মনিপুরি দুই আদিবাসী নারীকে ধর্ষণ ও ভিডিও প্রকাশের পর থেকে ভারত দেশটির ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল বিজেপি এখন চরম বেকায়দায় রয়েছে । দেশজুড়ে চলমান রাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যে রয়েছে এদিকে আগামী লোকসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে মোদী সরকারের সমালোচনায় একজোট বিরোধী দলগুলো ।

গত কয়েক মাস ধরেই জাতিগত সহিংসতায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় এ রাজ্যে। এরমধ্যেই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের দুই নারীকে ধর্ষণের ভিডিও প্রকাশের পর অশান্ত মণিপুরের উত্তাপ ছড়িয়ে পড়েছে গোটা ভারতে। দেশে-বিদেশে সমালোচনার মুখে পড়েছে বিজেপি সরকার। রাজ্যটিতেও ক্ষমতায় রয়েছে দলটি।

এ ঘটনার পর বিজেপির সরকারের বিরুদ্ধে একজোট হয়ে কঠোর সমালোচনায় নেমেছে দেশটির সব বিরোধী দল। তাদের অভিযোগ, সংখ্যালঘু নির্যাতন বন্ধে অতীতে বিজেপি সরকার কার্যকর ব্যবস্থা না নেয়ার কারণেই বার বার ঘটছে এমন ঘটনা। বিরোধীরা বলছেন, ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার পরিবর্তে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টাও করেছিল মণিপুর রাজ্য সরকার।

গত তিন মে মাসে মণিপুরজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে জাতিগত সহিংসতা। এর কিছুদিন পরই মেইতেই সম্প্রদায়ের এক নারীকে ধর্ষণের গুজব ছড়িয়ে পড়ে। এরপরই কুকি সম্প্রদায়ের নারীদের ওপর শুরু হয় নির্যাতন। সেসময় মেইতেই গোষ্ঠীর কুকি সম্প্রদায়ের দুই নারীকে প্রকাশ্যে যৌন নির্যাতনের পাশাপাশি করা হয় গণধর্ষণ।

সহিংসতা শুরু হওয়ার ৭৭ দিন পর ওই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এরপরই শুরু হয় তোলপাড়। গত কয়েকমাস ধরে মণিপুরজুড়ে সহিংসতা চললেও এ নিয়ে নীরব ভূমিকা পালন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

এমনিতেই বিজেপির বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু নির্যাতনসহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো গুরুতর অভিযোগ ওঠে বিভিন্ন সময়। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র সফরেও এ ইস্যুতে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় নরেন্দ্র মোদিকে। এমনকি সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে ভারতকে সতর্ক করেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ভারতের আসন্ন লোকসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে যখন ভোটারদের মন জয়ে ব্যস্ত বিরোধী দলগুলো। তখন মণিপুরকাণ্ড অনেকটাই অস্বস্তিতে ফেলেছে বিজেপিকে।

বার্তাবাজার/রাহা