দুর্যোগ প্রবন এলাকাগুলোর মধ্যে দক্ষিনাঞ্চলের জেলা পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলা একটি। প্রতিবছর এ অঞ্চলের মানুষের যুদ্ধ করতে হয় বিভিন্ন প্রকার প্রাকৃতিক দুর্যোগের সাথে। দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি কমাতে রাঙ্গাবালীর চার ইউনিয়নে নির্মাণ করা হয়েছে ১১ টি আশ্রয়কেন্দ্র মুজিব কিল্লা।

আজ দুর্যোগ প্রশমন দিবসে সরেজমিনে দেখা গেছে উপজেলার নেতা বাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় উঁচু মাটির কিল্লার উপর দাঁড়িয়ে আছে দৃষ্টিনন্দন ইমারত। যার নাম মুজিব কিল্লা। ঘুর্নিঝড়ের সময় এখানে মানুষ তাদের গবাদি পশু ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সহ আশ্রয় নিতে পারবে।

জানা গেছে, ১৯৭০ সালে উপকূলীয় এলাকায় বয়ে যাওয়া ভোলা সাইক্লোন নামে একটি প্রলয়ঙ্কারী ঘুর্নিঝড়ের পর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তৎকালীন সময়ে উঁচু উঁচু মাটির কিল্লা নির্মাণের আদেশ দেন। পরবর্তীতে তা দুর্যোগ মোকাবেলায় ব্যপক ভূমিকা পালন করে। কিন্তু এতে ছিলনা কোন ভবন। যার কারণে মানুষ পানি থেকে বাঁচলেও বিভিন্ন ভাবে ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হতো । তবে এই সমস্যা সমাধানে বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্দ্যোগ নিয়েছে মুজিব কিল্লা নির্মাণের। যা এখন বাস্তবায়নের পথে।

কিন্তু বিচ্ছিন্ন অনেক অরক্ষিত এলাকা রয়েছে যেখানে বেরিবাঁধ, সাইক্লোন শেল্টার কিছুই নেই। সেখানে এমন মুজিব কিল্লা নির্মাণের দাবি সচেতন মহলের।

স্থানীয় বাসিন্দা মফিদুল হক বাবুল বলেন, ১৯৭০ সনের প্রলয়ঙ্কারী ঘুর্নিঝড়ে এই দক্ষিণাঞ্চলের অনেক মানুষ মারা গেছে। তখন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মাটির কিল্লা নির্মাণ করেছিল মানুষের আশ্রয়ের জন্য। দীর্ঘদিন তা অকেজো ও পতিত অবস্থায় ছিল। এখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখানে আরো উঁচু করে এবং একটি ইমারত নির্মাণ করেছে। এখানে এখন ঝড়ের সময় মানুষ তাদের নিজেদের পাশাপাশি গবাদি পশু ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সহ আশ্রয় নিতে পারবে। আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাই।

বেসরকারী সংস্থা ভার্কের উপজেলা সমন্বয়কারী মোঃ মোহসীন তালুকদার বলেন, এই ইমারত গুলো এখন এই উপকূলীয় এলাকার মানুষের দুর্যোগ ঝুঁকি কমাবে। তবে রাঙ্গাবালীতে আরো বিভিন্ন চর রয়েছে যেখানে নেই বেরিবাঁধ, নেই সাইক্লোন শেল্টার। এসব চরেও যদি এমন মুজিব কিল্লা নির্মাণ করা হয় তাহলে খুবই ভালো হবে।

উপজেলা প্রসাশনের তথ্যমতে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে ২০ কোটি টাকা ব্যয়ের এই ১১ টি মুজিব কিল্লা ২০২১ সালের ৩০ জুনের মধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ হবার কথা।

তবে ১১ টি মুজিব কিল্লার মধ্যে এখন পর্যন্ত মোট তিনটির নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। বাকিগুলো চলছে ধীর গতিতে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেই। তাদের দাবি দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ করা হোক।

এবিষয়ে রাঙ্গাবালী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ডা. জহির উদ্দিন আহমেদ বলেন, এই মুজিব কিল্লা আমাদেরকে সকল প্রকার দুর্যোগ থেকে বাঁচিয়ে রাখবে। এখনো কিছু কিছু এলাকা আছে যেগুলো এখনো আমরা মুজিব কিল্লার আওতায় আনতে পারিনি। সেই এলাকাগুলোতে মুজিব কিল্লার প্রয়োজন। এখনো অনেক মুজিব কিল্লার নির্মাণ কাজ শেষ হয়নি। এগুলো দ্রুত সময়ের মধ্যে শেষ করার চেষ্টা চলছে।

বার্তাবাজার/এম আই