আসন্ন উপজেলা নির্বাচনের তফসিল ঘোষনার পর টেকনাফ উপজেলায় সম্ভাব্য এক প্রার্থীর পক্ষে প্রকাশ্যে মাঠে নেমেছেন সাবেক সাংসদ আব্দুর রহমান বদি। এই পর্যন্ত আওয়ামীলীগ সমর্থিত দুই প্রার্থী ছাড়া আন্য কোন প্রার্থীর নাম গুঞ্জন শুনা যাচ্ছে না। তাদের মধ্যে একজন বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান নূরুল আলম অপরজন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জাফর আহমদ। এদের মধ্যে এক জনকে বদির নিজস্ব প্রার্থী ঘোষনার পর শুরু হয়েছে নানান গুঞ্জন।

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সূত্র অনুযায়ী ৪ ধাপে অনুষ্টিত হবে উপজেলা নির্বাচন। প্রথম ধাপের ভোট ৮ মে, দ্বিতীয় ধাপের ভোট ২১ মে, তৃতীয় ধাপের ভোট ২৯ মে এবং চতুর্থ ধাপের ভোট হবে ৫ জুন। তৎমধ্যে কক্সবাজার জেলার টেকনাফ উপজেলা নির্বাচন অনুষ্টিত হবে তৃতীয় ধাপে।

বুধবার (৩ এপ্রিল) টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী আয়োজিত ইফতার মাহফিলে উখিয়া-টেকনাফে সাবেক সাংসদ আব্দুর রহমান বদি জাফর আহমদকে আনুষ্টানিক ভাবে নিজের প্রার্থী ঘোষনা করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন হ্নীলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী, সাবরাং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নূর হোসেন ও শামলাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন খোকন, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব মোর্শেদ, সম্ভাব্য প্রার্থী জাফর আহমদ, সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মৌলভী রফিক ও আওয়ামীলীগ নেতা সোনা আলী প্রমূখ।

বদি তার বক্তব্যে চেয়ারম্যান নূর হোসেন ও চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেনের বরাত দিয়ে বলেন, মাহবুব মোর্শেদ যদি তার শ্বশুর জাফর আহমদের পক্ষে প্রচারনায় আংশ গ্রহন করলে এই দুই চেয়ারম্যান জাফর আহমদের পক্ষে নির্বাচন করবেন। ইফতার মাহফিলে আসার আগে চেয়ারম্যান নূর হোসেন ও চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেনের সাথে এমন আলোচনা হয়েছে বলে জানান। এছাড়াও সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমানকে জাফর আহমদের পক্ষে নির্বাচনে মাঠে নামানোর জন্য তার শ্বশুর সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শফিক মিয়ার সাথে বথা বলবেন বলেও জানান।

বক্তব্যে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব মোর্শেদ তার শ্বশুর জাফর আহমদের পক্ষে নির্বাচন করার ঘোষনা দেন।

বদির এমন বক্তব্যের পর সচেতন নাগরিক সমাজ প্রতিনিধিদের কাছে মন্তব্য জানতে চাওয়া হলে তারা জানান, যেহেতু উখিয়া-টেকনাফ আসনে বদির শক্ত ভোট ব্যাংক রয়েছে, সেহেতু বদি তার ঘোষনায় অটল থাকলে জাফর আহমদের পাল্লা ভারী হবে।

তারা বলেন, জাফর আহমদ যেহেতু বিএনপি থেকে আওয়ামীলীগে অনুপ্রবেশকারী সেহেতু তার প্রতি দলীয় নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের সমর্থন নাম মাত্র। আওয়ামী রাজনীতি করলেও তার সাথে এখনো বিএনপির একটি অংশের সাথে লিয়াজো বেশ গভীর। সুতরাং বিএনপির কোন প্রার্থী যদি নির্বাচনে অংশগ্রহন না করে বিএনপির কিছু ভোট তার পক্ষে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

তারা আরো বলেন, বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান নুরুল আলম উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও তার বড় ভাই উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি। দ্বীর্ঘ দিন রাজনীতির মাঠে থাকায় তার অসংখ্য অনুগত নেতাকর্মী ও সমর্থক রয়েছে। সুতরাং তাকেও এতো বেশী দূর্বল ভাবার কোন সুযোগ নেই।

অনেকের ধারণা, এতো দিন উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব মোর্শেদ উপজেলা চেয়ারম্যান আলম ও তার বড় ভাই সভাপতি নুরুল বশরের সাথে লিয়াজো করে দলের সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন। গত উপজেলা নির্বাচনে তার বাবা মোহাম্মদ আলী চেয়ারম্যান নুরুল আলমের হাতে পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে আলমের বিপক্ষে অবস্থানের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।