বগুড়ার ধুনট উপজেলায় নিজ ঘরের মেঝে খুঁড়ে মর্জিনা খাতুন নামে এক নারীর লাশ উদ্ধারের ঘটনায় দুজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ । শুক্রবার (২৮ জুলাই) দিবাগত রাত তিনটার দিকে ঢাকা সাভারের আশুলিয়া এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলেন, নিহত মর্জিনার ছেলে রাব্বি (২২) ও তার স্ত্রী নুপুর (২০)।

এ তথ্য নিশ্চিত করেন বগুড়া র‌্যাব ক্যাম্পের স্কোয়াড কমান্ডার মো. নজরুল ইসলাম। বলেন, বগুড়ার র‌্যাব-১২ ও ঢাকার র‌্যাব-৪ এর যৌথ অভিযানে তাদের গ্রেফতার করা হয়। আর এ অভিযানে সহায়তা করে র‌্যাব সদর দফতর (ইন্ট উইং)।

নিহত মর্জিনা খাতুন (৩৫) স্বামী পরিত্যক্তা ছিলেন। ধুনট উপজেলার চাঁন্দারপাড়া গ্রামে মায়ের বাড়িতেই বসবাস করতেন তিনি। তাকে তার মা রওশন আরা, ছেলে রাব্বি ও পুত্রবধু নুপুর শ্বাসরোধে হত্যা করে লাশ মাটিতে পুঁতে রাখেন। লাশ উদ্ধারের দিনই (গত ২২ জুলাই) মর্জিনার মা রওশন আরাকে আটক করে পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মর্জিনাকে শ্বাসরোধে হত্যার কথা স্বীকার করেন রওশন আরা। এরপর তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে পরদিন আদালতে পাঠানো হলে সেখানে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন তিনি। এ ঘটনার পর থেকেই রাব্বি ও নুপুরকে গ্রেফতারে তৎপর হয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।

র‌্যাব ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গত ১ জুলাই থেকে মর্জিনাদের বাড়িতে তালা ঝুলছিল। তার পরিবারের কাউকেই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। এক পর্যায়ে ওই বাড়ি থেকে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে। এতে স্থানীয়দের সন্দেহ হলে বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়। খবর পেয়ে ওই বাড়ির তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে পুলিশ। পরে ঘরের কাঁচা মেঝে খনন করে মর্জিনার লাশ উদ্ধার করা হয়। এর আগে, মর্জিনার মা, ছেলে ও পুত্রবধূকে বিষয়টি মোবাইল ফোনে জানানো হলেও তারা বগুড়ায় আসেননি। এমনকি এক পর্যায়ে তাদের ব্যবহৃত মুঠোফোন বন্ধ করে রাখেন। এ ঘটনায় গত ২৩ জুলাই ধুনট পৌরসভার মেয়র এ.জি.এম বাদশা বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামি করে ধুনট থানায় মামলা করেন।

পুলিশ জানায়, গত ৩০ জুন মর্জিনাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। এরপর লাশ মাটিচাপা দিয়ে মর্জিনার মাসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা পালিয়ে যান। এই পরিবারের নারী সদস্যরা অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। পারিবারিক কলহে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।

র‌্যাব কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম বলেন, পলাতক থাকা রাব্বি ও নুপুরের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে আসামি।

বার্তাবাজার/রাহা