ভারতের বেশ কিছু সরকারি স্কুলেতীব্র গরমেও ছুটি নেই । ছোট থেকে বড় সব বয়সী শিক্ষার্থীদের নিয়মিত ক্লাস করতে হচ্ছে। নামকরা স্কুলের ক্লাসরুমেই রয়েছে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র। আর ক্লাসে চলা এসব এসির খরচ দিতে হবে স্বয়ং অভিভাবকদেরই । গরমকালে ক্লাসে এসি চালানোর জন্য অতিরিক্ত দুই হাজার টাকা করে স্কুল কর্তৃপক্ষ চার্জ নিচ্ছে বলে অভিযোগ করছেন অভিভাবকরা ।

এ নিয়ে দিল্লি হাইকোর্টে একটি মামলাও হয় সম্প্রতি। মামলায় ডিরেক্টরেট অব এডুকেশনের কাছে দিল্লির মহারাজা আগরসেন পাবলিক স্কুলের শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের প্রশ্ন, কেন প্রতি মাসে এসি চালানোর জন্য অতিরিক্ত দুই হাজার টাকা স্কুল ফি দিতে হবে। নবম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের পক্ষে মামলাটি করা হয়।

তবে অভিভাবকদের এই মামলা ধোপে টিকল না হাইকোর্টে। মামলাকারীসহ উভয়পক্ষের যুক্তি শোনার পাশাপাশি দিল্লি হাইকোর্ট ২০২৩ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট স্কুলের মাসিক ফি পর্যবেক্ষণ করে। সেখানে স্পষ্টভাবে এসির খরচ বাবদ ফি নেওয়ার বিষয়টি পাওয়া যায়। ডিরেক্টরেট অব এডুকেশনের অনুমোদন পাওয়ার পর বাড়ানো হয়েছে সেই ফি।

এদিন হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণে জানানো হয়, সংশ্লিষ্ট স্কুলের প্রতিটি ক্লাসরুমে এসি চালানো হচ্ছে বলে প্রাথমিক তদন্তে পাওয়া গেছে। আর সে কারণে স্কুল ফি’র সঙ্গে যে চার্জ যুক্ত করা হয়েছে তা যথাযথ। হাইকোর্ট আরও জানায়, স্কুলে শিক্ষার্থীদের এসি পরিষেবা দেওয়া হলে তার খরচ অভিভাবকদেরই বহন করতে হবে। কারণ এই পরিষেবার সঙ্গে ল্যাব কিংবা স্মার্ট ক্লাস পরিষেবাগুলোর কোনো অমিল নেই।

দিল্লি হাইকোর্ট আরও জানায়, অভিভাবকদের উচিত সন্তানকে ভর্তি করার সময় স্কুল থেকে পাওয়া পরিষেবা এবং সেই সংক্রান্ত ফি যাচাই করে নেওয়া। শিক্ষার্থীদের এ ধরনের পরিষেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে আর্থিক বোঝা স্কুল কর্তৃপক্ষের একা বহন করা উচিত নয়। বিষয়টি ডিরেক্টরেট অব এডুকেশনের ওপর ছেড়ে এই মামলা খারিজ করে দেয় দিল্লি হাইকোর্ট।

ডিরেক্টরেট অব এডুকেশনের পক্ষ থেকে বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। তাদের কাছে এ বিষয়ে একাধিক অভিযোগ জমা পড়েছে বলে জানা গেছে। স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে একটি শোকজ নোটিশ পাঠিয়ে জবাবদিহিও তলব করা হয়েছে।

যদিও মামলাকারীর আবেদন, শিক্ষার্থীদের ক্লাসে এসি চালানো হবে কি না, সে সিদ্ধান্ত যখন স্কুল কর্তৃপক্ষই নিয়েছে তখন আর্থিক খরচও তারাই বহন করুক। ১৯৭৩ সালের দিল্লি স্কুল এডুকেশন রুলের অবমাননা করে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে স্কুল ফি’র সঙ্গে অতিরিক্ত চার্জ নেওয়া হচ্ছে বলে আদালতে জানিয়েছে মামলাকারী