মাদারীপুরের রাজৈরে যৌতুকের টাকার জন্য চাপ, লেখাপড়ায় বাধা ও স্বামীর পরিবারের নির্যাতন সইতে না পেরে বর্নী বাড়ৈ (২০) নামে এক গৃহবধূ আত্মহত্যা করেছে।

বুধবার (১৪ জুন) সকালে বাবার বাড়ি উপজেলার খালিয়া ইউনিয়নের পলিতা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত বর্নী একই গ্রামের মৃত চিন্ময় বাড়ৈর মেয়ে। তার লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মাদারীপুর মর্গে প্রেরণ করা হয়। এ ঘটনায় স্বামী পার্থ চক্রবর্তীকে আটক করেছে পুলিশ।

পুলিশ ও নিহতের পরিবার জানায়, উপজেলার বৌলগ্রামের শেখর চক্রবর্তীর ছেলে পার্থ চক্রবর্তীর (২৫) সাথে বর্নীর প্রায় দুই বছর পূর্বে প্রেম করে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই এক লক্ষ টাকা যৌতুকের জন্য চাপ, লেখাপড়ায় বাধা ও স্বামীর পরিবারের বিভিন্ন সময় নির্যাতন সইতে না পেরে গত এক মাস পূর্বে বাবার বাড়ি পলিতা গ্রামে চলে আসেন। গত রোববার ও সোমবার সকালে কয়েক দফা বর্নীর সাথে স্বামী পার্থ চক্রবর্তীর মোবাইল ফোনে কথাকাটাকাটি ও ঝগড়া হয়। এরই জের ধরে সোমবার বিকালে তিনি সবার অজান্তে ঘুমের ঔষধসহ বিভিন্ন ধরনের ঔষধ খায়। একপর্যায়ে গুরুতর অবস্থায় তাকে প্রথমে রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে মঙ্গলবার ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেলে ভর্তি করে। সেখানে তার অবস্থা আরো অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য বুধবার ভোর রাত ৪টার সময় ঢাকা মেডিকেলে নেয়ার পথে তিনি মারা যায়।

নিহত গৃহবধূর ভাই চঞ্চল বাড়ৈ জানায়, আমার বোনকে ওর স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন বিভিন্ন সময় নির্যাতন ও যৌতুকের ঠাকা দাবি করে আসছিল। এছাড়া তারা উচ্চবংশ ও নিন্মবংশের কারনে এই প্রেমের বিয়েটি ভালভাবে গ্রহন করতে পারেনি স্বামীর পরিবার। এরই জেরে দীর্ঘদিন দ্বন্দ্ব চলে আসছিল।

নিহতের মা শেফালী বাড়ৈ জানায়, আমার মেয়ের স্বামীর বাড়ির লোকজন একলক্ষ টাকা যৌতুকের জন্য মাঝে মধ্যে চাপ ও উচ্চবংশ ও নিন্মবংশের কারনে এই প্রেমের বিয়েটি নিয়ে মাঝে মধ্যে ঝগড়া হতো। এই কারনেই আমার মেয়ে আত্মহত্যা করেছে।

অভিযুক্ত স্বামী পার্থ চক্রবর্তী তার বিরুদ্ধে অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি তিন লক্ষটাকা দেনা আছি। তাই এক লক্ষ টাকা আমার শাশুরী আমাকে এমনিতেই দিতে চেয়েছিল।

রাজৈর থানার ওসি মোঃ আলমগীর হোসেন জানান, এ ঘটনায় নিহতের স্বামী পার্থকে আটক করা হয়েছে। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।

বার্তাবাজার/এম আই