চাঁপাইনবাবগঞ্জে তিন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগে করা মামলার আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন আদালত। গত রোববার (১৬ই জুলাই) দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর আমলী আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. হুমায়ূন কবীর আবেদনটি খারিজ করে দেন। এর আগে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের চাঁদলাইয়ের মৃত সাবেদ আলীর ছেলে মমরেজ আলীর পক্ষে তার আইনজীবী মামলা নেওয়ার আবেদন করেছিলেন। যে তিন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করা হয়েছিল তারা হলেন, জেলা স্বাধীন প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো. মরসালিন হক, সহ-সভাপতি আব্দুস সোবহান তারেক ও দৈনিক চাঁপাই দর্পনের নিজস্ব প্রতিবেদক মো. ইসাহাক আলী।
এই মামলায় তার দ্বিতীয় স্ত্রী (সদ্য ডিভোর্স দেওয়া ) উজলেফা বেগমকেও আসামি করা হয়েছে। তিন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি মামলার আবেদন ও আদালতের খারিজ করে দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার আবেদনের পক্ষে শুনানীতে অংশ নেওয়া আইনজীবী ড. মো. তসিকুল ইসলাম।
মামলার আবেদনে বলা হয়েছে গত ৮ জুলাই বাদীর বাড়িতে গিয়ে তিন সাংবাদিক তার দ্বিতীয় স্ত্রীর দায়ের করা যৌতুকের মামলা ও বিভিন্ন অপকর্মের ভিডিও আছে জানিয়ে সংবাদ না করার জন্য দুই লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন। ঘুষ না দিলে মানহানিকর সংবাদ প্রকাশের হুমকি দেন তিন সাংবাদিক। ডিভোর্স দেয়া তার দ্বিতীয় স্ত্রীর পরামর্শে তিন সাংবাদিক তার কাছে চাঁদাদাবি করেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
জেলা স্বাধীন প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো. মরসালিন হক বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার চাঁদলায় মহাল্লার মমরেজ আলী স্ত্রী সন্তান রেখে একই এলাকার উজলেফা বেগম নামে এক মেয়ের সঙ্গে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। ২০২১ সালের ১লা ডিসেম্বর উজলেফা বেগমকে বিয়েও করেন মমরেজ আলী। তবে মমরেজের দ্বিতীয় স্ত্রী উজলেফার অভিযোগ তার স্বামী আরও একটি পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়েছে এবং তাকে তালাক দিয়েছেন। ওই নারী আদালতে মামলা করেছেন। এ নিয়ে আদালতের নির্দেশে মিমাংসায় বসা হলেও সামাধান হয়নি।
মরসালিন হক আরও বলেন, এ বিষয়গুলো নিয়ে জানতে আমরা তিন সাংবাদিক সরেজমিনে যায়। কিন্তু আমাদের কোন বক্তব্য দেননি মমরেজ আলী। তার মন্তব্য ছিল- এসব বিষয়ে যা কিছু বলার তার আইনজীবী বলবেন। আদালতের দেয়া সিদ্বান্ত যা হবে, তা তিনি মেনে নিবেন।
এ নিয়ে একাধিক পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হয়েছে। তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে আমাদের বিরুদ্ধে চাঁদাদাবির মিথ্যা অভিযোগ নিয়ে আদালতে গেছিলেন। আদালত মামলাটি খারিজ করে দিয়েছেন, আমরা আদালতের প্রতি কৃতজ্ঞ।
অ্যাডভোকেট ড. মো. তসিকুল ইসলাম বলেন, এ মামলাটির ফাইলিং আইনজীবী মোহা. আকরামুল ইসলাম। তিনি জজ কোর্টে ব্যস্ত থাকায় তার হয়ে মামলাটির আবদেনের পক্ষে আমি শুনানী করি। তবে আদালত মামলাটি গ্রহণ না করে খারিজ করে দিয়েছেন। বাদি মানহানী বা অন্য কোন মামলা দায়েরের চেষ্টা করবেন বলে জানান এই আইনজীবী।
জেলা স্বাধীন প্রেসক্লাবের সভাপতি ফারুক আহমেদ চৌধুরী বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের এক ব্যাক্তি তিন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা ও কাল্পনিক অভিযোগ এনে আদালতে মামলার আবেদন করেন। আদালতের কাছে সেটি মিথ্যা প্রমাণ হওয়ায় মামলাটি খারিজ করে দিয়েছেন। যিনি মিথ্যে মামলা দিয়ে সাংবাদিকদের হয়রানির চেষ্টা করেছিলেন তার বিষয়ে সাংবাদিকরা সচেষ্ট থাকবেন।
বার্তাবাজার/রাহা