দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার আদিবাসী বৃদ্ধ বিশ্বনাথ টুডু (৭৫)। দীর্ঘদিন থেকে একাকী নিঃসঙ্গ জীবনযাপন করতেন তিনি। স্ত্রীর সন্তান থাকলেও, আলাদা একটি বাড়িতে একাই বসবাস করতেন সত্তরোর্ধ্ব বৃদ্ধ।

শনিবার (৩০ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০ টায় উপজেলার ৩নং সিংড়া ইউনিয়নের কশিগাড়ীর (আদিবাসীপাড়া) নিজ ঘর থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করেছে ঘোড়াঘাট থানা পুলিশ। পরিবার ও স্থানীয়দের ধারণা গত দু’দিন আগে তিনি গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।

নিহত বিশ্বনাথ টুডু (৭৫) কশিগাড়ী গ্রামের মৃত রায়া টুডুর ছেলে। পেশায় তিনি কৃষি শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পুলিশ জানান, বাড়িটিতে তিনি একাই থাকতেন। তার স্ত্রী-সন্তান থাকতেন অন্য গ্রামে। নিহত বিশ্বনাথ নিজের মত চলাফেরা করতেন। কারো সাথে তেমন মেলামেশা করতেন না। সর্বশেষ গত বুধবার বিকেলে তাকে গ্রামে দেখা গেছে। স্থানীয় গ্রাম সম্পর্কে রশেম নামের এক নাতির সাথে তিনি বেশিরভাগ সময় কাঁটাতেন। গত দু’দিন যাবত ওই নাতির সাথে তার দেখা না হওয়ায় শনিবার সকালে বিশ্বনাথের বাড়িতে তাকে ডাকতে যায় রমেশ। বাড়িতে গিয়ে দরজা খোলা ঘরে তাকে ঘরের তীরের সাথে রশিতে ঝুলতে দেখেন রমেশ। পরে নিহত বিশ্বনাথের মেয়েকে খবর দিলে, তার মেয়ে থানায় খবর দেয়।

নিহত বিশ্বনাথের প্রতিবেশী ডেভিড কিস্কু বলেন, বিশ্বনাথ অধিকাংশ সময় চোলাই মদ খেতেন। দিনের বেশিরভাগ সময় তিনি একাকী মাতাল অবস্থায় থাকতেন। খাবার সে একাই রান্না করে খেতেন। মনের অশান্তি থেকে হয়ত সে আত্মহত্যা করেছে।

ঘোড়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, সুরতহাল প্রতিবেদন থেকে ধারণা করা হচ্ছে তিনি আত্মহত্যা করেছেন। গত বুধবার বিকেলে থেকে তাকে ঘোরাফেরা করতে দেখেননি গ্রামবাসী। ধারণা করা হচ্ছে ওই দিন রাত থেকে আজ (শনিবার) সকাল পর্যন্ত যেকোন সময় সে আত্মহত্যা করেছে। পরিবারের কোন অভিযোগ থানায় আইনগত প্রক্রিয়া শেষে স্থানীয় জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এই ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যুের মামলা হয়েছে।