বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কালজয়ী মহানায়কদের অনেকেই রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। কিন্তু এই সকল হত্যাকাণ্ডের মধ্যে একাধিক কারণে সবচেয়ে বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ড হচ্ছে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ তাঁর পরিবারের সদস্যদের হত্যাকাণ্ড। এটি শুধু একটা রাজনৈতিক ব্যক্তির হত্যাকাণ্ড ছিল না এটি ছিল সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশকে জন্মের পরেই গলা টিপে হত্যা করা, নবজাতক দেশকে শিকলে বেঁধে ফেলা এবং নব্য উদ্ভাসিত জাতিসত্ত্বার পরিচয় মুছে ফেলা।

শুক্রবার (২৫ আগস্ট) বিকাল ৩টায় ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ অফিস ভবন অডিটোরিয়াম, ৪০৩, তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলে, ঢাকা মহানগর যুবলীগ উত্তরের উদ্যোগে “১৫ আগস্ট ও ২১ আগস্টে শহীদদের স্মরণে” আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

ঢাকা মহানগর যুবলীগ উত্তরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাকির হোসেন বাবুলের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইসমাইল হোসেনের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মোঃ মাইনুল হোসেন খান নিখিল।

তিনি আরও বলেন, ১৫ই আগস্টের হত্যাকাণ্ড পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে নিকৃষ্ট এবং বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ড। কারণ, এই হত্যাকাণ্ডের নির্বিচারে শিকার হয়েছিল এমন একটি পরিবার যারা আমাদের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছিল। আব্দুর রব সেরনিয়াবাত, শেখ আবু নাসের, শেখ ফজলুল হক মণি, শেখ কামাল, শেখ জামাল, শহীদ সেরনিয়াবাত এরা সবাই প্রকৃত দেশপ্রেমী মুক্তিযোদ্ধা এবং অনেকেই মহান মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ছিলেন।

তিনি খালেদা জিয়ার উদ্দেশ্যে বলেন, ১৫ই আগস্টে আপনি কিভাবে জন্মদিন পালন করেন? আপনি নাকি দেশনেত্রী। আওয়ামী লীগ এদেশের একটি বৃহত্তম রাজনৈতিক দল, এদেশের জনগোষ্ঠীর একটি বৃহৎ অংশ বঙ্গবন্ধুকে ভালবাসে, নেতা মানে। তাহলে আপনি কিভাবে সেই জনগোষ্ঠীকে অবহেলা, উপেক্ষা করে জন্মদিন পালন করেন? আপনি তো শিশু রাসেলকে দেখেছেন, কোলে নিয়েছেন তাহলে কিভাবে পারেন? আমি আপনার “দেশনেত্রী” উপাধীকে চ্যালেঞ্জ করছি। খালেদা জিয়া দেশনেত্রী তো দূরের কথা “নেত্রী” হওয়ার যোগ্যতা রাখে না।

তিনি আরও বলেন, বিএনপি হিংসার রাজনীতি করে, বাংলা ভাইয়ের মতো জঙ্গি সৃষ্টি করে, বোমাবাজির রাজনীতি করে, হত্যার রাজনীতি করে, মরদেহের রাজনীতি করে। বিএনপি একটি সন্ত্রাসী দল, যারা পাকিস্তানী গোয়েন্দা সংস্থা এবং একটা এলিট শ্রেণীর স্বার্থ রক্ষা করে নিজেদের টিকিয়ে রাখার জন্য। আজকে বাংলার যুবসমাজ বিএনপির রাজনীতি এদেশে নিষিদ্ধ করার দাবি করছে। বিএনপির রাজনীতি নিষিদ্ধ করা এই প্রগতিশীল ও উন্নয়নশীল বাংলাদেশের সময়ের দাবি। বিএনপির সৃষ্টি হয়েছিল এদেশকে একটা ব্যর্থ রাষ্ট্রতে পরিণত করতে, তারা মানুষের অধিকার হনন করতে পারদর্শী।

