সাম্প্রতিক ঝিনেদা টিভির ১৯ মিনিটের একটি লাইভ ভিডিওতে দেখা যায় রিজভী ইয়ামিন এবং তার মাদক সিন্ডিকেটের সদস্যরা মিলে মাদকাসক্ত অবস্থায় উন্মাদ হয়ে নানা ধরনের অসংলগ্ন কথাবার্তা বলছে। ভিডিওটি গতকাল (মার্চ ৭) রাত ১১টায় প্রকাশিত হলেও তা পরদিন (মার্চ ৮) ভোরে ঝিনেদা টিভি পেজ থেকে সরিয়ে ফেলা হয়।

সারাদিন বিষয়টি নিয়ে নেট পাড়ায় নানা ধরনের গুঞ্জন ও আলোচনা হলেও এ বিষয়ে রিজভী ইয়ামিনের কোনো মতামত পাওয়া যায়নি এমনকি তার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও সংযোগ পাওয়া যায়নি। বিভিন্ন মাধ্যম থেকে এবং প্রতিষ্ঠানের সাবেক কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করা হলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জানায় রিজভী ইয়ামিন দীর্ঘদিন মাদক সেবন এবং ব্যবসায়ের সাথে জড়িত। একই সাথে শহরের স্বনামধন্য পরিবারের মেয়েদের সাথে তার অবাধ মেলামেশা পরিশেষে তাদেরকে ব্লাকমেইল করে অর্থ আত্মসাধ করে আসছে।

শহরের স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানের শিক্ষিকা থেকে শুরু করে নানা পেশার নারীদের সাথে তিনি এই ঘটনা ঘটিয়ে আসছেন। জানা যায় প্রতিষ্ঠানে তিনি প্রায় সময় অনুপস্থিত থাকে। মহেশপুর থেকে মাদকের বড় চালান ঝিনেদা টিভির স্টিকার লাগানো গাড়িতে করে রাজধানী সহ আশপাশের জেলাগুলোতে পাচার করে আসছেন এই রিজভী ইয়ামিন। বিস্তারিত অনুসন্ধান করার পরে আমাদের কাছে লোমহর্ষক অনেক তথ্য চলে আসে।

২০২২ সালের সর্বশেষ ডিজিটাল জনশুমারি অনুসারে, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৯২% এর বেশি মুসলমান। যা সংখ্যায় প্রায় ১৪৮.৬ মিলিয়ন (১৪.৮৬ কোটি), বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম মুসলমান জন-অধ্যুষিত দেশের নাম বাংলাদেশ।

সেখানে ঝিনাইদহ জেলার মোট জনসংখ্যার ৮৮.০৭% মুসলমান। কোনো ধর্মীয় হাঙ্গামা, রাহাজানি ছাড়াই এই জনপদের মানুষ দীর্ঘদিন নিজেদের মধ্যে ভাতৃত্ব বজায় রেখেছে। এই জনপদে কোনো কোনো ক্ষেত্রে দলীয় মতাদর্শের কোন্দল থাকলেও কোনো ধর্মীয় মতাদর্শের কোন্দল নেই। এই জনপদের মানুষ সবথেকে সুন্দর এব সুখী জীবনযাপনে অভ্যস্ত। বিশেষকরে এই জনপদের আপামর ধর্মপ্রাণ মুসলমান জনগোষ্ঠী এতকাল খুবই সুন্দর এবং স্বাভাবিক জীবনযাপন করে আসছিলো যা হঠাৎ করেই বিষাক্ত করে দেয়ার ভয়াবহ অপচেষ্টা শুরু করেছে হাতে গোনা কয়েকজন মানুষ (ঝিনেদা টিভি), একটি ভন্ড সংগঠন (হেযবুত তওহীদ)  এবং শহরের কিছু ভ্রান্ত মানুষ।

ধর্মকে টুকরো টুকরো করতে, মুসলমানদের মধ্যে বিভ্রান্তি ও বিবাদ ছড়াতে, ফেতনা এবং যিনাকে হালাল করার জন্য, অপরাধ এবং নৈরাজ্য বৃদ্ধি করতে, নারী পুরুষের অবাধ মেলামেশাকে প্রকাশ্যে আনার জন্য নিবন্ধবিহীন, অবৈধ, সামান্য একটা ফেইসবুক পেজ “ঝিনেদা টিভি”র অন্তরালে একটু একটু করে বিষাক্ত ভয়াল থাবা বসাচ্ছে হেযবুত তওহীদ নামক একটি সংগঠন। এই সংগঠনের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তে লোকবল নিয়োগ করা হয়েছে ঝিনেদা টিভিতে। এখানে যারা কাজ করে তাদের অধিকাংশ অসুস্থ এবং মানুষিক বিকারগ্রস্ত যা ইতিমধ্যে তাদের ভিডিও গুলো দেখলে বোঝা যায়।

