বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরী বলেছেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংশোধন করা হবে। শুক্রবার (২৬ মে) সন্ধ্যায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) নেতাদের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবি জানানোর পরিপ্রেক্ষিতে এ কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, এ আইনটি সংশোধনের জন্য যদি বিবেচনা না করা হতো তাহলে সংসদের স্থায়ী কমিটিতে আলোচনা হতো না। সংসদের স্থায়ী কমিটিতে দায়িত্বরত সংসদ সদস্যরা আইনটি সংশোধনের জন্য আরও বিশদভাবে ব্যাখ্যা করবেন। এরপর এটা সংশোধন করা হবে।
ঢাকায় বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত পেশাদার সাংবাদিকদের সবচেয়ে বড় সংগঠন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) ২৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্যদের সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অথিতির ব্যক্তব্যে মতিয়া চৌধুরী এসব কথা বলেন।
বিকেলে ডিআরইউয়ের নসরুল হামিদ মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এসময় কেক কাটা এবং প্রতিষ্ঠাতা সদস্যদের সম্মাননা ক্রেস্ট ও উত্তরীয় পরিয়ে দেওয়া হয়।
মতিয়া চৌধুরী বলেন, আজকে ডিআরইউ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবি জানিয়েছে। এ সংগঠনের মধ্যে কিছুটা দ্রোহ আছে। তবে অধিকারের সঙ্গে দায়িত্বশীলতাও আছে। এটি যদি না থাকে কোনো কিছু এগোয় না। পারস্পরিক আলোচনার ভিত্তিতে সীমারেখা নির্ধারিত হওয়া প্রয়োজন। সাংবাদিকতা একটি জীবন্ত পেশা। সাংবাদিকদের দায়বদ্ধতা হলো সমাজের কাছে, জনগণের কাছে ও গোটা মানবজাতির কাছে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ভোরের কাগজ সম্পাদক ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত বলেন, প্রেস ক্লাবে রির্পোটার প্রবেশ করতে না দেওয়া ও বিভাজনের কারণে ডিআরইউ গঠিত হয়েছিল। কিন্তু সেসব সমস্যা এখনো বিদ্যমান। দল-মত নির্বিশেষে রাজনীতির ঊর্ধ্বে ওঠে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠের সাংবাদিকরা ডিআরইউ গড়ে তুলেছিলেন। এখনো সংগঠনটি ইউনিটি বজায় রেখেছে।
আগামী দিনে সাংবাদিকতা আরও চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে, এমন শঙ্কা প্রকাশ করে তিনি বলেন, সাংবাদিকতার বর্তমান চেহারা থাকবে না। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও চ্যাট জিটিপির যুগে আগামী ১০ বছর পর পত্রিকা বলতে কিছু থাকবে না। ২০ বছর পর টেলিভিশন বলতে কিছু থাকবে না। কী থাকবে সেটা এখন বলা যাবে না। আগামীর ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে এগোতে হবে। নতুন বাস্তবতার কথা চিন্তা করতে হবে। নতুন বাস্তবতার সঙ্গে তাল মেলাতে হবে, সমন্বয় করতে হবে।
‘ঐক্যেই সমৃদ্ধি’- এ স্লোগানকে সামনে রেখে সম্মামনা প্রদান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি মোরসালিন নোমানী। এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মঈনুল আহসান। অনুষ্ঠানে ডিআরইউ প্রতিষ্ঠার ইতিহাস তুলে ধরে স্মৃতিচারণমূলক বক্তব্য রাখেন প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও সাবেক সভাপতি আজমল হোসেন খাদেম ও রফিকুল ইসলাম আজাদ, প্রতিষ্ঠাতা সদস্য আজিজুল ইসলাম ভূঁইয়া, আযম মীর শহীদুল আহসান, কাজী আবদুল হান্নান, সৈয়দ আখতার ইউসুফ, অজিত কুমার সরকার, বিএফইউজের একাংশের মহাসচিব নুরুল আমিন রোকন, ডিইউজের দুই অংশের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম ও আকতার হোসেন।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, বিএফইউজের একাংশের সভাপতি এম আবদুল্লাহ, ডিআরইউর সাবেক সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বাদশা ওইলিয়াস হোসেন প্রমুখ।
এর আগে সকালে ডিআরইউ চত্বরে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে ২৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর বর্ণাঢ্য আয়োজনের উদ্বোধন করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
বার্তা বাজার/জে আই