের এই হামলা থেকে বেসামরিক জনগণকে সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের জন্য কৃতিত্ব দেয়া হয় শান্তিরক্ষীদের। তারা চলে যাওয়ার পর মালির নিরাপত্তা পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে বলে আশঙ্কা করছেন কিছু বিশেষজ্ঞ। মালিতে এখন যে সেনাবাহিনী আছে তারা বিদ্রোহীদের মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত নয়। তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে ওয়াগনারের প্রায় এক হাজার সেনা।

 

মালিতে শান্তিরক্ষী মিশন মিনাসমাকে নিরাপত্তা পরিষদ তার রেজ্যুলুশনে বেসামরিক লোকজনকে সহিংসতার হুমকি থেকে রক্ষা করা, বেসামরিক লোকজনের নিরাপত্তা এবং তাদের কাছে মানবিক সাহায্য পৌঁছে দেয়ার দায়িত্ব দিয়েছিল। আগামী ৩০শে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তারা সেখানে দায়িত্ব পালন করবে। নিরাপত্তা পরিষদের ওই প্রস্তাবে মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরাঁকে বলা হয়েছে, মিনাসমার দায়িত্ব মালি কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তরের ব্যবস্থা করতে এবং তা ১৫ই আগস্টের মধ্যে নিরাপত্তা পরিষদকে জানাতে। এতে মিনাসমা প্রত্যাহারের সময় জাতিসংঘকে পূর্ণ সহযোগিতা করতে মালির প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।

 

জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী মিশন মিনাসমা কখন মালি ছাড়ছে? এ প্রশ্নের উত্তরে মালির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুলায়ে দিউপ জানান তিনি গত মাসের শুরুর দিকে নিরাপত্তা পরিষদকে জানিয়েছেন জাতিসংঘের অপারেশন এবং মালি কর্তৃপক্ষের মধ্যে আস্থার সংকট আছে।

 

 

ই.এক্স/ও.আর/বার্তা বাজার