কিশোর গ্যাং সদস্যদের অভিভাবকদের বিরুদ্ধে সামাজিকভাবে ব্যবস্থা নিতে হবে বলে জানিয়েছেন সাভার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম রাজীব। সোমবার (১৮ মার্চ) রাতে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কিশোর গ্যাং হামলায় আহত যুগান্তরের নিজস্ব প্রতিবেদক মতিউর রহমান ভান্ডারীর পুত্রসহ দুই শিক্ষার্থীর সার্বিক খোঁজখবর নিতে গিয়ে গণমাধ্যমকে তিনি একথা বলেন।

মঞ্জুরুল আলম রাজীব বলেন, যদিও আইনগতভাবে কিশোর গ্যাং সদস্যদের অভিভাবকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া যায় না; কিন্তু সামাজিকভাবে তো যায়? সামাজিকভাবেই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হলে এলাকার অভিভাবকগণ ও সচেতন হবে এটা প্রতিরোধে। অভিভাবকরা এক্ষেত্রে তাদের দায় এড়াতে পারেন না।

রাজীব জানান, কারও বাচ্চা কিংবা কারও পরিবারই নিরাপদ না। আমাদের বাচ্ছারাও স্কুলে যায়, যদি বাসায় বসে আমরা এরকম একটা দু:সংবাদ শুনি সেটা কেমন লাগবে? ওর (আহত শিক্ষার্থী) জায়গায় নিজের বাচ্চাকে দাঁড় করিয়ে ভাবতে হবে সবাইকে। এই অবস্থার উত্তরণে আসলে পারিবারিকভাবেই উদ্যোগ নিতে হবে।

স্কুল কর্তৃপক্ষ ও এই হামলার বিষয়ে তাদের দায় এড়াতে পারে না উল্লেখ করে রাজীব বলেন, সকল নাগরিকদের ও এগিয়ে আসতে হবে এবং প্রতিটি মহল্লায় মহল্লায় কিশোর গ্যাং এর বিরুদ্ধে একটা প্রতিরোধ গড়ে তোলা যেতে পারে। মসজিদ ভিত্তিক প্রতিরোধ গড়া যেতে পারে।

একটা দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করতে না পারলে কিশোর গ্যাং এর এই বেপরোয়া প্রবণতা বন্ধ করা যাবে না উল্লেখ করে সাভার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জানান, দেশে একটা প্রচলিত আইন আছে যেটা কিশোরদের অপরাধের ব্যাপারে একটি শিথিল।এই আইন সংশোধন করার সময় এসে গেছে। আমি আমার জায়গা থেকে এটা সংশোধন করতে সরকারের প্রতি অনুরোধ করতে পারি।

কিশোর গ্যাং সদস্যদেরকে যারা আশ্রয় ও প্রশ্রয় দিয়ে এদের সাথে সংশ্লিষ্ট তাদের সকলের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে জানিয়ে সবাইকে যৌথভাবে এদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহবান জানান সাভার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

প্রসঙ্গত, গতকাল রোববার (১৭ মার্চ) সন্ধা সাড়ে ৭টার দিকে ঢাকা আরিচা মহাসড়কের রেডিও কলোনি বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এই হামলার ঘটনা ঘটে। পূর্ব শত্রুতার জের ধরে সংঘটিত ওই হামলায় দৈনিক যুগান্তরের নিজস্ব প্রতিবেদক মতিউর রহমান ভান্ডারীর পুত্র জিসান প্রামাণিক (১৫) ও সদর ইউনিয়নের কলমা এলাকার কামরুল হোসেনের পুত্র সিয়াম রাজা (১৫) গুরুতর আহত হন। হামলার শিকার ওই দুই শিক্ষার্থীকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

আরও উল্লেখ্য, আহত জিসান প্রামাণিক বাংলাদেশ লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (বিপিএটিসি) স্কুল এন্ড কলেজের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী। আর সিয়াম রাজা কলমা ওয়াজ আলী মডেল স্কুলের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী। অপরদিকে, হামলাকারীরা সবাই কিশোর গ্যাং ‘ভাই-ব্রাদার’ গ্রুপের সদস্য বলে জানা গেছে।

এদিকে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এই ঘটনার ৫ ঘণ্টার মধ্যে মূল হোতাসহ ৪ জনকে গ্রেফতার করে প্রাপ্তবয়স্ক দুইজনকে দুই দিনের রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করেছে।