নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন ‘আনসার আল ইসলাম’ এর উত্তরাঞ্চলের দাওয়াতী শাখার দায়িত্বশীল মুনতাসীর বিল্লাহ সহ ০৪ সদস্যকে ঠাকুরগাঁও ও দিনাজপুর থেকে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
গত ১৪ সেপ্টেম্বর রাতে রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব-১৩ এর আভিযানিক দল ঠাকুরগাঁও সদর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে।
অভিযানে মোঃ ইয়াছিনকে গ্রেফতার করা হয়। অতঃপর তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে আজ শুক্রবার ভোরে দিনাজপুর সদর ও বিরল এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন ‘আনসার আল ইসলাম’ এর উত্তরাঞ্চলের দাওয়াতী শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত, মোঃ মুনতাসির বিল্লাহ (৩৬) এবং তার সহযোগী আব্দুল মালেক (৩৩) ও সাব্বির হোসেন (২০) কে দাওয়াতি বই ৪টি মোবাইল ও ৪ সিমকার্ড সহ গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতদেরকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, এরা সকলেই নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন ‘আনসার আল ইসলাম’ এর সদস্য। তারা আফগানিস্তানে তালেবানের উত্থানে উদ্বুদ্ধ হয়ে আল কায়েদা মতাদর্শের জঙ্গি সংগঠন ‘আনসার আল ইসলাম’ এর কার্যক্রম পরিচালনা করছিলেন।
গ্রেফতারকৃতদের সম্পর্কে বিস্তারিত খোঁজ নিয়ে শৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরা জানতে পারে যে, গ্রেফতারকৃত মুনতাসীর বিল্লাহ সংগঠনটির উত্তরাঞ্চলের দাওয়াতী শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত। তিনি টেক্সটাইল বিষয়ে অধ্যয়নরত থাকাকালীন ০৬ মাস অধ্যয়নের পর পড়াশোনা বাদ দিয়ে এলাকায় হিজমার ব্যবসা শুরু করেন। পাশাপাশি এলাকায় প্রাইভেট পড়াতেন। তিনি ২০২১ সালে উক্ত সংগঠনের শীর্ষস্থানীয় নেতার মাধ্যমে উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে সংগঠনে যোগ দেন ও উত্তরাঞ্চলের দাওয়াতী কার্যক্রম পরিচালনা করতে থাকেন। পরবর্তীতে তিনি উত্তরাঞ্চলে দাওয়াতী কার্যক্রমের দায়িত্বপ্রাপ্ত হিসেবে নিযুক্ত হন। তিনি অদ্যাবধি ১৫ এর অধিক ব্যক্তিকে সংগঠনে যুক্ত করে বলে জানা যায়।
অপর এক গ্রেফতারকৃত ইয়াছিন এসএসসি পাশ করে ঠাকুরগাঁও এলাকায় মধুর ব্যবসা করতো। সে ২০২২ সালে গ্রেফতারকৃত মুনতাসির এর মাধ্যমে উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে উক্ত সংগঠনে যোগদান করে দাওয়াতী কার্যক্রম পরিচালনা করতে থাকে। সে সরাসরি ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নতুন সদস্য সংগ্রহ এবং সংগঠনের দাওয়াতী কার্যক্রম পরিচালনা করতো বলে জানা যায়। সে তার এলাকার ০৬ জনকে উদ্বুদ্ধ করে সংগঠনে যোগদান করিয়েছে বলে জানা যায়।
এছাড়াও গ্রেফতারকৃত আব্দুল মালেক পূর্বে কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পাশে একটি রেস্টুরেন্টে কুক হিসেবে কর্মরত ছিল। পরবর্তীতে সে ০৩ বছর পূর্বে দিনাজপুরে ফিরে এসে দিনাজপুর শহরে চাংপাই চাইনিজ নামে একটি ফুড কাডর্ এর ব্যবসা শুরু করে। ২০২১ সালে গ্রেফতারকৃত মুনতাসির এর সাথে তার পরিচয় হয় এবং আনসার আল ইসলাম এর মতাদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে সংগঠনে যোগদান করে দাওয়াতী কার্যক্রম পরিচালনা করতে থাকে। সে অদ্যাবধি ৪/৫ জনকে সংগঠনে অন্তর্ভুক্ত করিয়েছে বলে জানা যায়।
সর্বশেষ গ্রেফতারকৃত সাব্বির মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়াশোনা করে দিনাজপুরের বিরলে ইলেক্ট্রিশিয়ানের কাজ করতো। সে ২০২২ সালে গ্রেফতারকৃত মুনতাসির এর মাধ্যমে উদ্বুদ্ধ হয়ে ‘আনসার আল ইসলাম’ এ যোগদান করে। সে তার নিজ এলাকা দাওয়াতি কার্যক্রম পরিচালনা করছিল এবং ৩/৪ জনকে সংগঠনে যোগদান করিয়েছে বলে জানা যায়।
র্যাবের মিডিয়া সেন্টার থেকে সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) এবং ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মাহমুদ বশির আহমেদ জানান, গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
ই.এক্স/ও.আর/বার্তা বাজার