তিনি আরও বলেন, ’৭৫-এ বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর থেকে ওরা স্বপ্নে বিভোর হয়ে আছেন কিভাবে শেখ হাসিনাকে হত্যা করা যায়? সেই মানসিকতা থেকেইতো ২১ আগস্ট ঘটাতে চেয়েছিলেন? শুধু শেখ হাসিনা নয়, আপনাদের টার্গেট ছিল এদেশের মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী রাজনৈতিক দলের প্রথম সারির সকল নেতৃবৃন্দদের হত্যা করা। সুপরিকল্পিতভাবে আপনারা সেদিন আমাদের নেত্রী আইভী রহমানসহ প্রায় ২৫ জন নেতা-কর্মীকে হত্যা করেছেন। ২১ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের ঘটনা এদেশের রাজনৈতিক শিষ্টাচার ও সংস্কৃতি ধ্বংসের পিছনে এককভাবে দায়ী। কি বর্বর এবং অসহিষ্ণু ওদের রাজনৈতিক মনোবৃত্তি, যে বিরোধী মতামত তো দূরের কথা, পুরো দলটাকেই আপনারা সাংগঠনিকভাবে নির্মূল করে দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু পারেন নাই। শেখ হাসিনা বেঁচে গিয়েছিলেন বলে আজ তিনি এই পৃথিবীর বুকে রাষ্ট্র পরিচালনায় এবং উন্নয়নে উৎকৃষ্ট উদাহরণ সৃষ্টি করতে পেরেছেন; যাকে এই পৃথিবীর বহু সুনামধন্য রাষ্ট্রনায়ক ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা অনুসরণ করেন। তিনি যুবলীগের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, বিএনপির কোন শক্তি নাই, সাহস নাই। জনগণের অধিকার খর্ব করার জন্যই ওরা রাজনীতির মাঠে নেমেছে। রাজনৈতিকভাবে টিকে থাকার জন্য ওরা মাঠ গরম করার চেষ্টা করছে। আর কিছু না।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ সৃষ্টি করেছিলেন শেখ ফজলুল হক মণি জনগণের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য। আজকে একটা উন্নত বাংলাদেশের নাগরিক হবার বাঙালির অধিকার ও স্বপ্ন ওরা নস্যাৎ করতে চায়। তাই বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের প্রতিটি নেতা-কর্মীকে আজকে সজাগ, সতর্ক ও সচেতন থাকতে হবে, যাতে করে আমাদের আগামীর প্রজন্মের ভবিষ্যৎ ওরা ধ্বংস করতে না পারে।

এসময় আরও বক্তব্য রাখেন, যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোঃ রফিকুল ইসলাম, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ বদিউল আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক জহির উদ্দিন খসরু, প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী, দপ্তর সম্পাদক মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ, সাংস্কৃতিক সম্পাদক বিপ্লব মুস্তাফিজ, উপ-দপ্তর সম্পাদক মোঃ দেলোয়ার হোসেন শাহজাদা, উপ-গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক অ্যাড. শেখ নবীরুজ্জামান বাবু, উপ-তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্পাদক এন আই আহমেদ সৈকত, সহ-সম্পাদক এ কে এম মুক্তাদির রহমান শিমুল, কার্যনির্বাহী সদস্য রাজু আহমেদ ভিপি মিরান, বজলুল করিম মীর, ঢাকা মহানগর যুবলীগ উত্তরের সহ-সভাপতি সাব্বির আলম লিটু, মজিবুর রহমান বাবুল, সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর রহমান, সিদ্দিক বিশ্বাস, শিবলী সাদিক, মামুন সরকার, উপ-দপ্তর সম্পাদক এ এইচ এম কামরুজ্জামান কামরুলসহ কেন্দ্রীয়, মহানগর ও বিভিন্ন ওয়ার্ড যুবলীগের নেতৃবৃন্দ। বার্তা প্রেরক, মোঃ দেলোয়ার হোসেন শাহজাদা উপ-দপ্তর সম্পাদক বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ।

বার্তাবাজার/এম আই