জয়পুরহাটে পাঁচবিবি উপজেলার ফিচকারঘাট পিরপাল এলাকায় সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে ছাত্রলীগ নেতা ও তার ক্যাডার বাহিনীর হামলায় ৪ সাংবাদিক আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় শনিবার রাত সাড়ে ১০ টায় ৯ জনের নামে পাঁচবিবি থানায় একটি মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী দৈনিক বাংলাদেশ সমাচারের জেলা প্রতিনিধি জুয়েল শেখ।

হামলার স্বীকার সাংবাদিকরা হলেন, মাছরাঙা টিভির জেলা সংবাদদাতা আল মামুন, দৈনিক বাংলাদেশ সমাচারের জেলা প্রতিনিধি জুয়েল শেখ, বাংলার দুতের জেলা প্রতিনিধি আব্দুর রাজ্জাক ও দৈনিক সংবাদ সারাবেলার পাচঁবিবি প্রতিনিধি বাবুল হোসেন।

ভুক্তভোগী সাংবাদিকরা জানান, জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার ফিচকাঘাট পিরপাল এলাকায় আদিবাসী এক নারীর একটি জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল একই গ্রামের এক ব্যক্তির সঙ্গে। সেখানে আদালত ১৪৪ ধারা জারিও করেন। এরপরেও সেখানে পাঁচবিবি মহিপুর হাজী মহসিন সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল ১৪৪ ধারা অমাণ্য করে এসকেভেটর ভেকু দিয়ে মাটি উত্তোলন করছিলেন। আদিবাসীদের কাছ থেকে এমন অভিযোগ পেয়ে শনিবার দুপুরে ঘটনাস্থলে যান ওই সাংবাদিকরা।

সেসময় ঘটনাস্থলে ছাত্রলীগ নেতা মাহমুদুল ও তার ক্যাডার বাহিনী অতর্কিতভাবে তাদের উপর হামলা করে এবং লাঠিসোঠা ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়িভাবে মারপিট করে। তখন সাংবাদিকদের ক্যামেরা, মোবাইল, পরিচয়পত্র ছিনিয়ে নেন তারা।

পরে স্থানীয় লোকজন ও সাংবাদিকরা তাদের উদ্ধার করে পাঁচবিবি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি করান। পরে তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য জয়পুরহাট জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে তারা সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

ভুক্তভোগি সাংবাদিক আল মামুন বলেন, আমরা আদিবাসীর কাছ থেকে অভিযোগ পাই যে, তার জমি ১৪৪ ধারা অমান্য করে ছাত্রলীগ নেতা মাহমুদুল মাটি উত্তোলন করছিলেন। পরে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ছবি তুলে সেই জমির কাগজপত্র দেখছিলাম। এসময় কিছু বোঝার আগেই মাহমুদুল তার ক্যাডার বাহিনীসহ আমাদের উপর হামলা করে এলোপাতাড়ি মারপিট করে মোবাইল ফোন, পরিচয় পত্র ছিনিয়ে নেয়। আমরা এর বিচার চাই।

পাঁচবিবি উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি রুহুল আমিন বলেন, সাংবাদিক সমাজের দর্পন। অন্যায়, অনিয়ম তুলে ধরায় তাদের কাজ। কিন্তু এ কারণে যদি সাংবাদিকদের উপর হামলা হয় তাহলে সাংবাদিকরা কোথায় যাবে। আমি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

জয়পুরহাট সাংবাদিক ঐক্য জোটোর সাধারণ সম্পাদক আর টিভির জেলা প্রতিনিধি রাশেদুজ্জামান রাশেদ বলেন, সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে সাংবাদিকদের উপর হামলা কোনভাবেই মেনে নেওয়া যায়না। অবিলম্বে হামলাকারিদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে হবে। অন্যথায় কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

পাঁচবিবি উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি রুহুল আমিন বলেন, সংগ্রহ করতে গিয়ে ছাত্রলীগ নেতা মাহমুদুল সহ তার বাহিনী ৪ সাংবাদিকদের মারধর করেছে। সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নেই। প্রশাসন দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।

এ বিষয়ে পাচবিবি থানার অফিসার ইনচার্জ ফয়সান বিন আহসান বলেন, এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের জোর তৎপরতা চেষ্টা চলছে।