একটি সংগঠন বা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা লাভের সাথে সাথে তাদের লক্ষ্যে, উদ্দেশ্য, মূলনীতি, কর্মসূচি এসকল বিষয়ে স্পষ্ট একটি ধারণা নিয়েই কার্যক্রম করে। হেযবুত তওহীদ তাদের ৭টি মূলনীতির ২য় মূলনীতিতে বলেছে “হেযবুত তওহীদের কোন গোপন কার্যক্রম থাকবে না, সবকিছু হবে প্রকাশ যোগ্য এবং দিনের আলোর মত পরিষ্কার।” কিন্তু ঝিনেদা শহরে তাদের কার্যক্রম রাতের কালো অন্ধকারের মতো। সারা দেশের ন্যায় এই শহরেও তাদের লক্ষ্যে, উদ্দেশ্য, মূলনীতি, কর্মসূচি এসকল বিষয়ে অস্পষ্টতা! তাহলে কি এই সংগঠনের একটাই লক্ষ্য মুসলমানদেরকে ভাগ করে ফেলা? একটাই উদ্দেশ্যে ইসলামকে বিভ্রান্তির ছোড়া দিয়ে খন্ড খন্ড করা? এদের এজেন্ডা কি? তাদের আসল উদ্দেশ্য কি? তাদের কর্মকান্ড কি? তাদের অফিসে যে মিটিং গুলো হয় সেগুলো কাদের মিটিং? যে লোকগুলোর আনাগোনা দেখা যায় তারা কারা?

ঝিনেদা টিভির রিজভী ইয়ামিন এই শহরের গুনী এবং সুশীল মানুষকে ধোকা দিয়ে দিনের পর দিন হেযবুত তওহীদে ফান্ডিং করে আসছে। রিজভী এতোটাই ধুরন্ধর যে কেন্দ্র থেকে হেযবুত তওহীদ এর নেতাদেরকে নিয়ে এসে সরাসরি তাদের হাত দিয়ে এই প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে আসছে অথচ কেউ কিছুই বলতে বা করতে পারছে না। প্রশাসনিক, রাজনৈতিক এবং সুশীল সমাজের মানুষকে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে এনে এবং কাভারেজ দিয়ে সাধারণ মানুষকে বোঝানোর চেষ্টা করে ঝিনেদা টিভি অনেক ক্ষমতাধর প্রতিষ্ঠান এবং মানুষের পাশে দাঁড়ানোর নাটক করে যে সিমপ্যাথি আর ইমোশন কাজে লাগিয়ে প্রতিনিয়তই শত শত মানুষকে গোপনে হেযবুত তওহীদের সদস্য বানিয়ে কেন্দ্রের উদ্দেশ্য সফল করে যাচ্ছে।

কেউ বাধা দেয়ার চেষ্টা করলে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা নিউজ প্রচার এবং মামলার হুমকি দেয়া হচ্ছে। আর এই বিষয়গুলো সরাসরি হ্যান্ডেল করছে কেন্দ্রীয় আমির মফিজুল ইসলাম ওরফে মফিজ। তার নেতৃত্বে শেখ সজীব সহ ঝিনেদা টিভির প্রতিটা সাংবাদিক ব্যাপকভাবে চাদাবাজি করে যাচ্ছে শহরের আনাচে কানাচে। সাধারণ মানুষ ওদের টিভিতে এমপি, চেয়ারম্যান, এস পি, ডিসি, মেয়র এবং বড় বড় মানুষকে প্রতিনিয়ত দেখছে ফলে ওদেরকে ভয় পাচ্ছে। আর এই ভয়কে কাজে লাগিয়ে ওরা নির্বিশেষে লাখ লাখ টাকার চাদাবাজি চালাচ্ছে এই জনপদে। প্রতিষ্ঠানের কোনো কর্মী এ বিষয়ে মুখ খুলছে না কোথাও। কিসের ভয়ে? কিসের লোভে?

