মাথায় হেলমেট, হাতে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র সহ ৩০-৪০ জনের একটি দল মোটরসাইকেল যোগে বাজারের এসে থামেন। গভীর রাত, কিছু বুঝে উঠার আগেই একটি নির্মানাধীন ভবন ভেঙ্গে চুরমার করে দেন। বড় বড় হ্যামার ও হাতুড়ির আঘাতে মুহূর্তে ভেঙ্গে মাটির সাথে মিশে যায় ছাদ পর্যন্ত নির্মাণ করা ভবনটি। হাতুড়ি ও হ্যামারের আঘাতে ভবন ভাঙার বিকট আওয়াজে সবাই ঘুম থেকে জেগে উঠেন।

বাজারের পাশে বসবাস করেন দোকানের মালিক। ভবন ভাংচুরের আওয়াজ শুনে সবার মত ছুটে আসেন দোকানের মালিক ও পরিবারের সদস্যরা। অস্ত্রের ভয়ে পুরুষ সদস্যরা পালিয়ে গেলে পিটিয়ে আহত করা হয় পরিবারের মহিলা তিন সদস্যকে। পরে আহত তিনজনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। লোহমার্ষক এই ঘটনাটি ঘটে নোয়াখালী হাতিয়ার জাহাজমারা ইউনিয়নের সেন্টার বাজারে। এই ঘটনায় সোমবার রাতে হাতিয়া থানায় একটি মামলা হয়েছে। ভাংচুর করা ভবনের মালিক সেন্টার বাজারের প্রবীন ব্যবসায়ী হাজী আলী আহাম্মদ বাদী হয়ে এই মামলা করেন।

হাজী আলী আহাম্মদ জানান, এরা ভাড়াটে সন্ত্রাসী। সবার সাথে অস্ত্র ছিল। আমিও আমার ছেলেরা আওয়াজ শুনে এগিয়ে এলেও অস্ত্রের মূখে দাড়াতে পারেনি। তারা আমাদেরকে প্রানে মারার জন্য এগিয়ে আসলে আমরা দৌড়ে কোনরকম প্রান রক্ষা পায়। কিন্তু সন্ত্রাসীরা আমার ছেলের বৌ ও আমার স্ত্রীকে পিটিয়ে আহত করে। ঘটনার সময় জাহাজমারা পুলিশকে বার বার ফোন করেও কোন সহযোগীতা পাওয়া যায় নি। পরে ৯৯৯ এ ফোন দিলে পুলিশ আসে। এর আগে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়।

এর আগে রোববার রাতে এই ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় তিনি তার ভাই ইসমাইল সহ বাজার কমিটির দায়িত্বশীল অনেকে জড়িত আছেন বলে দাবি করেন ভবনের মালিক হাজী আলী আহাম্মদ।
স্থানীয়রা জানান, হাজী আলী আহাম্মদের সাথে তার ভাইদের জমির মালিকানা নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। একাধিকবার তাদের মালিকানা নিয়ে গ্রাম্য সালিশ বৈঠক হয়। নতুন এই ভবন ভাংচুরের ঘটনা পূর্বের বিরোধের কারনে ঘটেছে বলে অনেকে ধারনা করছেন।

বাজারের নৈশ প্রহরীরর দায়িত্বে থাকা জাহের উদ্দিন জানান, ৩০-৪০ জনের একটি দল হঠাৎকরে বাজারে ঢুকে পড়ে। সবাই হেলমেট ও মূখোশ পরা ছিল। কেউ ভয়ে তাদের সামনে আসতে সাহস পায়নি। দেশীয় অস্ত্রের পাশাপাশি আগ্নেয়াস্ত্র ছিল তাদের কাছে। সম্পূর্ণ ভবন ভেঙে ফেলা পর্যন্ত তারা বাজারেই অবস্থান করেন। সন্ত্রাসীরা চলে যাওয়ার পর পুলিশ আসেন।

এ ব্যাপারে জাহাজমারা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ দেবাশীষ সরকার বলেন, আমরা ঘটনাটি শুনার পরপরই ঘটনাস্থলে যায়। এর আগে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। এই বিষয়ে থানায় মামলা হয়েছে। আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে।