দলীয় সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়ে এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী’র প্রতি আস্থা রেখে উখিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদের নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিলেন অধ্যক্ষ শাহ আলম।

৯ মে (বৃহস্পতিবার) বিকেল চারটায় উখিয়া প্রেস ক্লাবের হলরুমে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তিনি এই ঘোষণা দেন। উখিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন হলদিয়া পালং ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ শাহ আলম।

কেন তিনি চেয়ারম্যান পদ থেকে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করলেন উখিয়া বাসীকে এর সঠিক ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য সংবাদ সম্মেলনে আয়োজন করেন। এ সময় তিনি বলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাংসদদের নিকট আত্মীয়-স্বজনদের নির্বাচনের প্রার্থী হওয়া যাবেনা এমন ঘোষণার প্রেক্ষিতে এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ের নেতৃত্বের পরামর্শক্রমে তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন।

পরবর্তীতে দলীয় সভানেত্রী সাংসদদের স্বজন বলতে স্ত্রী-ছেলে-সন্তান সম্পর্কিত বিষয়টি পরিষ্কার করায় এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী কে উপজেলা আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতা কর্মীদের পক্ষ থেকে চেয়ারম্যান পদে একক প্রার্থী ঘোষণা করায় এবং তিনি বিগত দুই তিন মাস ধরে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে নির্বাচনী কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছেন সে কারণেই তার প্রতি আস্থা রেখে তিনি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়ে তার প্রতি পূর্ণ সমর্থন দেন।

তিনি বলেন, তাকে সমর্থন দেওয়া দলের সকল নেতাকর্মী, আত্মীয়-স্বজন এলাকার মানুষদের নিয়ে তিনি জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরীর জন্য মনে প্রাণে আন্তরিকভাবে নির্বাচন করবেন বলে ঘোষণা দেন। কতিপয় কয়েক ব্যক্তি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সহ বিভিন্নভাবে প্রার্থিতা প্রত্যাহার কে কেন্দ্র করে তার বিরুদ্ধে নানা রকম অপপ্রচারক গুজব ও কুৎসা রটনা করছেন।

তিনি আরো বলেন, আমার পরিবার মুক্তিযোদ্ধা পরিবার এবং রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায়ে প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করা,বর্তমানে ও ইতিপূর্বে জনপ্রতিনিধির দায়িত্ব পালন করে আসছে আমার পরিবার। সুতরাং জনগণ বিচার বিবেচনা করবে ইতিপূর্বে কাদের রাজনৈতিক ও নির্বাচন সংক্রান্ত চরিত্রে কলঙ্কের কালিমা লেপন রয়েছে। তাদের প্রতি শুভ বুদ্ধির এবং সুন্দর মন মানসিকতা সৃষ্টি হওয়ার প্রত্যাশা রাখেন।

এ সময় উপস্থিত অত্র উপজেলার রাজনৈতিক অঙ্গনে ভিন্ন আঙ্গিকে কলকাড়ি নাড়ার নেপথ্যে’র কারিগর, সব দলের সর্ব মহলে আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিত, রত্নাপালং ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান উখিয়ার ভোটের মাঠের ম্যাজিকম্যান খ্যাত খাইরুল আলম চৌধুরী। তিনি তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, রোহিঙ্গা অধ্যুষিত প্রায় ১৪ লাখ জনগোষ্ঠীর বাংলাদেশের বিশেষ একটি উপজেলা উখিয়ার উন্নয়ন দাবী আদায় সর্বোচ্চ স্থানে প্রতিনিধিত্ব করার মত সৎ সাহস এবং স্বচ্ছ নেতৃত্ব দেওয়ার মতো যোগ্য ব্যক্তি হচ্ছেন জনপ্রিয় রাজনীতিবিদ জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী। তাই উপজেলার বৃহত্তর স্বার্থে তাঁকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত করার জন্য সকলের প্রতি আহবান জানান। তিনি আরো বলেন ইতিমধ্যে উপজেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে চেয়ারম্যান পদে জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান কামরুনেচ্ছা বেবিকে একক প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। তাই তাদের ২ জনকে বিজয় করার জন্য আওয়ামী লীগের সকল নেতা কর্মী মাঠে কাজ করবেন। ভাইস চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এখনো কাউকে একক প্রার্থী ঘোষণা করা হয়নি।

অপরদিকে উপস্থিত আরেক হলদিয়া পালং ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক (ভারপ্রাপ্ত) চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আমিনুল হক আমিন তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন তারুণ্য উদ্দীপ্ত অসম ধৈর্যের অধিকারী জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী এমন একজন নেতা যাকে সর্বস্তরের মানুষ আন্তরিকভাবে ভালোবাসেন। উপজেলার অন্য চারটি ইউনিয়ন রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদের মত মডেল ইউনিয়ন করতে হলে চেয়ারম্যান পদে তার বিকল্প নেই।

তিনি আরো বলেন বিগত পাঁচটি বছর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে আমার স্ত্রী কামরুন্নেছা বেবী দায়িত্ব পালন করেছেন। প্রত্যেকটি ইউনিয়নে শত সীমাবদ্ধতার মধ্যেও তার সাধ্যের মধ্যে সাবেক সাংসদ আব্দুর রহমান বদি ও বর্তমান সংসদ সদস্য শাহিন আক্তারের সহায়তায় ধর্মীয়, সামাজিক এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যোগাযোগ ব্যবস্থার ও সর্বক্ষেত্রে উন্নয়নে ভূমিকা রাখেন। মানুষের বিপদ-আপদে দুঃসময়ে ছুটে যান। তার প্রতিফলন আজ আপামর জনতার কাছ থেকে পাচ্ছি। আমার স্ত্রী যেখানে যাচ্ছে মানুষের অভূতপূর্ব সাড়া মিলছে। তাই জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী ও কামরুন্নেছা বেবী কে আগামীতেও গণমানুষের সেবা করার জন্য সুযোগ দেওয়ার উপজেলাবাসীর প্রতি বিনীত আহ্বান জানাচ্ছি।

এদিকে অধ্যক্ষ শাহ আলম তার প্রার্থিতা প্রত্যাহার করায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতাকর্মী সমর্থক, যুবলীগ ছাত্রলীগ থেকে শুরু করে সকল অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ তার এসিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন।

বার্তা বাজার/এইচএসএস