রাজনৈতিক, সামাজিক, প্রশাসনিক এবং ক্ষমতাসীন মানুষের চোখে ধুলা দিয়ে তাদেরকে ঢাল বানিয়ে রিজভী এবং তার দলবল যে অপকর্ম চালাচ্ছে তা এই শহরের ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এই বিষয়ে সকলকে আরও সচেতন হতে হবে। ঝিনেদা টিভি শহরের আনাচে কানাচে প্রতিটা স্থানে নিউজ করে দেয়ার নামে চাদাবাজি এবং হুমকি ধামকি চালিয়ে আসছে দীর্ঘদিন। মানুষ ভয়ে মুখ খুলতে পারছে না কিন্তু সাম্প্রতিক ঝিনেদা টিভি থেকে চাকুরী ছেড়ে আসা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জানিয়েছেন যে প্রতিষ্ঠানের কয়েকজন ব্যক্তি ছাড়া বাকি সবাই গত ৪-৫ মাস একটি টাকাও বেতন পাইনা। তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে ওরা যে লাখ লাখ টাকা চাদাবাজি করে সে টাকা যায় কোথায়? উত্তর টা নিশ্চয়ই আপনার মাথায় এসে গিয়েছে, হ্যা সঠিক – সমস্ত টাকা জমা হয় হেযবুত তওহীদের ফান্ডে যা খরচ করা হয় নতুন সদস্য সংগ্রহ এবং তাদেরকে প্রলোভন দেখানোর কাজে। এধরনের তথ্য এবং আরও অনেক ধরনের প্রমাণ আছে।

হেযবুত তওহীদ সারা দেশে গনমাধ্যম তৈরী করে জালের মতো প্রচার-প্রচারনায় নেমেছে। অসংখ্য বই-পুস্তক, লিফলেট, প্রত্যন্ত অঞ্চলে তাদের কর্মী বাহিনী বিতরণ করে চলেছে । সব ধরণের সংগঠন এমন কি মাঠ পর্যায়ের প্রেসক্লাবগুলোও তারা এসবে ছেয়ে দিচ্ছে। আর ঢাকায় একুশের বই মেলা থেকে শুরু করে গ্রামাঞ্চলের মেলাতেও তাদের প্রচার কার্যক্রম চোখে পড়ে।

তাহলে ঝিনেদা শহরের গুণী মানুষ বা প্রশাসন কেন ওদের পাশে? কারণ এদের এই সুবিশাল চক্রান্তের বিষয়ে কেউই ওয়াকিবহাল নয়! এরা ক্ষমতা এবং ক্ষমতাশালী মানু‌ষকে ব্যবহার করে চূড়ান্ত স্বার্থ হাসিলের অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

ঝিনাইদহ জেলার এমন কোনো এমপি, চেয়ারম্যান, মেয়র, মেম্বার, কমিশনার, সরকারি – বেসরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা নেই যাদের কাছে চাদাবাজি করেনি এরা! একটি সামান্য ফেইসবুক পেজের এত ক্ষমতা কোথা থেকে আসে? ক্ষমতা আসে হেযবুত তওহীদ থেকে এবং তাদের পাঠানো আমির মফিজ এর কাছ থেকে। আজই আপনি খোজ নেন আপনার এলাকার জনপ্রতিনিধিদের কাছে যে সে কি নিয়মিত মাসোহারা দিচ্ছে কিনা? তাদেরকে জিজ্ঞেস করুন কেন তারা এভাবে চাদা দিচ্ছে? কিসের ভয়ে? কোন চাপে? জিজ্ঞেস করুন আজকেই। এই শহরের হাজার হাজার মুসলমান ধর্মপ্রাণ মানুষের আবেগকে কাজে লাগিয়ে যে ক্ষমতা ঝিনেদা টিভি অর্জন করেছে তা কি শেষ অব্দি ধর্মকে ভাগ করে ফেলার অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার হবে?

কেন রিজভী ইয়ামিন খুলনা, সাতক্ষীরা, ময়মনসিংহ, যশোর, কুষ্টিয়া থেকে লোকজন নিয়ে এসে এই শহরে সাংবাদিকতা করায়? কোন ক্ষমতাবলে এবং কার অনুমোদনে এগুলো করছে সে? কেন সে হেযবুত তওহীদ প্রতিষ্ঠা করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে?

হেযবুত তওহীদ সম্পর্কে জানেন না যারা তারা উইকিপিডিয়া, ইউটিউব, গুগল করে বিস্তারিত জানতে পারবেন। এটি একটি ধর্মভিত্তিক সংগঠন যারা জঙ্গি সম্পৃক্ততার অভিযোগে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কালো তালিকাভুক্ত।

অবিলম্বে দেশ ও ইসলাম রক্ষায় হেজবুত তাওহীদ নিষিদ্ধ করুন। বিতর্কিত হেজবুত তাওহীদ এদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানকে অমুসলিম বলে কটাক্ষ করছে। তাদের ভাষ্য অনুযায়ী তারা ব্যতিত এদেশে সবাই নাকি অমুসলিম। দেশ ও ইসলাম রক্ষায় হেজবুত তাওহীদ নিষিদ্ধ করুন।

তথ্যসুত্রঃ

১) https://shorturl.at/stxWX
২) https://shorturl.at/gtIMP
৩) https://shorturl.at/cvFNS
৪) https://shorturl.at/chijB
৫) https://shorturl.at/cwTU3
৬) https://rb.gy/vtt7k3