অবৈধভাবে সমুদ্রপথে ইতালি যাবার সময় মাদারীপুর রাজৈরের দুই যুবকের মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনায় নিখোঁজ রয়েছে আরো একজন। শুক্রবার দুজনের মৃত্যুর খবর আসলে এলাকাজুড়ে শোকের ছায়া নেমে আসে। আদরের সন্তানদের হারিয়ে দিশেহারা পরিবার। এই ঘটনায় দালালের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন স্বজন ও এলাকাবাসী। পুলিশ বলছে, লিখিত অভিযোগ পেলে নেয়া হবে আইনগত ব্যবস্থা।

আদরের সন্তান আর কোনদিন ঘরে ফিরবে না, এই শোক কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না স্বজনরা। আজাহারীতে ভাড়ী চারপাশের পরিবেশ।

শুক্রবার সরেজমিনে নিহতের বাড়ি গেলে স্বজনরা কান্নাজড়িত কন্ঠে জানায়, গত ১৪ জানুয়ারি মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার খালিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম স্বরমঙ্গল গ্রামের ইউসুফ আলী শেখের ছেলে মামুন শেখ (২০) ও সেনদিয়া গ্রামের সুনীল বৈরাগীর ছেলে সজল বৈরাগীসহ (২৫) বেশ কয়েকজন যুবক ইতালির উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়। পরে গত বুধবার লিবিয়া থেকে একটি ইঞ্জিনচালিত নৌকায় রওয়ানা দেয় তারা। ৩২ জন ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন নৌকায় ৫২জন অভিবাসন প্রত্যাসীকে নিয়ে ইতালী যাওয়ার পথে তিউনিসিয়ার ভুমধ্যসাগরে নৌকার ইঞ্জিন ফেটে যায়। এতে মামুন ও সজলসহ মারা যায় ১২ জন। পরে খবর পেয়ে বেশ কয়েকজনকে জীবিত উদ্ধার করে স্থানীয় কোস্টগার্ড। এছাড়া এখনো নিখোঁজ পার্শ্ববর্তী গোহালা ইউনিয়নের পান্নু শেখের ছেলে আপন শেখ।

নিহত মামুন শেখের বড় ভাই সজিব শেখ ও নিহত সজল বৈরাগীর পিতা সুনীল বৈরাগী জানায়, মানবপাচারকারী চক্রের সক্রিয় সদস্য গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার রাঘদী ইউনিয়নের সুন্দরদী গ্রামের বাদশা কাজীর ছেলে মোশারফ কাজী প্রলোভন দেখিয়ে প্রত্যেকের কাছ থেকে ১৩-১৫ লাখ টাকা করে নেয়। পরে অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই করে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় ইতালি পাঠালে ঘটে এই দুর্ঘটনা। সরকারীভাবে তাদের মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছেন স্বজনরা। এই ঘটনার প্রধান অভিযুক্ত দালাল মোশারফ কাজী দীর্ঘদিন ধরে লিবিয়া বসবাস করছে। তার ছেলে যুবরাজ কাজী গ্রাম থেকে ইতালি পাঠানোর জন্য যুবকদের সংগ্রহ করে।

রাজৈর থানার ওসি মো. আসাদুজ্জামান হাওলাদার আসাদ বলেন, এ ব্যাপারে অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।