২০২৩ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের নাক কান গলা (ইএনটি) বিভাগে মোট ১৪১৫৯টি অপারেশন সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্যে জেনারেল ওটিতে অপারেশন ৩৩৯২টি, ইমার্জেন্সি ওটিতে অপারেশন হয়েছে ১০৬৮০টি এবং আউটডোর ওটিতে ৮৭টি অপারেশন সম্পন্ন হয়েছে। সোমবার (১৫ জানুয়ারি) ঢামেক হাসপাতালের রেকর্ড রুম থেকে এসব তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।

ঢামেক হাসপাতালের ইএনটি বিভাগের সহকারি রেজিস্ট্রার এবং এমএস ফেজ-বি এর রেসিডেন্ট ডা. মারজুক আল তুহিন বলেন, ইমার্জেন্সি ওটিতে (যা বছরের ৩৬৫ দিন খোলা থাকে) ২০২৩ সালে আংশিক অবশ করে ১০৬৮০টি অপারেশন সম্পন্ন হয়েছে, (ইমার্জেন্সি রুমে কোন সম্পূর্ণ অবশ করে অপারেশন করবার সুযোগ নাই)।

আউটডোর ওটিতে ২০২৩ সালে সর্বমোট ৮৭টি অপারেশন আংশিক অবশ করে সম্পন্ন হয়েছে (আউটডোর ওটিতেও কোন সম্পূর্ণ অজ্ঞান করে অপারেশন এর সুযোগ নাই)।

জেনারেল ওটিতে ১২ মাসে মোট ১৬৭৬ টি সম্পূর্ণ অজ্ঞান করে (জিএ) অপারেশন সম্পন্ন হয়েছে এবং আংশিক অবশ (এলএ) করে মোট ১৭১৬টি অপারেশন সম্পন্ন হয়েছে। অর্থাৎ এক বছরে মোট ৩৩৯২ টি অপারেশন নাক কান গলা বিভাগের সার্জনরা সম্পন্ন করেছেন।

২০২৩ সালে জেনারেল ওটির মাসভিত্তিক খতিয়ানঃ

১. জানুয়ারি মাসে সম্পূর্ন অজ্ঞান করে অপারেশন সম্পন্ন হয় ১৬৭টি, আংশিক অবশ করে অপারেশন হয় ১৪৭টি।

২. ফেব্রুয়ারি মাসে সম্পূর্ন অজ্ঞান করে অপারেশন সম্পন্ন হয় ১৫১টি, আংশিক অবশ করে অপারেশন হয় ১১৮টি।

৩. মার্চ মাসে সম্পূর্ন অজ্ঞান করে অপারেশন সম্পন্ন হয় ১৪৭টি, আংশিক অবশ করে অপারেশন হয় ১৫১টি।

৪. এপ্রিল মাসে সম্পূর্ন অজ্ঞান করে অপারেশন সম্পন্ন হয় ১২০টি, আংশিক অবশ করে অপারেশন হয় ১৮৫টি।

৫. মে মাসে সম্পূর্ন অজ্ঞান করে অপারেশন সম্পন্ন হয় ১৪৮টি, আংশিক অবশ করে অপারেশন হয় ১২৯টি।

৬. জুন মাসে সম্পূর্ন অজ্ঞান করে অপারেশন সম্পন্ন হয় ১২৭টি, আংশিক অবশ করে অপারেশন হয় ১০৪টি।

৭. জুলাই মাসে সম্পূর্ন অজ্ঞান করে অপারেশন সম্পন্ন হয় ১০৭টি, আংশিক অবশ করে অপারেশন হয় ১৫৫টি।

৮. অগাস্ট মাসে সম্পূর্ন অজ্ঞান করে অপারেশন সম্পন্ন হয় ১৫৫টি, আংশিক অবশ করে অপারেশন হয় ১৬৫টি।

৯. সেপ্টেম্বর মাসে সম্পূর্ন অজ্ঞান করে অপারেশন সম্পন্ন হয় ১৩২টি, আংশিক অবশ করে অপারেশন হয় ১৩৯টি।

১০. অক্টোবর মাসে সম্পূর্ন অজ্ঞান করে অপারেশন সম্পন্ন হয় ১২৯টি, আংশিক অবশ করে অপারেশন হয় ১৪৫টি।

১১. নভেম্বর মাসে সম্পূর্ন অজ্ঞান করে অপারেশন সম্পন্ন হয় ১৫৩টি, আংশিক অবশ করে অপারেশন হয় ১৪৮টি।

