দেশ কারা চালাবে, তা জনগণ নির্ধারণ করবে বলে মন্তব্য করেছেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক।

সাইফুল হক বলেন, ‘আওয়ামী লীগের পরিবর্তে কারা দেশ চালাবে তা দেশের জনগণ নির্ধারণ করবে। একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণ তাদের সরকার ও নেতৃত্ব নির্বাচন করবে। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় এর অন্যথ্যা হবার সুযোগ নেই। কিন্তু কেউ যদি মনে করেন তারা ছাড়া আর কেউ চালাতে পারবে না, সেটা গণতন্ত্র নয়।’

রোববার (৫ মে) সকালে সেগুনাবাগিচায় দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, ‘ভোটের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠা ও অবাধ-নিরপেক্ষ নির্বাচনের আশু রাজনৈতিক দাবি এবং অগণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যাবস্থা ও সংবিধানের গণতান্ত্রিক রূপান্তরের ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্য নিয়েই রাজপথে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্য গড়ে উঠেছে। বাস্তবে একটি কর্তৃত্ববাদী দুঃশাসন রাজনৈতিক দল ও জনগণকে এক কাতারে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। এই কৃতিত্ব অনেকখানি সরকার ও সরকারি দলের। এখানে অন্য কোনো ম্যাজিক নেই।’

সাইফুল হক বলেন, ‘এই আন্দোলনে অতি বাম কারা আছে তা আমাদের জানা নেই। তবে সরকার ও সরকারি দলের রাজনৈতিক পরিমণ্ডলের বাইরে থাকা বাম গণতান্ত্রিক প্রগতিশীল ঘরানার প্রায় সব দল স্বাধীনভাবে নিজেদের মতো করে দল ও জোটগতভাবে গণতান্ত্রিক এই আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে।’

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির এই নেতা বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী জানতে চেয়েছেন, তার সরকারের অপরাধটা কী। প্রথমত, তিনি সরকার পরিবর্তনের নিয়মতান্ত্রিক গণতান্ত্রিক পথ সরকার বন্ধ করে দিয়েছেন। দ্বিতীয়ত, দেশের প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন ব্যবস্থাকে বিদায় করে দিয়েছেন। তৃতীয়ত, দেশের সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো দুর্বল ও ভঙ্গুর করে দিয়ে দেশের অবশিষ্ট বহুত্ববাদী গণতান্ত্রিক কাঠামোকে নষ্ট করে দিয়েছেন। এসব তৎপরতার মধ্য দিয়ে দেশকে গভীর এক অনিশ্চয়তা ও ভয়ংকর বিপর্যয়ের পথে ঠেলে দেওয়া হয়েছে।’

দেশকে বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করতে সুষ্ঠু নির্বাচন প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেন সাইফুল হক। বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব প্রদানকারী ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল হিসেবে টানা ১৫ বছর ক্ষমতায় থাকার পর দেশকে সম্ভাব্য বিপর্যয় থেকে রক্ষা করতে এখন প্রধানমন্ত্রীর সরকার ও তার দল আওয়ামী লীগকে একটা অবাধ, নিরপেক্ষ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের রাজনৈতিক ঝুঁকি নিয়ে তাদের জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতার প্রমাণ দেওয়া দরকার। তা না হলে প্রতিহিংসা-প্রতিশোধের রাজনীতি দেশকে অনিবার্য বিপর্যয়ের খাদে নিপতিত করবে।’

তিনি বলেন আরও বলেন, ‘৭ জানুয়ারির ডামি নির্বাচন সরকারকে ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার রাজনৈতিক ও নৈতিক বৈধতা দেয়নি। সে কারণে এই সরকার যত প্রলম্বিত হবে দেশের বহুমাত্রিক সংকট তত বাড়বে। আমরা আশা করব, কালক্ষেপণ না করে বিদ্যমান গভীর রাজনৈতিক সংকট উত্তরণে সরকার ও সরকারি দল অচিরেই কার্যকর বিশ্বাসযোগ্য রাজনৈতিক উদ্যোগ গ্রহণ করবেন।’

বার্তা বাজার/এইচএসএস