রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার রানীপুকুর ইউনিয়নের নয়াপাড়া গ্রামের কৃষকরা ধান, গম, ভুট্টা, শসা, কাকরুলসহ অন্যান্য শাকসবজি চাষ করেন। তবে এ গ্রামের কৃষকেরা সবচেয়ে বেশি চাষ করেন করলা। গ্রামের প্রতিটি পরিবারের কেউ না কেউ পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ এই করলার চাষের সঙ্গে জড়িত।

এছাড়াও পার্শ্ববর্তী পাইকান গ্রামের কৃষকরাও করলা’র চাষ করেন। তবে নয়াপাড়া গ্রাম করলা বীজ উৎপাদনের কারণে দেশজুড়ে ব্যাপক পরিচিতি অর্জন করছে। কারণ এখানকার করলার বীজ স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় যায়। দূর-দূরান্ত থেকে পাইকাররা এসে এখানকার করলা বীজ ক্রয় করে নিয়ে যায়।

মঙ্গলবার (১৩ জুন) সরেজমিনে দেখা যায়, বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে করলা চাষ করেছেন কৃষকরা। জায়গীর বাসস্ট্যান্ড হতে রানীপুকুর ইউনিয়ন পরিষদগামী রাস্তার দু-পাশে বসে কাজ করছেন কৃষক ও কৃষাণীরা। জমি থেকে পরিপক্ক করলা তুলে এনে সেগুলো থেকে বীজ সংগ্রহ করে ধুয়ে রাস্তার পাশেই শুকানো হচ্ছে সযত্নে।

তবে এখানকার করলা চাষিরা বলছেন, করলার খোসা তেতো হওয়ার কারনে গোখাদ্য হিসেবেও ব্যবহার করা যায় না, ফলে ফেলে দিতে হয়। বর্তমান আধুনিক কৃষি প্রযুক্তির সমন্বয়ে করলার এই ফেলে দেওয়া খোসা কোন কাজে লাগানো যায় কিনা তা নিয়ে গবেষণার দাবি কৃষকদের।

এদিকে কৃষি কর্মকর্তা বলছেন, করলার উচ্ছিষ্ট অংশ জৈব সার হিসেবে ব্যবহারের জন্য কৃষকদের ইতিমধ্যেই প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।

স্থানীয় কৃষকরা জানান, এখানকার উৎপাদিত করলা, সবজির থেকে বীজ হিসেবে বেশি বিক্রি হয়। নয়াপাড়া গ্রামের প্রায় প্রতিটি পরিবারেই কেউ না কেউ করলার চাষ করে। এবার প্রায় ১‘শ একর জমিতে করলার চাষ হয়েছে। সবমিলে কমপক্ষে ৩০ থেকে ৪০ লাখ টাকার ব্যবসা হবে। করলা চাষ করে এখানকার অনেক কৃষক স্বাবলম্বী হয়েছেন।

উপ-সহকারী কৃষি অফিসার মুশফিকুর রহমান বলেন, এখানকার উৎপাদিত করলা বীজ রানীপুকুরের করলা বীজ হিসেবে সুখ্যাতি রয়েছে। প্রতিবছর দক্ষিণাঞ্চলের কৃষক ও ব্যবসায়ীরা এখান থেকে বীজ নিয়ে যায়। আমরা কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে আসছি।

উপজেলা কৃষি অফিসার সাইফুল আবেদীন বলেন, রানীপুকুরের করলা বীজ বিভিন্ন কোম্পানী ছাড়াও দেশের বিভিন্ন প্রান্তের কৃষকরা ক্রয় করে। করলার উচ্ছিষ্ট অংশ জৈব সার হিসেবে ব্যবহারের জন্য কৃষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।

বার্তা বাজার/জে আই