মাদক রয়েছে এমন অভিযোগ তুলে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আকবর হোসেনের বাড়িতে পুলিশের অভিযান চালানোর অভিযোগ উঠেছে। অভিযানে কিছু না পেয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) কামরুল হাসান তার সোর্স ভুট্টুর মাধ্যমে ওই বিএনপি নেতার কাছে মুঠোফোনে ২-৩ লাখ টাকা দাবি করেন এমনটাই অভিযোগ করেন আকবর হোসেন।

বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ৩নং ওয়ার্ডের বাঘমারা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এর আগে গত ৩০ জানুয়ারি বিকেলে তার বাড়িতে সাদা পোশাকে অভিযান চালিয়ে কয়েকলাখ টাকা আত্মসাৎ করা হয়।

এ বিষয়ে বিএনপি নেতা আকবর হোসেন বলেন, আজ দুপুরে সিএনজিযোগে কয়েকজন এসে আমার বাড়িতে প্রবেশ করেন। আমি তখন বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে থেকে তা লক্ষ্য করি। তখন আমি তাদের পরিচয় জানতে দুজন লোক পাঠালে তাদের বলেন, তারা পুলিশের লোক। আমাকে হয়তো রাজনৈতিকভাবে ফাঁসাতে পারছেন না তাই মাদক কিংবা অস্ত্র দিয়ে ফাঁসাতে পারেন সেজন্য আমি ওই দুজনকে বলি পুলিশ কি কি করে তা ভিডিও করে রাখতে। তখন তারা কিছু না পেয়ে তাদের মধ্যে একজন বলে বাসায় একটা পোটলা পাওয়া গেছে। আমি তখন তাড়াতাড়ি বাড়ির ভেতর প্রবেশ করে অভিযানের কারণ জানতে চাই।

পুলিশ বলেন, তাদের কাছে আমার বাড়িতে কিছু রয়েছে এ খবরে তারা অভিযান চালাচ্ছেন। আমি তখন বলি আমার বাসায় অভিযান করতে হলে এলাকার লোকজন, সাংবাদিক নিয়ে অভিযান পরিচালনা করতে হবে। তখন যদি কিছু পান তাহলে আমাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিবেন। সাংবাদিকের কথা বলাতে তারা তাড়াহুড়ো করে চলে যাওয়ার চেষ্টা করেন।

এসময় এলাকার আরও মানুষ জড়ো হলে তারা বের হয়ে বলেন, আপনাদের মানসম্মান নষ্ট করার জন্য কেউ হয়তো এইসব কথা ছড়াচ্ছেন। এসময় পুলিশের আরেকটি টিম ঘটনাস্থলে এসে সবাইকে লাঠিচার্জ করে সরিয়ে দেয়। পরে তারা চলে যাওয়ার পর সোর্স ভুট্টু তাকে মুঠোফোনে বলেন, আমাকে ২-৩ লাখ টাকা দেন। তাহলে স্যারকে (এসআই কামরুল) বলে আমি আপনাকে বাঁচিয়ে দেই। তা না হলে আরও মামলা দিয়ে দিতে পারে আপনার বিরুদ্ধে। আমি তখন তা প্রত্যাখান করে দেই।

এর আগের ঘটনা বর্ণনা করে তিনি বলেন, গত ৩০ জানুয়ারি বিএনপির কালো পতাকা কর্মসূচি ছিল। সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির কর্মসূচি আমার বাড়ির সামনে থেকে শুরু হওয়ার কথা ছিল। এর আগেই ৫০-৬০ জন পুলিশ সেখানে উপস্থিত হলে আমরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পালিয়ে যাই। এরপর সিভিল ড্রেসে ওইদিন বিকেল সাড়ে ৩ টায় কয়েকজন অফিসার আমার বাড়িতে তল্লাশি চালায়। বাসায় তখন শুধু আমার স্ত্রী ও মেয়ে ছিল। আমার বাসায় অস্ত্র রয়েছে এমন অভিযোগ তুলে ব্যাপক খোঁজাখুঁজি করে। পরে কিছু না পেয়ে আমার ছেলে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক রনিকে ফোন দিয়ে বলে তুমি বাসায় আসো, না হলে তোমার আম্মুকে নিয়ে যাবো। পরবর্তীতে রনি বাসায় না গেলে তারা আমার বাসার আলমারি তল্লাশি করে তাতে থাকা ১০-১২ লাখ টাকা থেকে কয়েক লাখ টাকা নিয়ে নেয়।

সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর সিদ্দিক বলেন, মাদক উদ্ধার করতে ওই এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। তবে কোথাও কোনো মাদক পাওয়া যায় নি। অভিযানকালে ওই এলাকার এক বিএনপি নেতা অভিযান করতে আমাদের বাধা দেয়। এ নিয়ে সামান্য তর্কাতর্কির ঘটনা ঘটে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। এ ঘটনায় কেউ আটক বা গ্রেফতার নেই।

বার্তা বাজার/জে আই