সিলেটের কোম্পানীগঞ্জে ‘নলেজ পার্ক’ এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলেন প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী ইমরান আহমদ এমপি। বৃহস্পতিবার (৩১ ডিসেম্বর) এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই নলেজ পার্কের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। এসময় একই পার্কে নির্মাণের শেষ পর্যায়ে থাকা ‘শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং এন্ড ইনকিউবেশন সেন্টার’ পরিদর্শন করেন।

ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠান উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাই-টেক পার্কে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী ইমরান আহমদ বলেন, বর্তমান সরকারের রূপকল্প-২০৪১ অনুযায়ী স্মার্ট ও উন্নত বাংলাদেশ গড়তে আইসিটি সেক্টর হবে বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকা শক্তি। এই প্রকল্প এলাকাটি সিলেট শহর হতে ২৫ কি.মি. এবং এয়ারপোর্ট হতে ২০কি.মি. এবং নতুন রেলস্টেশন হতে মাত্র ২৮ কি.মি. দূরে হওয়ায় বিনিয়োগের জন্য খুবই উপযোগী। আর দেশি-বিদেশি বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশে এখন খুবই উপযুক্ত পরিবেশ বিরাজ করছে। এই হাই-টেক পার্কে দক্ষ মানবসম্পদ সৃষ্টিসহ বিপুল পরিমাণ কর্মসংস্থান সৃষ্টির সুযোগ হবে; যা এই অঞ্চলের অর্থনীতির আমূল পরিবর্তনে অসামান্য অবদান রাখবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। সিলেট শাজজালাল প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট মেডিল কলেজ, এমসি কলেজসহ সিলেটের অনেক সনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রায় লক্ষাধিক শিক্ষার্থী রয়েছেন। এই তরুণ-তরুণীদেরকে যদি আমরা আমরা আইটিতে দক্ষ মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তুলতে পারি তাহলে এই অঞ্চলের অর্থনীতির ইকোসিস্টেমে আমূল পরিবর্তন আসবে।

তিনি বলেন, ১৫ বছর আগেও দেশের স্বল্প শিক্ষিত তরুণ প্রজন্ম কর্মসংস্থানের জন্য যেখানে গার্মেন্টসসহ অন্যান্য শ্রমনির্ভর শিল্পের উপর নির্ভরশীল ছিলো সেখানে বর্তমানে তারা আইটি শিল্পে নিজেদের ক্যারিয়ার গড়ে তুলছে। এছাড়া স্টার্টআপ এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি প্রতিষ্ঠানগুলোর ইন্ডাস্ট্রিতে প্রবেশের হার বাড়ানো এবং জেন্ডার ইনক্লুসিভ এন্টারপ্রেনারশিপ তৈরিতে এই নলেজ পার্ক সরাসরি ভূমিকা রাখবে।

স্বাগত বক্তব্যে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক জি এস এম জাফরউল্লাহ্ বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই অঞ্চলের জন্য একটি হাই-টেক পার্ক প্রতিষ্ঠার কথা বলেছিলেন। তাঁরই ধারাবাহিকতায় তিনি গত ২১ জানুয়ারি ২০১৬ তারিখ সিলেট হাই-টেক পার্কের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে সিলেটবাসীর স্বপ্ন পূরণ করতে সিলেটকে একটি প্রযুক্তি নগরী হিসেবে গড়ে তোলার সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছেন। প্রযুক্তিভিত্তিক কর্মসংস্থানের একটি ডিজিটাল ইকোনমিক হাব হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাই-টেক পার্ক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। সিলেটের এই পার্ক থেকে ভারতের সেভেন সিস্টার’স এর বাজারে প্রবেশের ব্যাপক সম্ভাবনা থাকায় দেশি-বিদেশি আরো অনেক কোম্পানি এই পার্কে বিনিয়োগে আগ্রহ দেখাচ্ছে। একারণে আমরা এই পার্কে দক্ষ জনবল সৃষ্টির জন্য শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং এন্ড ইনকিউবেশন সেন্টার স্থাপন করছি।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও প্রযুক্তি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মোঃ মোস্তফা কামাল, সিলেটের জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল, সিলেট হাইটেক পার্কের পরিচালক গোলাম সরওয়ার ভূইয়া, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ সেলিম প্রমূখ।

ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে বক্তব্য রাখেন জেলা পর্যায়ে আইটি/হাইটেক পার্ক স্থাপন প্রকল্পের পরিচালক ফজলুল হক।

উল্লেখ্য, আইসিটি খাতে দক্ষ জনবল সৃষ্টির লক্ষে ১৭৫ কোটি টাকা ব্যায়ে সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার হাইটেক পার্কে শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং এন্ড ইনকিউবেশন সেন্টার স্থাপন (নলেজ পার্ক) নির্মাণ হবে।

বার্তাবাজার/এম আই