মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার কদমবাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বিধান বিশ্বাসের নেতৃত্বে যাত্রার নামে চলছে নগ্ন নৃত্য। স্থানীয়রা জানায়, যাত্রাপালা দিয়ে শুরু হলেও রাত ১২ টার পরে শুরু হয় নগ্ন ও অশ্লীল নৃত্য। কয়েকদিন এস.এস.সি পরীক্ষার কারনে যাত্রাপালা বন্ধ করতে বলা হলেও বন্ধ করেনি। চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে এ যাত্রা চলে বলে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না। উপজেলা প্রশাসন জানায় তাদের পক্ষ থেকে কোন অনুমতি দেয়া হয়নি, তবে যদি আর একদিনও চলে তাহলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

কয়েকটি ভিডিও ক্লিপে দেখা যায়, গানের তালে তালে মঞ্চে নাচানাচি করছে তরুণীরা। তাদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নাচ্ছেন দর্শক সারিতে থাকা অনেকেই। তবে তরুণীদের সেই নাচের অঙ্গভঙ্গি ছিল দৃষ্টিকটু। রাত ১২ টার পর থেকে একটানা ভোররাত পর্যন্ত চলে অশ্লীল ও নগ্ন নৃত্য। আর এ নৃত্য দেখতে উঠতি বয়সী যুবকদের ছিল মাতামাতি। বেশ কয়েকদিন যাবত তথাকথিত যাত্রাপালার নামে চলছে এই অশ্লীলতা। নৃত্যে অংশ নেয় একদল নারী। নানা অঙ্গভঙ্গির অশ্লীল ও নগ্ন নৃত্য দেখতে শিশু কিশোর থেকে উঠতি বয়সী যুবকরাও দল বেঁধে ছুটে যান যাত্রা মঞ্চের পাশে। নৃত্যের তালে তালে তারাও অশ্লীলতায় মেতে উঠে। নগ্ন নৃত্যে অংশ নেওয়া নারীদেরকে লক্ষ্য করে ছুটতে থাকেন মঞ্চের দিকে যুবকেরা।

এ নগ্ন নৃত্যের আসর বসিয়ে যুব সমাজকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিয়ে ২০০, ৪০০, ৬০০ ও ৮০০ টাকা মূল্যের টিকেটের মাধ্যমে হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা।

যাত্রার নামে এমন অশ্লীলতা দেখে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে একজন বলেন, নগ্ন পোশাকে এমন নৃত্য দেখে আমি নিজেই হতবাক। ছেলে মেয়েরা দেখলে তারাতো অসামাজিক কাজে লিপ্ত হবে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের নামে এসব অনৈতিক কর্মকান্ড বন্ধ হওয়া দরকার বলে মনে করেন তিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একজন বলেন, জনপ্রতিনিধিই (চেয়ারম্যান) যদি অন্যায় করে তাহলে তাকে ফেরাবে কে! কয়েকদিন পরে এস.এস.সি পরীক্ষা। যারা এসব চালায় তাদের বিবেক বলতে কিছু নেই।

অভিযোগ অস্বীকার করে কদমবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিধান বিশ্বাস বলেন, যাত্রাপালা চলে তবে নগ্ন নৃত্য চলে না। গতকাল বন্ধ ছিল। নগ্ন নৃত্যের ভিডিও আছে শুনে জবাবে বলেন, তখন তিনি সেখানে ছিলেন না। তার উপস্থিতিতে নগ্ন নৃত্য হয় না। এখন যাত্রাও চলে না।

তবে যাত্রাপালার নামে অশ্লীল নৃত্যের কথা অস্বীকার করে রাজৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান হাওলাদার আসাদ বলেন, যাত্রাপালা বন্ধ করতে বলা হয়েছিল। তার জানা মতে নৃত্য বন্ধ আছে। যাত্রাপালার নামে নৃত্য চললে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।

রাজৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উপমা ফারিসা বলেন, যাত্রাপালার বিষয়ে কোন অনুমতি দেয়া হয়নি। তার উপরে যদি নগ্ন নৃত্য চলে তাহলে তার বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে। চেয়ারম্যান জানিয়েছে এখন আর চলে না।

বার্তা বাজার/জে আই