ভারতের অযোধ্যা, কাশী ও মথুরায় প্রাচীন মসজিদ সরিয়ে দিয়ে মন্দির বানানোর যে দীর্ঘ দিনের দাবি হিন্দুত্ববাদীদের, এবারে উত্তরপ্রদেশ রাজ্য বিধানসভায় তারই প্রতিধ্বনি করলেন ওই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও বিজেপি নেতা যোগী আদিত্যনাথ।

অযোধ্যার বাবরি মসজিদ ভেঙে ফেলার পর থেকেই বিশ্ব হিন্দু পরিষদ বা বজরং দলের মতো সংগঠনগুলো স্লোগান দিয়ে আসছে, ‘ইয়ে তো সির্ফ ঝাঁকি হ্যায়, কাশী-মথুরা বাকি হ্যায়!’ যার অর্থ, এটা তো শুধু একটা ধাক্কা ছিল – এরপর আমরা কাশী-মথুরাকে ধরব!

অযোধ্যাতে যেমন বাবরি মসজিদের জায়গায় রামমন্দির বানানোর জন্য আন্দোলন চলছিল, তেমনি কাশী বা বারাণসীতে জ্ঞানবাপী মসজিদ ও লাগোয়া কাশী-বিশ্বনাথ মন্দির এবং মথুরাতে শাহী ইদগাহ মসজিদ ও সংলগ্ন শ্রীকৃষ্ণ জন্মভূমি মন্দির প্রাঙ্গণও ছিল একই রকম বিতর্কিত ধর্মীয় স্থান।

ভারতের এই তিনটি শহরই উত্তরপ্রদেশ রাজ্যে অবস্থিত। এখন ওই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নিজেই ঘোষণা করলেন অযোধ্যার পর কাশী-মথুরাতেও মসজিদের জায়গায় মন্দির গড়ার দাবিতে তার সায় আছে এবং তার সরকার সেই দাবি বাস্তবায়ন করতে চায়।

অযোধ্যা, বারাণসী এবং মথুরার প্রসঙ্গ উত্থাপন করে বুধবার উত্তরপ্রদেশ বিধানসভার বাজেট অধিবেশনে যোগী আদিত্যনাথ বলেন, আমরা মাত্র তিনটি জায়গা চেয়েছি। অন্য জায়গা নিয়ে কোনো সমস্যা হয়নি। কারণ ঈশ্বর অবতীর্ণ হয়েছেন ওই স্থানগুলোতে।

কিছু দিন আগে ভারতের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ বা আর্কিওলজিকাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া (এএসআই) এক রিপোর্টে জানিয়েছে, জ্ঞানবাপী মসজিদের বৈজ্ঞানিক পর্যবেক্ষণ এবং স্থাপত্যের অবশেষ, বৈশিষ্ট্য, নিদর্শন, শিলালিপি, শিল্প ও ভাস্কর্যের অধ্যয়নের উপর ভিত্তি করে বলা যায় বর্তমান কাঠামো নির্মাণের আগে সেখানে একটা হিন্দু মন্দিরের অস্তিত্ব ছিল।

অন্যদিকে, মথুরায় কৃষ্ণ জন্মভূমি মন্দির সংলগ্ন শাহী ইদগাহ মসজিদ ঘিরে বিতর্ক দীর্ঘদিনের। হিন্দু মন্দিরের জমিতে ওই মসজিদ তৈরি হয়েছে এই দাবি জানিয়ে শাহী ইদগাহ অপসারণের জন্য আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে হিন্দু পক্ষ।

আপাতত, তাদের পাখির চোখ যে এখন কাশী এবং মথুরা সে কথাই সরকারি ভাবে জানিয়ে দিয়েছে যোগী আদিত্যনাথের সরকার।

বার্তা বাজার/জে আই