কমিটি ও নিয়োগ সংক্রান্ত দ্বন্দ্বের জেরে অফিস কক্ষে ঢুকে অধ্যক্ষকে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালীতে ৮ জনের নাম উল্লেখ করে আরও অজ্ঞাতনামা ৭-৮ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করা হয়েছে। রোববার রাতে রাঙ্গাবালী থানায় মামলাটি করা হয়।

লাঞ্ছনার শিকার উপজেলার চরমোন্তাজ আব্দুল ছাত্তার স্কুল এন্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক এবং দায়িত্বে থাকা অধ্যক্ষ মো. রুহুল আমিন বাদী হয়ে এ মামলা করেন। মামলার নামধারী বিবাদীরা হলেনÑনজরুল ইসলাম নজু (৪৫), ইউসুফ (৩০), হারুন (৪০), জহিরুল গাজী (৩২), নুর আমিন (৩৫), পলাশ সিকদার (২৫), জুয়েল মাতুব্বর (৪০) এবং শাহিন (৪০)।

তাদের প্রত্যেকেই চরমোন্তাজ ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা এবং স্থানীয় যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। তাদের মধ্যে একজনকে সোমবার দুপুরে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

মামলার এজাহারে অধ্যক্ষ রুহুল আমিন উল্লেখ করেন, হঠাৎ করে তার অফিস কক্ষে অনাধিকার প্রবেশ করে বিবাদীরা তাকে অকাথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। এর কারণ জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানের নতুন ম্যানেজিং কমিটি গঠন করা এবং কর্মচারী নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে তাদেরকে (বিবাদীদের) জবাবদিহিতা করতে হবে বলে জানান।

বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ করলে চেয়ার থেকে লাথি দিয়ে ফেলে বিবাদীরা তাকে চর-থাপ্পড় এবং কিল-ঘুসি দিয়ে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে। এইসময় একাদশ শ্রেণীর অর্ধবার্ষিকী পরীক্ষার প্রশ্নপত্রও ছিঁড়ে ফেলে তারা। অফিসের মালামাল ভাংচুর করে।

চরমোন্তাজ পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ নাজমুল হোসেন বলেন, ‘এ ঘটনায় সোমবার দুপুরে অভিযান চালিয়ে মামলার তিন নম্বর আসামি হারুনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। চরমোন্তাজ ইউনিয়নের চরআন্ডা খেয়াঘাট থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।’ এ ব্যাপারে রাঙ্গাবালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হেলাল উদ্দিন বলেন,‘এ বিষয়ে একটি মামলা হয়েছে। ইতোমধ্যে একজন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যান্য আসামিদেরও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।’

উল্লেখ্য, এরআগে গত রোববার বেলা সাড়ে ১০ টায় চরমোন্তাজ আব্দুল ছাত্তার স্কুল এন্ড কলেজের অফিস কক্ষে ঢুকে অধ্যক্ষ রুহুল আমিনকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার ঘটনা ঘটে। প্রতিষ্ঠানটি কলেজ হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাওয়ার আগে ২০২২ সালে আবদুল ছাত্তার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কমিটি গঠন ও তিনজন কর্মচারী নিয়োগে অনিয়ম-দুর্র্নীতির অভিযোগে মামলা হয়। এ ঘটনা নিয়েই প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষক এবং বর্তমানে অধ্যক্ষের দায়িত্বে থাকা রুহুল আমিনের সঙ্গে একটি পক্ষের দ্বন্দ্ব চলছিল। সেই দ্বন্দ্বের জের ধরেই মামলা চলাকালীন সম্প্রতি তিন কর্মচারী নিয়োগ চূড়ান্ত হওয়ার গুঞ্জনে অধ্যক্ষকে লাঞ্ছিত করার এ ঘটনা ঘটেছে।

এদিকে, ওইদিন দুপুরে এ ঘটনার প্রতিবাদে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা একটি বিক্ষোভ মিছিল করেছে। অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার দাবিতে প্রতিষ্ঠানের সামনে থেকে মিছিলটি শুরু করে চরমোন্তাজ পুলিশ তদন্তের সামনে গিয়ে শেষ হয়।

বার্তা বাজার/জে আই