কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের রামুর বাইপাসে ব্যাটারি চালিত গাড়ি ছিনতাই চক্রের মূলহোতাসহ ছয়জনকে আটক করেছে র‌্যাব। এ সময় তাদের কাছ থেকে ব্যাটারি চালিত ৫টি ইজিবাইকও (টমটম) উদ্ধার করা হয়।

রোববার (২৬ নভেম্বর) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র‌্যাব-১৫ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ল এন্ড মিডিয়া) মো. আবু সালাম চৌধুরী।

আটক ব্যক্তিরা হলেন, রামুর ফতেখারকুল ইউনিয়নের মধ্যম মেরুল্লার নুরুল আমিনের ছেলে মো. সেলিম (২৫), রামু জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়নের উত্তর মিঠাছড়ির মকসুদ মিয়ার ছেলে ছালামত উল্লাহ (৪০), রাসু জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়নের চা বাগান এলাকার নুর মোহাম্মদের ছেলে কলিম উল্লাহ (২৫), রামু হাসপাতাল গেইট এলাকার মনির আহম্মদের ছেলে জাহিদুল ইসলাম (২৫), রামু চা বাগান এলাকার নুর মোহাম্মদের ছেলে রফিক উল্লাহ (২০) ও উখিয়া উপজেলার কুতুপালং পশ্চিম পাড়ার জাকির হোসেনের ছেলে শফিকুর রহমান (২৪)।

এই ৬ জনের মধ্যে মো. সেলিম ও ছালামত উল্লাহ গাড়ি ছিনতাই চক্রের মূলহোতা বলে জানিয়েছে র‌্যাব।

কক্সবাজার র‌্যাব-১৫ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (ল এন্ড মিডিয়া) মো. আবু সালাম চৌধুরী জানান, ১৬ নভেম্বর রামু বাইপাস এলাকায় কিছু দুষ্কৃতিকারী অস্ত্রের মুখে একটি ইজিবাইক ছিনিয়ে নিয়ে যায়। সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দুইজনকে শনাক্ত করা হয়েছে।

এরই সূত্র ধরে শনিবার (২৫ নভেম্বর) গভীর রাতে রামু এলাকায় অভিযান চালিয়ে সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে শনাক্ত একজনকে আটক করতে সক্ষম হয়। পরে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে কক্সবাজারের উখিয়া ও কুতুপালং থেকে এই গাড়ি ছিনতাই চক্রটির মূলহোতা সেলিম ও সালামতসহ চক্রের আরও চার সদস্যকে আটক করা হয়। একই সঙ্গে গ্যারেজের মালিক শফিককেও আটক করা হয়। আর উদ্ধার করা হয় ছিনতাই করা ৫টি ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক।

মো. আবু সালাম চৌধুরী আরও জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটকরা স্বীকার করেছে, তারা ইঞ্জিন ও ব্যাটারিচালিত গাড়ি ছিনতাইয়ের সংঘবদ্ধ একটি ডাকাত চক্র এবং দীর্ঘদিন ধরে এই কাজের সঙ্গে জড়িত। চক্রটি প্রথমে একটি ব্যাটারি চালিত থ্রি হুইলার টার্গেট করে ২-৩ জন সদস্য যাত্রী সেজে রিজার্ভ ভাড়া করে নেয়। চক্রের বাকি ৪-৫ সদস্য তাদের পূর্ব নির্ধারিত স্থানের আশপাশে অবস্থান করে। যাত্রী বেশে ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যরা নিয়মিত বাকি সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে থাকে। যখনই তাদের নির্ধারিত স্থানে গাড়িটি আসে তখন যাত্রী বেশে থাকা একজন সদস্য প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেয়ার কথা বলে গাড়িটি থামায়। এ সুযোগে অন্য সদস্যরাও এগিয়ে আসে এবং সবাই মিলে গাড়ির ড্রাইভারকে অস্ত্রের মুখে মারধর ও ছুরিকাঘাত করে গাড়ি ছিনিয়ে নিয়ে থাকে। অনেক ক্ষেত্রে ড্রাইভারদের মারাত্মকভাবে করা হয়, এমন কি তারা ইজিবাইক চালকদের হত্যা করার ঘটনাও ঘটায় অনেক ক্ষেত্রে। চক্রটি ছিনতাই করা গাড়িগুলো কুতুপালং এ অবস্থিত শফিকের গ্যারেজে বিক্রি করে। শফিক সম্পর্কে এই সিন্ডিকেটের মূলহোতা ছালামতের শ্যালক। শফিক গাড়িগুলোর কাঠামো, রং এবং কাপড় পরিবর্তন করে বিক্রি করে দেয় বলে স্বীকার করেছে।

উদ্ধার করা ব্যাটারিচালিত ৫টি ইজিবাইকসহ আটক ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য রামু থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলেও জানা গেছে।

বার্তাবাজার/এম আই