বিবাহিত জীবনের একটা বিষয় হলো স্বামীর সবকিছু স্ত্রীর আর স্ত্রীর সবকিছু স্বামীর। এখন স্বামীর টাকা-পয়সার মালিক কি তিনি একা, নাকি এতে কেউ শরিক আছেন? অবশ্যই তার স্ত্রী শরিক আছেন। কারণ, বিবাহের পর স্বামীর জন্য স্ত্রীর সব খরচ বহন করা তার ওপর আবশ্যক। মাসিক যা খরচ লাগে তা অবশ্যই স্ত্রীকে নিজের সম্পদ থেকে দিতে হবে। বর্তমানে অনেকেই স্ত্রীকে মাসিক খরচের টাকা দেন না বা অবহেলা করেন, এটা একেবারেই ঠিক না, বরং গুনাহের কাজ। যারা স্ত্রীকে ভরণপোষণ ঠিকঠাকমতো দেন, তারা অনেক সাওয়াবের কাজ করছেন। যারা দেন না, ইচ্ছা করে বা অবহেলায় তাদের স্ত্রীদের জন্য অনেক মূল্যবান হাদিস-

حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ هِشَامٍ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ قَالَتْ هِنْدٌ أُمُّ مُعَاوِيَةَ لِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِنَّ أَبَا سُفْيَانَ رَجُلٌ شَحِيحٌ، فَهَلْ عَلَىَّ جُنَاحٌ أَنْ آخُذَ مِنْ مَالِهِ سِرًّا قَالَ ‏ “‏ خُذِي أَنْتِ وَبَنُوكِ مَا يَكْفِيكِ بِالْمَعْرُوفِ ‏”‏‏.‏

আয়েশা রাযিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা থেকে বর্ণিত—

মু’আবিয়াহ রাযিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর মা হিন্দা আল্লাহ্‌র রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলেন, আবু সুফিয়ান (রাযিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু) একজন কৃপণ ব্যক্তি। এ অবস্থায় আমি যদি তার মাল হতে গোপনে কিছু গ্রহণ করি, তাতে কি গুনাহ হবে? তিনি বললেন, তুমি তোমার ও সন্তানদের প্রয়োজন অনুযায়ী ন্যায়ভাবে গ্রহণ করতে পার। সহিহ বুখারি, হাদিস নং ২২১১। হাদিসের মান: সহিহ হাদিস।

বর্তমানে অনেক স্বামী স্ত্রীর কাছ থেকে নিজের পাওনা পুরোপুরি আদায় করলেও স্ত্রীর অধিকার পালনের বিষয়ে সামান্যতম সচেতনতা দেখান না। অনেকে স্ত্রীর প্রয়োজনীয় খরচ দিতেও গড়িমসি করেন, আবার কেউ কেউ স্ত্রীর সঙ্গে দুর্বব্যবহার করেন। যেমন, বিভিন্নভাবে ধমক দিয়ে থাকেন, অনেকে তো আবার সর্বোচ্চ কাপুরুষতার পরিচয় দিয়ে স্ত্রীর গায়ে হাত তুলেন, যা কখনোই কাম্য নয়।

স্ত্রীদের প্রতি সদাচারণের বিষয়ে মহানবি (সা.) বিদায় হজের ভাষণে দীর্ঘ বয়ানের একপর্যায়ে বলেছিলেন, ‘অতএব, তোমরা স্ত্রীদের ব্যাপারে আল্লাহ তাআলাকে ভয় করো, কেননা তোমরা তাদের আল্লাহর আমানত ও প্রতিশ্রুতির সঙ্গে গ্রহণ করেছ এবং তোমরা আল্লাহর হুকুমেই তাদের লজ্জাস্থানকে হালাল হিসেবে পেয়েছ (সহিহ মুসলিম : হাদিস ১২১৮)।

আরেক হাদিসে হজরত সুরাকা ইবনে মালিক (রা.) সূত্রে বর্ণিত: একদা রাসুলুল্লাহ (সা.) খুতবা প্রদানকালে ইরশাদ করেন, ‘তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম ব্যক্তি হলো যে অন্যের ওপর অত্যাচার করা ছাড়া নিজ পরিবার ও আত্মীয়স্বজন থেকে সব অনিষ্ট দূর করে (আবু দাউদ, হা. : ৫১২০)।’

বার্তা বাজার/জে আই