মোহাম্মদ শরিফুল আলম চৌধুরী, কুমিল্লা : কুমিল্লা দেবীদ্বারে এক ভণ্ড পীরের আস্তানায় ধর্ষণের শিকার হয়েছে সাত বছরের এক শিশু। নির্যাতনের শিকার শিশুটির পরিবারের অভিযোগ, ঘটনার পর এক সপ্তাহ পার হলেও এখনও মামলায় অভিযুক্ত ভণ্ড পীর ইকবালকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
এলাকার প্রভাবশালী একটি চক্র ভুক্তভোগীর পরিবারকে মামলা না করে নিজেরাই মীমাংসা করতে চাপ দিয়ে আসছিল বলে অভিযোগ মামলার বাদী শিশুটির মায়ের।
মামলার বিবরণে বলা হয়, গত ২ জুন দুপুর ১২টার দিকে দেবিদ্বার উপজেলার ফতেহাবাদ ইউনিয়নের সাইচাপাড়া গ্রামের মৃত শরাফত আলীর ছেলে ইকবাল শাহ স্থানীয় একটি কিন্ডারগার্টেনের দ্বিতীয় শ্রেণির ওই ছাত্রীকে লিচু দেয়ার কথা বলে তার আস্তানায় নিয়ে ধর্ষণ করে। পরে শিশুটি বাড়িতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়লে তার পরিবার চিকিৎসকের নিকট নিয়ে যায়।
ভুক্তভোগীর পরিবারের অভিযোগ, এ বিষয়ে সেদিন রাতেই মামলা করতে চাইলেও স্থানীয় একটি প্রভাবশালী চক্রের চাপের কারণে তা করতে বিলম্ব হয়। মামলা না করে স্থানীয়ভাবে মীমাংসা করতে নানাভাবে তারা চাপ দিয়ে আসছিল।
পরে ৬ জুন রাতে দেবীদ্বার থানায় মামলা দায়ের করেন শিশুটির মা।
স্থানীয়রা জানায়, হঠাৎ একদিন নিজেকে পীর দাবি করে বিশ বছর ধরে নিজের বাড়িতে ‘সাইচাপাড়া দরবার শরীফ’ নামে আস্তানা তৈরি করে মানুষের সাথে প্রতারণা করে আসছিলেন ইকবাল শাহ।
বাড়িতে প্রায়ই গাঁজার আসর বসাতেন তিনি। এ ছাড়া ওরসের নামে নারীদের নিয়ে অসামাজিক কাজে লিপ্ত হতেন। তার এসব কাজে সহায়তা করত স্থানীয় একটি প্রভাবশালী চক্র। তাদের কারণেই ভণ্ড পীর ইকবালের অসামাজিক কর্মকাণ্ডে কেউ প্রতিবাদ করার সাহস করত না।
এ ঘটনায় পর থেকে নিজের আস্তানা, এমনকি এলাকা থেকেও হাওয়া হয়ে গিয়েছেন ইকবাল শাহ। তার মোবাইল ফোন নম্বরে একাধিকবার ফোন করলেও সেটি বন্ধ রয়েছে বলে যোগাযোগ করা যায়নি।
শনিবার সন্ধ্যায় দেবীদ্বার থানার পরিদর্শক (তদন্ত) খাদেমুল বাহার বলেন, ‘ডাক্তারি পরীক্ষায় শিশুটিকে ধর্ষণের আলামত মিলেছে। আস্তানা ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ায় ওই পীরকে গ্রেপ্তার করা যাচ্ছে না।’
তবে এ বিষয়ে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।