গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বেদগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়। ১৯৬৬ সালে প্রতিষ্ঠিত এই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অনেকেই দেশের কল্যাণে অনবদ্য ভূমিকা রেখেছেন।
বর্তমান সরকারের উন্নয়নের অংশ হিসেবে সারাদেশে বহুতল ভবন গড়ে উঠেছে। তবে ঐতিহ্যবাহী এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিতে নেই কোনো পাকা ভবন। টিনের চার চালা ঘর দিয়েই চলছে পাঠদানের কাজ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় বিদ্যালয়টির দুরবস্থার চিত্র।
জানা যায়, পূর্বে ওয়ার্ল্ড ভিশন নামের একটি সংস্থার দেওয়া আধা পাকা ঘর থাকলেও সরকারি ভবনের বরাদ্দ আসার পর সেটি ভেঙে ফেলা হয়। তবে দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধি পায় ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কাজ বন্ধ করে চলে যায়।
বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে তিন শতাধিকের উপরে শিক্ষার্থীরা অধ্যায়নরত আছে।
শিক্ষকদের দাবি, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় এই বেহাল দশা।
শ্রেণিকক্ষ সংকটের কারণে বাধ্য হয়ে শিক্ষকরা ঝড় বৃষ্টি উপেক্ষা করে নিজেদের ও শিক্ষার্থীদের জীবনের ঝুঁকি নিয়েই পাঠদান করাতে বাধ্য হচ্ছেন।
বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী বলে, ‘আমাদের লেখা-পড়া করতে অনেক কষ্ট হয়। ঝড়-বৃষ্টি হলে খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। সিঁড়ি ও বিমে ফাটল, মেঝেতে বড় বড় গর্ত এবং ঝড়-বৃষ্টি দেখলেই ভয় লাগে।
বেদগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শুসের শেখর সরকার জানান, প্রত্যঞ্চলের এই বিদ্যালয়টি ১৯৬৬ সাল হতে পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষাদান অব্যহত রয়েছে। বর্তমানে তিন শতাধিকের উপরে শিক্ষার্থী আছে। শ্রেণিকক্ষের সংকট থাকায় তারা বাধ্য হয়েই এসব পাঠদান করাচ্ছেন।
তিনি আরও জানান, শ্রেণি কক্ষ না থাকায় প্রাইমারি স্কুলের নিচ তলায় টিনের বেড়া দিয়ে পাঠদান করাতে হচ্ছে। সেই রুমগুলোও জরাজীর্ণ।
শিক্ষার্থীদের সুষ্ঠুভাবে পাঠদান পরিচালনার জন্য একটি পাকা ভবনের দাবি জানান তিনি।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মন মথ নাথ মৃধা বলেন, শিক্ষার্থীদের সমস্যার কথা চিন্তা করে আমরা প্রাইমারী স্কুলের নিচে পাঠদানের ব্যবস্থা করেছি। তবে সেখানেও শিক্ষাদানে বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। অতিদ্রুত শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে আমাদের স্থানীয় সংসদ সদস্য মুহাম্মদ ফারুক খান, শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করি এই প্রতিষ্ঠানটিতে একটি পাকা ভবন দিলে পাঠদান অনেক ভূমিকা রাখবে।
গোপালগঞ্জ জেলা শিক্ষা প্রকৌশলী প্রতিভা সরকার জানান, বিদ্যালয়ের বিষয়টি অবগত আছি। তবে পুরাতন দুইটি বরাদ্দ আছে আমাদের কাছে। সেই বরাদ্দ দিয়ে ভবন নির্মাণ সম্ভব না। ফারুক খান এমপি মহোদয়ের ডিও লিটার এবং প্রধান শিক্ষকের লিখিত আবেদন দিলে আমরা শিক্ষা দপ্তরে যোগাযোগ করে চেষ্টা করবো ভবন নির্মাণের জন্য।
বার্তা বাজার/জে আই