শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার পদ্মাসেতু ক্যান্টনমেন্ট – গণিরমোড় সংযোগ সড়কে এক সপ্তাহ পার না হতেই উঠে যাচ্ছে রাস্তার কার্পেটিং। ফলে সংস্কার শেষ না হতেই দুর্ভোগের শিকার হয়েছেন রাস্তায় চলাচলকারী যানবাহন ও পথচারীরা। এলাকাবাসীর অভিযোগ সড়কটি সংস্কারের সময় নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

জেলা প্রকৌশলী অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এই সড়ক সংস্কারে ৪ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে । সড়কটির সংস্কার কাজ করছেন মোহাম্মদ ইউনুস এন্ড ব্রাদার্স প্রাইভেট লি. এর পক্ষের প্রতিনিধি শরীয়তপুর জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ন আহবায়কের রাসেদ উজ্জামান। এছাড়াও এ প্রকল্পের ব্যয় হিসেবে এপর্যন্ত ১ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা উঠিয়ে নিয়েছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান।

স্থানীয়দের অভিযোগ ও সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সড়কটি জাজিরা ক্যান্টনমেন্ট খান মার্কেট থেকে গনির মোড় এলাকা পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে কার্পেটিং উঠে গেছে। যেসব স্থানে কার্পেটিং উঠে গেছে সেসব স্থানে উপজেলা প্রকৌশলী ও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের উপস্থিতিতে নতুন করে আবারও কার্পেটিং করা হচ্ছে।

এ সময় স্থানীয় বাসিন্দা মনির হোসেন নামে একজন বলেন, ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান সড়কটির কার্পেটিং করার সময় পুরনো ইট খোয়া ও নিম্নমানের বিটুমিন ব্যবহার করেছেন। এ ছাড়াও সড়কটি সংস্কারের সময় সঠিকভাবে রোলিং ও মজবুতিকরণ না করে তড়িঘরি করে কাজ শেষ করেছে। ফলে সপ্তাহ না যেতেই কার্পেটিং উঠে গিয়ে আগের মতো খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে।

মো: আশিক নামে স্থানীয় বাসিন্দা অভিযোগ করে বলেন, ঠিকাদার এখানে ১০০ টাকার জায়গায় ৯০ টাকাই খেয়ে ফেলেছেন। তাই এই সড়কটির কাজ শেষ না হতেই এমন বেহাল অবস্থা হয়েছে। কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন সরকারের এমন দুর্নাম করবেন না। দ্রুত এই সড়কটি সঠিকভাবে সংস্কারের ব্যবস্থা করুন। এবং এই ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেন।

স্থানীয় ভ্যান চালক শাহ আলম বলেন, সংস্কার কাজ শেষ হওয়ার ৭দিন পার না হতেই সড়কের কার্পেটিং উঠে যাচ্ছে। ৬ মাস পর সড়কটি ফের কি অবস্থা হবে তা আমার ধারনা নেই । এখন বুঝলাম সরকারের অর্থ ব্যয় হচ্ছে ঠিকই কিন্তু সঠিকভাবে কাজ হচ্ছে না।

এবিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি জেলা ছাত্রলীগে নেতা রাশেদ উজ্জামানের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী কাজ করা হয়েছে। এখানে কোনো অনিয়ম হয়নি। ১ সপ্তাহের মধ্যেই কার্পেটিং উঠে গেলো কেন জানতে তাইলে তিনি সাংবাদিকদের নিউজ করতে নিষেধ করেন এবং সাংবাদিকদের উপর চড়াও হন।

জাজিরা উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ ইমন মোল্লার কাছে জানতে চাইলে তিনি কাজে গাফিলতির বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বলেন, যেসব জায়গায় কার্পেটিং উঠে গেছে তা ঠিক করে দেওয়া হবে। নির্বাহী প্রকৌশলী স্যারকে বিষয়টি অবগত করা হয়েছে।

শরীয়তপুর জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম রাফেউল ইসলাম বলেন, বিষয়টি শুনে আমি নিজেই সড়কটি পরিদর্শন করেছি। ঐ সড়কের ব্যবহৃত বিটুমিন আমরা ল্যাবে পরীক্ষা করে দেখেছি তা ঠিক আছে। এখন যে সমস্যাটি হয়েছে তা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনে যে কার্পেটিং করা হয়ে তা উঠিয়ে সড়কের একপাশ বন্ধ করে নতুন করে আবার কার্পেটিংয়ের ব্যবস্থা করবো।