১২. ডিসেম্বর মাসে সম্পূর্ন অজ্ঞান করে অপারেশন সম্পন্ন হয় ১৪০টি, আংশিক অবশ করে অপারেশন হয় ১৩০টি।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেখা যাচ্ছে, সম্পূর্ন অজ্ঞান করে সর্বোচ্চ সংখ্যক (জিএ) অপারেশন সম্পন্ন হয়েছে জানুয়ারিতে ১৬৭টি। আর এপ্রিলে সর্বোচ্চ ১৮৫টি আংশিক অবশ (এলএ) করে অপারেশন করা সম্পন্ন হয়।

তবে, উভয় ধরনের অপারেশন (সম্পূর্ণ অজ্ঞান+আংশিক অবশ) মিলিয়ে সবচেয়ে বেশি অপারেশন হয়েছে আগস্ট মাসে মোট ৩২০টি।

ডা. মারজুক আল তুহিন জানান, ঢাকা মেডিকেল কলেজ নাক কান গলা বিভাগে মোট ইউনিট ৬টি এবং প্রতি ইউনিট সপ্তাহে ১ দিন জেনারেল ওটি রুমের দুটি রুমে অপারেশনের সুযোগ পান। শুক্রবার ও সরকারী ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিনই এই ওটি রুমে অপারেশন সম্পন্ন হয়। এরমধ্যে সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত সম্পূর্ণ অজ্ঞান করে অপারেশন চালু থাকে। বাকি সময়ে আংশিক অবশ করে অপারেশন সম্পন্ন হয়।

বিভাগের প্রতিটি ইউনিটে রোগী ভর্তির জন্য আলাদা আলাদা দিন নির্ধারণ করা আছে। এর মধ্যে ইউনিট ১ শনিবার, ইউনিট ২ রোববার, ইউনিট ৩ সোমবার, ইউনিট ৪ মঙ্গলবার, ইউনিট ৫ বুধবার এবং ইউনিট ৬ বৃহস্পতিবার রোগী ভর্তি করা হয়। প্রতি শুক্রবার পালাক্রমে প্রতিটি ইউনিট রোগী ভর্তি করে। ইমার্জন্সি রুমে এডমিশন ইউনিট ইমার্জেন্সি অপারেশনগুলো সম্পন্ন করে। একইভাবে আউটডোরেও অপারেশন সম্পন্ন হয়।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ নাক কান গলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন অধ্যাপক ডা. শেখ রুমি আহমেদ। নানা প্রতিকূলতার মাঝেও তিনি দক্ষহাতে নেতৃত্বের গুনাবলী দিয়ে এই বিশাল কর্মযজ্ঞ সম্পন্ন করেছেন। এছাড়া অন্যান্য ইউনিটের প্রধান হিসেবে রয়েছেন অধ্যাপক ডা. দেবেশ তালুকদার (ইউনিট-২), অধ্যাপক ডা. হুসনে কামার ওসমানী (ইউনিট ৩), সহযোগী অধ্যাপক ডা. শাহারিয়ার সৌরভ (ইউনিট ৪), সহযোগী অধ্যাপক ডা. নূর সাঈদ (ইউনিট ৫), সহযোগী অধ্যাপক ডা. আসাদুর রহমান (ইউনিট ৬) এবং সহযোগী অধ্যাপক ডা. আব্দুল্লাহ আল হারুন (ইউনিট ১)। এছাড়াও সহকারী অধ্যাপক ডা. খালেদ জাহান বিপু, সহকারী অধ্যাপক ডা. শায়খুল ইসলাম, সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. আসাদুজ্জামান লিটন এবং সহকারী অধ্যাপক ডা. সাজ্জাদ সাগরসহ রেসিডেন্ট চিকিৎসক, রেজিস্ট্রার, সহকারী রেজিস্ট্রার, ইনডোর মেডিকেল অফিসার, আউটডোর মেডিকেল অফিসার, রেসিডেন্ট, নন রেসিডেন্ট ডিএলও কোর্সের শিক্ষার্থী, নন রেসিডেন্ট এফসিপিএস ট্রেইনি সহ সকল চিকিৎসক, এনাস্থেশিয়া বিভাগের সকল চিকিৎসক, ওয়ার্ড ও ওটি নার্স, ইমার্জেন্সি ও জেনারেল ওটি বয়,আউটডোরের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারীদের সকলের উদ্যোগে এই সাফল্য অর্জন সম্ভব হয়েছে।

বার্তা বাজার/জে আই