পাকিস্তানের সদ্যসমাপ্ত সাধারণ নির্বাচনে চমক দেখিয়েছে ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)। যদিও আইনি প্রতিবন্ধকতার কারণে পিটিআই সমর্থিত প্রার্থীরা নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে। সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, সবাইকে ছাড়িয়ে ৯৯ আসন পেয়েছে দলটি। এরপরও নওয়াজ শরিফের পাকিস্তান মুসলিম লীগ, বিলাওয়াল ভুট্টোর পাকিস্তান পিপলস পার্টির জোট গঠনে একমত হওয়ার ঘোষণায় বড় ধাক্কা খায় পিটিআই নেতারা। কিন্তু শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) দুপুর গড়াতেই পালে হাওয়া পেয়েছে দলটি।

এদিন দাঙ্গা সংশ্লিষ্ট ১২টি মামলা এবং সেনাবাহিনীর সদর দপ্তর ও সেনা জাদুঘরে হামলা সংশ্লিষ্ট দুটি মামলায় পিটিআই প্রধান ইমরান খানকে জামিন দিয়েছেন আদালত। ১৩টি মামলায় জামিন পেয়েছেন ইমরান সরকারের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পিটিআইয়ের নেতা শাহ মাহমুদ কুরেশিও। এতেই নতুন করে উজ্জীবিত হয়ে উঠেছে দলের নেতারা। ক্ষমতা পুনরুদ্ধারে অন্যান্য দলের সঙ্গে জোট নিয়ে আলোচনার জন্য বৈঠক ডেকেছে পিটিআই। বৈঠকে সাবেক ক্ষমতাসীন দল ও অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জোট গঠনের বিষয়ে আলোচনা করা হবে বলে জানা গেছে।

পাকিস্তানি সংবাদ মাধ্যম জিও টিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, বৈঠকে পিটিআই ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার গহর খান, আসাদ কায়সার, আলী মুহাম্মদ খান এবং অন্যরা যোগ দেবেন। নতুন কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক সরকার গঠন নিয়ে আলোচনা হবে সেখানে।

এর আগে নতুন কেন্দ্র সরকার গঠনের জন্য পিপিপি এবং পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ পিএমএল-এনের সঙ্গে জোট গঠনের বিষয়টি অস্বীকার করে দলটি। ব্যারিস্টার গহর বলেন, ‘আমরা পিপিপি বা পিএমএল-এনের সঙ্গে যোগাযোগ করছি না।’

তিনি দাবি করেছিলেন, পিটিআই শেষ পর্যন্ত ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির ১৫০টি আসনে জয় পাবে, যা এককভাবে সরকার গঠন করার জন্য যথেষ্ট হবে। পিপিপি বা পিএনএল-এন কারও প্রয়োজন হবে না। আমরা কেন্দ্রে ও পাঞ্জাবে প্রাদেশিক সরকার গঠন করতে যাচ্ছি।’

কিন্তু দেশটির নির্বাচন কমিশন ঘোষিত সবশেষ ফলাফল অনুযায়ী দেখা যাচ্ছে, সরকার গঠনের জন্য কোনো দলই এককভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাচ্ছে না। পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের ২৬৫ আসনে (একটি স্থগিত) ভোটগ্রহণ হয় বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি)। কোনো দলের সরকার গঠনে প্রয়োজন হবে ১৩৪ আসন। নির্বাচনের প্রায় ৪০ ঘণ্টা পার হলেও সব আসনের ফলাফল প্রকাশ করতে পারেনি পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন। ফলে রাতেই জোট সরকার গঠনের ঘোষণা দেন নওয়াজ শরিফ।

সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২৬৫ আসনের মধ্যে এখন পর্যন্ত ২৫২টি আসনের ফল ঘোষণা করেছে কমিশন। এরমধ্যে পিটিআই সমর্থিত প্রার্থীরা পেয়েছেন ৯৯টি আসন। আর নওয়াজ শরিফের মুসলিম লীগ-এন (পিএমএলএন) জয় পেয়েছে ৭৩টি আসনে। বিলাওয়াল ভুট্টোর পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) পেয়েছে ৫৩টি আসন। এছাড়া জমিয়ত উলামা-ই ইসলাম দুটি ও অন্যরা পেয়েছে ৩৩টি আসন।

জানা যায়, ইমরান ও মাহমুদ কুরেশির জামিন আবেদনের শুনানি করেন এটিসির বিচারক মালিক এজাজ আসিফ। আদালত বলেছেন, ইমরানকে গ্রেপ্তার করে রাখার কোনও এখতিয়ার নেই। ৯ মে তারিখের দাঙ্গা সংশ্লিষ্ট মামলায় সব আসামি জামিনে রয়েছেন।

বার্তা বাজার/জে আই