নীলফামারীর সৈয়দপুরে রিপোর্টার্স ইউনিটির সাংগঠনিক সম্পাদক এম আর আলী টুটুলের উপর পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শহিদুজ্জামান শুভ শেখের নেতৃত্বে সংঘবদ্ধ অতর্কিত প্রাণঘাতী হামলাকারীদের বিরুদ্ধে
তিন দিনের মধ্যে কার্যকর উদ্যোগ না নিলে বৃহত্তর আন্দোলন করা হবে বলে হুশিয়ারী উচ্চারণ করা হয়। শনিবার (৯ মার্চে) বেলা ১২টায় সৈয়দপুর প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচীতে এসব কথা বলেন সাংবাদিক নেতারা।

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, নির্যাতিত সাংবাদিক দৈনিক নওরোজের মীর রমজান আলী টুটুল, এশিয়ান টিভির জেলা প্রতিনিধি ময়নুল হক, দৈনিক গণকণ্ঠের মোতালেব হোসেন হক, দৈনিক আনন্দ বাজারের শাহজাহান আলী মনন, দৈনিক নয়াদিগন্তের জাকির হোসেন, দৈনিক আমার সংবাদের ওয়ালিউর রহমান রতন, দৈনিক জনকণ্ঠের এম আর মহসিন, দৈনিক ভোরের পাতার জয়নাল আবেদীন হিরো, দৈনিক প্রথম খবরের ওমর ফারুক রাজা, দৈনিক যুগের আলোর রাজু আহমেদ, সাপ্তাহিক চিকলীর নির্বাহী সম্পাদক মানিকুল ইসলাম মানিক।

বক্তারা বলেন, সাংবাদিক হলো জাতির বিবেক, সমাজের দর্পণ। তারা দেশ ও মানুষের জন্য সদা নিয়োজিত এবং সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠায় নিবেদিত। সকল অনিয়ম, দূর্নীতি ও অন্যায় অপকর্মের বিরুদ্ধে সদা সোচ্চার। সাংবাদিকেরাই সময়ের প্রকৃত চিত্র তুলে ধরে জাতিকে দিকনির্দেশনা দেয়ার সাথে সাথে মানবিক উন্নয়নে কাজ করে। সেই কলম সৈনিকদের উপর যারা জুলুম নির্যাতন করে তারা মনুষ্যত্বের শত্রু।

এই অমানুষদের হাতে দেশে অসংখ্য সাংবাদিক প্রায়ই নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। যা একটা সভ্য জাতির জন্য চরম লজ্জার ও ঘৃণার বিষয়। এমন জঘন্য ঘটনা সম্প্রতি সৈয়দপুরেও ঘটেছে। পেশাগত দায়িত্ব পালনের প্রতিবন্ধকতার শিকার হওয়াসহ হেনস্তা, হামলা ও মামলার শিকার হয়েছেন কয়েকজন সংবাদ কর্মী। সন্ত্রাসী, দূর্নীতিবাজ ও অপরাজনৈতিক ব্যক্তির দ্বারা জখমও হয়েছেন।

সর্বশেষ সৈয়দপুর রিপোর্টার্স ইউনিটির অফিসে সংঘবদ্ধ হামলা, লুটপাট ও আঘাত করে রক্তাক্ত করার ঘটনা ঘটেছে। পৌর ছাত্রলীগ নেতা শহিদুজ্জামান শুভ প্রকাশ্যে দুপুর বেলায় প্রায় ৫০-৬০ জন সন্ত্রাসী লাঠি, রড, ছোড়া নিয়ে অতর্কিত হামলা চালিয়ে অফিসের সব চেয়ার, টেবিল, আসবাবপত্র, জানালার থাই গ্লাস, সীমানা দেয়াল ভেঙে তছনছ করে। পরে কম্পিউটার, পানির ট্যাংক, সাপ্লাই পাইপ ও পাম্প লুট করে নিয়ে যায়।

এসময় বাঁধা দিলে সংগঠনটির সাংগঠনিক সম্পাদক এম আর আলী টুটুলকে রক্তাক্ত জখম করে। এমনকি টুটুলের ভাই মীর ইরফান আলী শিমুলকে লাঠি দিয়ে আঘাত করে মাথা ফাটিয়ে দেয়। ঘটনার সময় উপস্থিত সাংবাদিক জাহিদ হাসান ও খন্দকার সোহেল তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে চিকিৎসা করান।

এরপর সংগঠনটির সভাপতি সাইদুল ইসলাম প্রামাণিক (পিকে সাইদুল) থানায় এজাহার করে। এনিয়ে সৈয়দপুর প্রেসক্লাবে প্রতিবাদ সভা হয় এবং সেখানে তারা নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। কিন্তু তলে তলে পিকে সাইদুল সমঝোতা করে মামলা প্রত্যাহার করে নেয়। এতে বাধ্য হয়ে টুটুল বিচারের দাবীতে পৃথক মামলা।

কিন্তু আজও সেই এজাহার রজু করা হয়নি এবং দোষীদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থাও নেয়নি। একারণে সাংবাদিকরা মানববন্ধন করে এব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান। তিন দিনের মধ্যে কার্যকর উদ্যোগ না নিলে বৃহত্তর আন্দোলন করা হবে বলে হুশিয়ারী উচ্চারণ করেন। সেই সাথে টুটুলের পরিবারের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবী জানান।