ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারের হত্যাকান্ডের ঘটনায় আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টুকে। ডিবির হেফাজতে থাকা আরেক আওয়ামী লীগ নেতা কাজী কামাল আহম্মেদ ওরফে গ্যাস বাবুর মুখোমুখি করে মিন্টুকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তাদের কাছে অন্তত এক ডজন প্রশ্নের উত্তর চাচ্ছেন পুলিশের গোয়েন্দারা।

সংশ্লিষ্টরা দেশ রূপান্তরকে জানান, এমপি আনার হত্যাকাণ্ডের পর গত ১৬ মে আওয়ামী লীগ নেতা মিন্টুর কাছে আনারের নিথর দেহের ছবি কীভাবে এলো সে বিষয়ে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। এমনকি ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেওয়া মূল খুনি শিমুলের জবানবন্দিতে তার নাম আসার বিষয়েও কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি মিন্টু।

শিমুল জবানবন্দিতে বলেছেন, আনার হত্যার বিষয়টি মিন্টু জানতেন। আনার হত্যার বিষয়টি জানার পরও কেন তিনি গোপন করলেন, ডিবির এমন প্রশ্নে নিশ্চুপ থেকেছেন মিন্টু। তিনি কোনো প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন, আবার কোনো প্রশ্নে নিশ্চুপ থেকেছেন। প্রশ্নগুলো সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতেই তৈরি করেছেন গোয়েন্দারা। এমন পরিস্থিতিতে এসব প্রশ্নের উত্তর পাওয়া না গেলে তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হবে বলে জানিয়েছেন ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদ।

তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আজীম হত্যায় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিন্টুর জড়িত থাকার বিষয়টি প্রথমে সামনে আসে শিমুল ভূঁইয়াকে জিজ্ঞাসাবাদে। শিমুল ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিতে তাঁর নাম বলেছেন। এ ছাড়া বাবুর নামও ফাঁস করেন শিমুল। এর পর গোয়েন্দারা খুঁজতে থাকেন– কেন, কীভাবে, কী কারণে এ হত্যাকাণ্ডে মিন্টুর নাম সামনে আসছে। এর উত্তর মেলাতে গিয়ে গোয়েন্দাদের তদন্তে সন্দেহভাজন কিছু বিষয় ঘুরপাক খায়। আজীম হত্যার বিষয়টি জানাজানি হওয়ার আগে কেন বাবুর ফোন থেকে ছবি দেখে তা নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন মিন্টু।

কারও কারও ভাষ্য, আজীম হত্যার তদন্তে যে প্রশ্ন সামনে আসছে, তার সদুত্তর দিতে না পারলে আজকালের মধ্যে মিন্টুকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হতে পারে। গোয়েন্দারা নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করছেন, রাজনৈতিকভাবে লাভবান হতে এ হত্যার ছকে মিন্টু ছিলেন কিনা। কারণ সর্বশেষ জাতীয় নির্বাচনে ঝিনাইদহ-৪ আসন থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন মিন্টু।