প্রবাসী বন্ধু পরিচয়ে ছয় মাসে শতাধিক সিম ব্যবহার করে আড়াই হাজার মানুষের সাথে প্রতারণা করেছে সাইফুল ইসলাম দূর্জয় নামে এক যুবক। মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারী) ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের
প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ গণমাধ্যমকে এসব তথ্য জানান।
জিনের বাদশা হিসেবে ব্যাপক পরিচিতি সাইফুল ইসলাম দূর্জয় নীলফামারীর ডোমার উপজেলার গোমনাতী এলাকার বাসিন্দা। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ও গোয়েন্দা কার্যক্রমের ভিত্তিতে এই অভিনব কায়দায় প্রতারণায় জড়িত দুর্জয়কে রাজধানীর সবুজবাগ থেকে গ্রেপ্তার করে ডিএমপির গোয়েন্দা টিম।
ডিবি প্রধান হারুন অর রশীদ গণমাধ্যমকে জানান, সাইফুল ইসলাম দুর্জয় চুরি করা মোবাইল ফোন ব্যবহার করে অপরিচিত নাম্বার থেকে ফোন দিয়ে বলে বন্ধু চিনতে পেরেছিস ? উত্তরে না, চিনতে পারছিনা। তোর কোন বন্ধু বিদেশে থাকে? ফোনের ও প্রান্ত থেকে বিদেশে থাকা বন্ধুর নাম বলতেই সে নামেই বন্ধু সেজে কথা বলা শুরু করে দূর্জয়। পরে ৫ জানুয়ারী ভুক্তভোগী আমির হোসাইন মোল্লাসহ তিন বন্ধুকে ফোন করে নিজের মায়ের মৃত্যুর সংবাদ জানিয়ে জরুরি ভিত্তিতে বিকাশের মাধ্যমে টাকা পাঠানোর অনুরোধ করে মোঃ সাইফুল ইসলাম আতিকুল্লাহ শাহের পরিচয় ব্যবহারকারী সাইফুল ইসলাম দুর্জয়। বন্ধুর মায়ের মৃত্যু সংবাদ শুনতে পেয়ে তিন বন্ধু মিলে ১লাখ ৬৯হাজার টাকা বিকাশ ও নগদ মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে পাঠিয়ে দেয়। এর পরে ভুক্তভোগীরা নাম্বারটিতে যোগাযোগ করলে বন্ধ পাওয়া যায়। খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারে তার পরিচয় ভুয়া। এরপর সে অভিযোগের সূত্র ধরে প্রতারক দুর্জয়কে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ।
গোয়েন্দা পুলিশ আরো জানায়, গ্রেপ্তার দূর্জয়ের বিরুদ্ধে অস্ত্র, ছিনতাই ও প্রতারণা সহ ৯টি মামলার চলমান। বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকা ডোমার উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকায় তার বাড়ি হওয়ায় সেখানে থেকে সে প্রতারণার কাজটি সম্পন্ন করে। পার্শ্ববর্তী লালমনিরহাট জেলার বিভিন্ন বিকাশের দোকান থেকে ক্যাশ আউট এর মাধ্যমে টাকা তুলে নেয়। সে প্রায় ১০বছর যাবত এই প্রতারণার সাথে জড়িত। এ কাজে তার কয়েকজন সহযোগীও রয়েছে। প্রতারণা শেষে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতি টের পেলে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতের অংশে চলে যায় তারা। এই প্রতারক চক্রের অন্যান্য সদস্যদের গ্রেপ্তারের কাজ করছে গোয়েন্দা পুলিশ।
এ প্রসঙ্গে নীলফামারীর পুলিশ সুপার মোঃ গোলাম সবুর, পিপিএম-সেবা জানান, প্রতারণা দায়ে এর আগেও জিনের বাদশা হিসেবে পরিচিত দূর্জয় গ্রেপ্তার হয়েছিল। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।